থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের বন্দিশালায় ২৯ জন বাংলাদেশী চার মাস ধরে আটক রয়েছেন। দেশে ফেরার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে কোনও ধরনের সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তারা।
তবে তাদের আটক থাকার বিষয়ে ব্যাংককে বাংলাদেশ মিশন কোনও তথ্য জানে না বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর ব্যাংকক প্রতিনিধি জানান, ভালো চাকরির আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরার ট্রলারে চড়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় সাগর থেকে এ ২৯ বাংলাদেশীকে আটক করে মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের উপকূলরক্ষীরা।
ব্যাংককে অবৈধ অভিবাসীদের বন্দিশালায় (ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টার) থাকাদের একজন ইকবাল হোসেন (২৫)।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, আটকে পড়া এসব দরিদ্র বাংলাদেশীর বেশির ভাগই কক্সবাজার ও পটিয়া এলাকার দিনমজুর।
ইকবাল আরও জানান, মিয়ানমারের উপকূল রক্ষীরা তাদের আটকিয়ে নির্যাতন করে।
ইকবালের কাছে কক্সবাজার থেকে ইস্যু হওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (নম্বর ২২২২৪০১৫২৯৯১৯) রয়েছে।
মা-বোনের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে ১৬ হাজার টাকা দালালকে দিয়ে ট্রলারে চড়েছিলেন বলে জানান তিনি।
মিয়ানমার রক্ষীদের অত্যাচারে এখন আর হাঁটতে পারছেন না আটকদের আরেকজন ১০ম শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ হোসেন।
১৭ বছরের কিশোর মোহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে তাদের মিয়ানমার থেকে থাই উপকূলের দিকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এর ১১ দিন পর তারা থাই উপকূলরক্ষীদের হাতে ধরা পড়েন।
পরে তাদেরকে মিয়নমারের রোহিঙ্গা শরণার্থী হিসেবে আরও ৯৩ রোহিঙ্গার সঙ্গে ব্যাংককের অভিবাসী বন্দিশালায় চালান দেওয়া হয়।
মোহাম্মদ জানান, ব্যাংককে বাংলাদেশ মিশন থেকে তারা কোনও সাহায্য পাচ্ছেন না। ফলে তারা দেশে ফেরার জন্য থাই কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও আবেদনও করতে পারছেন না।
মোহাম্মদ গত ২৩ ডিসেম্বর কক্সবাজারের গণ্ডামারা গ্রাম থেকে ট্রলারে উঠেন। সঙ্গে আরও যারা ছিলেন তাদের মধ্যে নিজেকে একমাত্র জীবিত হিসেবে দাবি করেন তিনি।
"ফিরিয়ে নেয়ার জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করছি। নইলে আত্মহত্যা করব", বলেন মোহাম্মদ।
রমজান মাসে পিপল'স এমপাওয়ারমেন্ট নামের থাইল্যান্ডের একটি বেসরকারি সংস্থা ব্যাংককের অভিবাসী বন্দিশালায় আটক বাংলাদেশীদের খাদ্য সরবরাহের চেষ্টা করছে।
আটকদের বিষয়ে বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মহাপরিচালক কাজী ইমতিয়াজ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ব্যাংককে আমাদের মিশনে এ ধরনের কোনও তথ্য নেই। "
পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েসের অনুমতি সাপেক্ষে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, "পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার আগে পাচার হওয়া কোনও ব্যক্তিকে দূতাবাস বাংলাদেশী হিসেবে শনাক্ত করতে পারে না।
"কেননা, অনেক সময় রোহিঙ্গা শরর্ণার্থী এবং বাংলাভাষী ভারতীয়রা নিজেদের বাংলাদেশী দাবি করে থাকেন। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।