আবারও প্রমাণ হলো শাকিব ছাড়া অপু জিরো। ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত এই জুটির 'মাই নেম ইজ খান' চলচ্চিত্রটি বড়মাপের ব্যবসা সফল হয়েছে। এতে শাকিব-অপু জুটির প্রতি নির্মাতাদের আবার আগ্রহ দেখা দিয়েছে। মাঝে শাকিব অন্য নায়িকাদের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করলে অপুর ক্যারিয়ারে ভাটা পড়ে।
অপু বিশ্বাস নিজেও বলেছেন, 'শাকিব ছাড়া অন্য কোনো নায়কের সঙ্গে আমার চলচ্চিত্র দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পায় না।
এর প্রমাণ রিয়াজের সঙ্গে 'বাজাও বিয়ের বাজনা', ফেরদেৌসের সঙ্গে 'শুভবিবাহ', মান্নার সঙ্গে 'পিতা মাতার আমানত', মারুফের সঙ্গে 'গরীবের ছেলে বড়লোকের মেয়ে,' আমিন খানের সঙ্গে 'পৃথিবী টাকার গোলাম', ইমনের সঙ্গে 'এক বুক ভালোবাসা', নিরবের সঙ্গে 'মন যেখানে হূদয় সেখানে', জয়ের সঙ্গে 'পাষাণের প্রেম'সহ সম্রাট ও অমিত হাসানের সঙ্গে কাজ করা চলচ্চিত্রগুলোতে দর্শক আমাকে পছন্দ না করায় তাদের সঙ্গে জুটি গড়ে ওঠা বা এদের সঙ্গে আর কোনো চলচ্চিত্রে কাজ করা হয়নি। অপু বিশ্বাস এ পর্যন্ত প্রায় ৬৪টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। এর মধ্যে তার অর্ধশত চলচ্চিত্রের নায়ক শাকিব খান এবং অর্ধশতের মধ্যে ৪৪টি সুপার হিট। চলচ্চিত্র নির্মাতা ও দর্শকের মতে, এতেই প্রমাণ হয় শাকিব ছাড়া অপু অচল।
২০০০ সালের শুরুতে আমজাদ হোসেন পরিচালিত 'কাল সকালে' চলচ্চিত্রে সহনায়িকা হিসেবে অপু বিশ্বাসের চিত্রজগতে আগমন।
এরপর নায়িকা হিসেবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করলেও তার কোনো পরিচিতি ছিল না। ২০০৭ সালে এফআই মানিক শাকিব খান-অপু বিশ্বাসকে জুটি করে নির্মাণ করলেন 'কোটি টাকার কাবিন'। ওই সময় চলচ্চিত্র ব্যবসার মন্দাবস্থায় এটি সুপার ডুপার হিট হয়। এরপর একই নির্মাতা এ জুটিকে নিয়ে একে একে নির্মাণ করেন 'পিতার আসন', 'চাচ্চু', 'দাদীমা' ও 'মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি'। প্রতিটি চলচ্চিত্রই সুপার হিট।
এ জুটির দর্শক গ্রহণযোগ্যতা দেখে অন্য নির্মাতারাও তাদের নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন। তাদের অভিনীত চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসা সফল হওয়ায় চলচ্চিত্র শিল্পের দুর্দিন কাটতে শুরু করে। শুরু হয় ঢালিউডে শাকিব-অপু জুটির অপ্রতিরোধ্য যাত্রা। দুজনে একসঙ্গে কাজ করতে পরস্পরের প্রতি দুর্বলও হয়ে পড়েন। নির্মাতা ও দর্শকদের কথায় দুজন দুজনার প্রেমে পড়েন।
এ ধারণা জোরালো করেন শাকিব খান নিজেই। কারণ তাকে কোনো চলচ্চিত্রে কাস্ট করতে গেলে তিনি নির্মাতাদের কাছে তার বিপরীতে অপু বিশ্বাসকে নেওয়ার শর্ত জুড়ে দিতেন।
অপু বিশ্বাস সাংবাদিকদের কাছে অকপটে স্বীকার করে বলেন, 'শাকিব খানের সহযোগিতা না পেলে আমি কখনোই অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস হতে পারতাম না। আমার জনপ্রিয় নায়িকা হয়ে ওঠার পেছনে সমস্ত কৃতিত্বই শাকিবের। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।
