আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিল গেটসের অভিনব প্রযুক্তি!

DO I NEED TO REMIND THAT I RULE

ঋতুবৈচিত্র্য বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই এখন। ভরা শ্রাবণে চৈত্রের কাঠফাটা রোদ, মাঘ মাসে বাঘ পালানো সেই শীতের দেখা এখন আর মেলে না। বসন্তের ফুল ফোটে গ্রীষ্মে। পৃথিবী উষ্ণ হয়ে উঠছে। আবহাওয়া করছে বৈরী আচরণ।

ক্ষণে ক্ষণে পাল্টাচ্ছে প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য; কখনো হয়ে উঠছে অনিন্দ্য সুন্দর, কখনো ভয়াল থাবা হানছে মানবকুলের ওপর। লন্ডভন্ড করে দিয়ে যাচ্ছে জনপদের পর জনপদ। ফিবছর সারা বিশ্বে কোটি কোটি টাকার সম্পদহানি ঘটছে ঘুর্ণিঝড়, সাইক্লোন, হারিকেনের কারণে। এই বছর চারেক আগে হারিকেন ক্যাটরিনা মার্কিন মুলুককে কেমন লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেল! সেই দুঃসহ স্মৃতি মার্কিনরা এখনো ভোলেনি। এমনই সব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় অভিনব এক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন শীর্ষ সফটওয়্যার নির্মাতা মাইক্রোসফট করপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের এক নম্বর ধনী ব্যক্তি বিল গেটস ও কয়েকজন বিজ্ঞানী।

কিছুদিন আগেও খরা দুর করতে মেঘে রাসায়নিক বোমা ফাটিয়ে বৃষ্টি নামিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এমন ধারারই একটি প্রযুক্তির কথা বলছেন বিল গেটস ও কয়েকজন বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, এই প্রযুক্তি ব্যবহারে হারিকেনের মতো সামুদ্রিক ঘুর্ণিঝড় ঠেকানো সম্ভব। চিন্তাটা একেবারেই সাদামাটা। হারিকেনে প্রচুর গরম পানি থাকে।

সেই পানিটাকে ঠান্ডা করতে পারলেই হলো। ঘুর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়বে। বিল গেটস ও তাঁর সঙ্গী বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তিটি অনেকটা এ রকম- ঘুর্ণিঝড় যে পথে ধেয়ে আসবে, অসংখ্য নৌকা নিয়ে যাওয়া হবে সে পথে। একেকটি নৌকায় থাকবে ৫০০ ফুট দীর্ঘ দুটি করে নল। একটি নলে করে সাগরের উপরিভাগের গরম পানি নিচের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

অন্যটি দিয়ে সাগরের নিচ থেকে ঠান্ডা পানি টেনে ওপরে তোলা হবে। হারিকেন নিয়ে ৫০ বছর ধরে গবেষণা করছেন উইলিয়াম গ্রে। বিল গেটসের এই প্রযুক্তি আদৌ কাজ করবে কি না, এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেছেন বিশ্বখ্যাত এই হারিকেন বিশেষজ্ঞ। তাঁর ভাষ্য, সমস্যা হচ্ছে, ঘুর্ণিঝড় এত দ্রুত বেগে ধেয়ে আসে যে পর্যাপ্ত সময় আপনি পাবেন না। দুই বা তিন দিন আগে সতর্ক সংকেত পাবেন আপনি।

এ সময়ের মধ্যে সাগরের তলদেশ থেকে ঠান্ডা পানি টেনে তোলা কঠিন একটি কাজ। তবে কাজটি যে একেবারে অসাধ্য, তা বলেননি গ্রে। তিনি বলেছেন, ঘুর্ণিঝড়ের মৌসুমে নৌকাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে বসিয়ে রাখতে পারলে হয়তো একটি সমাধান পাওয়া যাবে। তবে কথা হচ্ছে, যে স্থানে নৌকাগুলো আপনি রাখলেন, সে দিক দিয়ে ঝড় হয়তো এলই না। অথবা ওই মৌসুমে ঘুর্ণিঝড়ই হলো না।

তাহলে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাপয়সা সবই জলে যাবে। ঘুর্ণিঝড় ঠেকাতে অভিনব এই উদ্ভাবন নিয়ে গত জুলাইয়ে ব্লগাররা ইন্টারনেটে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এভাবে ঘুর্ণিঝড়কে রোখা তো যাবেই না, উল্টো এটি অন্য পথে ধাবিত হবে। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক ক্যারি ইমানুয়েল বলেছেন, ঠান্ডা পানি দিয়ে হারিকেনের গতি শ্লথ করা যেতে পারে। কিন্তু ঘুর্ণিঝড়ের সময় তেমন ঠান্ডা পানি সাগর থেকে পাওয়া দুরূহ ব্যাপার।

উদ্ভাবনটি ব্যয়বহুল, এতে কোনো সন্দেহ নেই। টাকার অঙ্কে ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় এমন প্রযুক্তি ব্যবহারে খরচ বেশি হতে পারে। যদি তা-ই হয়, তবে সেই প্রযুক্তি লোকে গ্রহণ করবে কেন? হারিকেন ঠেকানোর এই প্রযুক্তির উদ্ভাবক বিল গেটস ও বিজ্ঞানী কেন ক্যালডেইরা। তাঁদের কাছে এসব সমালোচনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.