আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যখনই মনে পড়ে যায়.........মাকে।

জীবন কেটে যায়

সকালে ক্লাস না থাকলে আমার সকাল হতো 11.00PM । কিংবা মাঝে মাঝে তারও পরে। তারপর ঘুমের ঘোরে ধীরে ধীরে ব্রাশ করার পর রাজ্যের যত আলসেমী নিয়ে নাস্তার টেবিলে বসা। আর যতসব বাহানা, লুচি ভাজি হয়নি ভাল, পরটাতে পুড়া পুড়া গন্ধ, হালুয়া করনি কেন ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্ত্র একি হলো‍! এখন আমি অনেক ব্যাস্ত।

ঘুম থেকে উঠি ঠিক সকাল ৮.০০ কিংবা তারও আগে। ক্লাশে যায়, ক্লাশ থেকে কাজে যায়, কাজ থেকে আবার সন্ধ্যায় কোচিংয়ে যায়। বাসায় ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত ১১.০০-১১.৩০ হয়। ক্লান্তির নোনা ঘাম যথন কপাল বেয়ে ঠোঁটের কোন স্পর্শ করে তখন অজান্তেই মোবাইলটা হাতে নিয়ে অভিমানে বলে উঠি- এতক্ষন হলো আম্মু আমাকে কল দেয়নি? তারপর জমে খাকা জলের সাথে একটা দীর্ঘশ্বাস যেন রুদ্ধ কন্ঠ ছিঁড়ে বেড়িয়ে আসতে চায়। আগের মত রুমে ঢোকতে ঢোকতে সু'স একপাশে, সার্ট একপাশে আর ব্যাগ আরেকপাশে ছুঁড়ে ফেলতে ফেলতে ঢোকি না।

এখন আমি অনেক শৃঙ্খল। গোসল করার জন্য বাথরুমে গরম পানিতে ডেটল মিশিয়ে ডাকা ডাকি করতে হয়না, নাস্তা কিংবা ডিনারের জন্য চিল্লাচিল্লি করতে হয়না, বিছানা অগোছালো হয়না, ওয়াড্রপে কাপড়গুলোর ভাঁজও এখন নষ্ট হয়না। এখন আমার পকেটে অনেক টাকা থাকে, বাইরে যাবার জন্য ১০০ টাকার বায়না নিয়ে ঝগড়া করতে হয় না। দুধ থাবার মত বিরক্তিকর ব্যাপারটা বুঝি আর কখনোই আমাকে সহ্য করতে হবে না। "রাত জেগে চেহারার একি অবস্থা করেছিস, সময়মতো এ্যাসাইনমেন্ট করতে পারিস না? চোখের নিচে তো কালি জমে গেছে" কথাগুলো শুনে শুনে আর বিরক্ত হতে হবে না।

কেউ আমার মাথায় থাপ্পড় দিয়ে চোখ রাঙ্গিয়ে বলবে না- "পার্ট টাইম চাকুরী করবেন না? আর কোন ফাইজলামী বুদ্ধি আছে আপনার? মাথা ফাটিয়ে ফেলব তোর" । গভীর রাতের নির্ঘুম মুহুর্তে তারাদের আলোকিত হাসির পানে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার সময় পেছন থেকে একটা মমতাময়ী হাত স্পর্শ করে আর কোনদিন বলবে না -"আয়, মাথায় বিলি কেটে দিই, ঘুম চলে আসবে"। ধীর পায়ে হেটে বারান্দা থেকে আমার রুমের পরের রুমটাতে যাই, নিস্থব্ধ রাতের আঁধারে হাল্কা আলোয় আলনায় শুধু ঝুলন্ত আঁচলটাই মৃদু বাতাসে মাঝে মাঝে নড়ে উঠে অস্তিত্বের জানান দিয়ে যায়......


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।