একদিন-প্রতিদিন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাইফুর রহমান বহুল আলোচিত। বর্ষিয়ান এ নেতা কথা বলতেন অনেক খোলামেলা। অনেক সময় অনেক অপ্রিয় সত্যও উচ্চারণ করতেন। বিএনপিতে তার অবস্থান ছিলো চেয়ারপার্সনের পরেই, এ কারণে তার সাহসও ছিল, সারা দেশে জনপ্রিয়তা ছিল ঈর্ষণীয়।
যে সাইফুর রহমান সামরিক জান্তাদের রাজনীতিকে সমর্থন দিয়ে রাজনীতি শুরু করে এই ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তার চুড়ায় উঠতে পেরেছিলেন, সেই সাইফুর রহমানের মুখোশ খোলে দেন ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সামরিক জান্তারা।
সারা দেশের মানুষের কাছে প্রায় অবিশ্বাস্য ব্যক্তিগত দুর্নীতির কারণে তিনি তার সারা জীবনের দল বিএনপির সাথে বেইমানী করে হাত মেলান সামরিক জান্তাদের কাছে। তার পরেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি, মানুষ জেনে যায়- যে সফল অর্থমন্ত্রী এ দেশে রাজস্ব আদায়ের সংস্কৃতি চালু করেন সেই তিনিই যথাযথভাবে রাজস্ব পরিশোধ করেননি। এ জন্য তাকে অর্থ দণ্ড দিতে হয়।
মান সম্মান হারালেও তিনি প্রথম সুযোগেই আবার তার প্রিয় দলে ফিরে এসেছিলেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপির পরিচয়েই শেষ বিদায় নিলেন।
আমাকে ক্ষমা করবেন, এই সব অপ্রিয় সত্য উচ্চারণের জন্য। তাকে ছোট করার জন্য নয়, ইতিহাসে তার অবস্থান যথার্থভাবে চিহ্নিত করার জন্যই বলছি। কোনো অস্বাভাবিক মৃতু্্যই কাম্য হতে পারে না। কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য এই মৃতু্যই সাইফুর রহমানকে অমর করে দিল। তার চির শত্রুও তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে উঠবে।
তার খারাপ দিকগুলো ভুলে গিয়ে তার সাফল্যের দিকগুলো আলোচিত হবে।
সাইফুর রহমানকে সারা জাতি ভুলে গেলেও সিলেটবাসী ভুলবে না। তিনি প্রকৃত অর্থে সিলেটী ছিলেন। আমাদের সিলেটের নেতারা এলাকার মানুষের ভোট নিয়ে 'জাতীয় নেতা' হয়ে ওঠেন। তৃণমূলের মানুষের আকাঙ্খার কোনো মূল্য দেন না।
সাইফুর রহমানও প্রথম রাজনীতিতে এসে এই জিনিসটি ভুলে যাওয়ার কারণে প্রথম নির্বাচনে জামানত হারিয়েছিলেন। তার পর সে শিক্ষা নিয়ে তিনি সিলেটের উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখে গেছেন, দল মত নির্বিশেষে সব মানুষ তাকে স্মরণ রাখবে।
আবার কুলাঙ্গার পুত্রের কারণে নির্বাচনের মাধ্যমেই তাকে আবার শেষ জীবনে ভোটে প্রত্যাখ্যান করেছে। সাইফুর রহমানবিহীন বিএনপির সিলেটের রাজনীতি সন্ত্রাসী নেতাদের হাতে জিম্মি হয়ে উঠবে এটা অবলিলায় বলা যায়। ওরা যে কুকীর্তির জন্ম দেবে তাতেও মানুষ বার বার সাইফুর রহমানকে স্মরণ করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।