' অনেক নির্মাতার ধারণা অপু শাকিবকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে উপরে ওঠার সিঁড়ি বানিয়েছেন। তিনি খুব বুদ্ধিমতী মেয়ে। কারণ চলচ্চিত্রে শাকিব খানের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা থাকলেও সে তুলনায় অপুর তেমন চাহিদা নেই। শাকিব খানের কারণেই টিকে গেছেন তিনি।
এর প্রমাণ কম জনপ্রিয় অন্য নায়কদের সঙ্গে অপু কাজ করলেও সেগুলো ব্যবসা সফল হয়নি।
যদি অপু জনপ্রিয় নায়িকা হতেন তাহলে তার জন্য হলেও চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসায়িক সফলতা পেতো। নির্মাতাদের মতে, এ কারণেই শাকিবের পিছু ছাড়ছেন না অপু। অপু যে শাকিবের সঙ্গে অঘোষিত সম্পর্ক গড়েছেন তার প্রমাণ ২০১১ সালের দুর্গাপূজায় শাকিবকে তার বগুড়ার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা। নির্মাতাদের মতে, চলচ্চিত্র জগতে অনেক নায়ক আছেন। কিন্তু সবাইকে বাদ দিয়ে শুধু শাকিবকে কেন নিমন্ত্রণ করলেন তিনি।
তাছাড়া তাদের সম্পর্কের আরও একটি প্রমাণ হিসেবে অপুর বাসায় শাকিবের হাতে জায়েদ খানের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতারা। ২০১০ সালে অপুর বাসায় জায়েদ খানের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের ওপর হামলে পড়েন শাকিব। দুজনকে ব্যাপক মারধর করেন তিনি। কারণ অপুকে চিত্রজগতে প্রতিষ্ঠা পাইয়ে দিয়েছেন শাকিব। তাই তার পাশে অন্য কোনো পুরুষের উপস্থিতি সহ্য করতে পারেননি শাকিব।
২০১১ সালের শেষ দিকে সম্পর্কের অবনতি কিংবা একঘেয়েমি কাটানো বা যে কোনো কারণেই হোক শাকিব অন্য নায়িকাদের সঙ্গে জুটি গড়তে শুরু করেন। এদের মধ্যে পূর্ণিমা, সাহারা, তিন্নি, জয়া, রোমানা, মীম, মাহি, পপি উল্লেখযোগ্য। ফলে অপুকে নিয়ে নির্মাতারা আর আগ্রহ দেখাননি। এতে কর্মশূন্য এবং বেকার হয়ে পড়েন অপু বিশ্বাস। আগে কাজ সম্পন্ন হওয়া বদিউল আলম খোকনের 'মাই নেম ইজ খান' ঈদে মুক্তি পেয়ে সুপার হিট ব্যবসা করে।
এতে অপু নির্মাতাদের বোঝাতে সক্ষম হন শাকিব খানের সঙ্গে তার থাকা মানেই চলচ্চিত্রটি সুপারহিট।
নির্মাতাদের পাশাপাশি শাকিব খানের মনও আবার জয় করে নেন অপু। ফলে 'মাই নেম ইজ খান' সফল হওয়ার পর দুজনকে জুটি করে পাঁচটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো হলো- এফআই মানিকের 'দুই পৃথিবী', মনতাজুর রহমান আকবরের 'মাই ডার্লিং', রফিকুল আলম রকিবের 'প্রেমিক নাম্বার ওয়ান', নজরুল ইসলাম খানের 'মনের ঠিকানা', এবং জাকির হোসেন রাজুর 'মনের মতো মন পাইলাম না'। দীর্ঘদিন পর শাকিবের সঙ্গে পাঁচটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় আপাতত অপুর বেকারত্ব ঘুচল।
এ কথা জানিয়ে নির্মাতারা বলেন, আসলেই শাকিব ছাড়া অপু জিরো। কারণ নায়িকাসুলভ চেহারা, দৈহিক গঠন, অভিব্যক্তি কিংবা অভিনয় দক্ষতা কোনোটাই অপুর নেই। শাকিবের কাঁধে ভর করেই বারবার পার পাচ্ছেন অপু।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।