........
ইটের উপর দাড়িয়ে আছে এক মাতব্বর। এটার ঠ্যাং চিবানোর লোভে কারো জিভে জল এসে যেতে পারে আবার কেউ আমার উপর রেগেও যেতে পারে ফাউল পোষ্ট পাঠানোর জন্য। কেউ কেউ ভাববে কোন বিষয় না পেয়ে আমি হ্তাশ হয়ে এখন মোরগ মুরগি চেনানোর জন্য নতুন টপিক খুলছি যত্ত সব আজেবাজে।
"এই মুরগিটা কি চেনেন?" এই একটা প্রশ্ন করে টপিকটা ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু গনহারে - খাওয়ার ভয়ে প্ল্যানটা চেন্জ করলাম।
হয়তো অনেকে জানেন ব্যাপার টা কিন্তু বেশিরভাগই বলবেল এইটা একটা মোটাসোটা দেশি মোরগের ছবি ছাড়া আর কিছুই নয়।
এই "দেশি মোরগ" কথাটায় আমার একটু আপত্তি আছে। আজকাল গ্রামের বাজারেও দেশের দেশি মুরগি পাওয়া যায় না। একেবারে অজ পাড়াগায়ের মানুষেরা নিজেদের খাওয়ার জন্য আট দশটা দেশি মুরগি পালে। আর যদি টাকাপয়সার দরকার হয় তাহলে দু একটা বাজারে নিয়ে আসে।
তাহলে
ঢাকার মতো জনবহূল নগরীতে প্রতিদিন যে হাজার হাজার মুরগী বিক্রি হয় সেগুলা কোথাথেকে আসছে??
ঢাকার বাজারে বেপারির ধোকায় দেশি মনে করে বেশি দাম দিয়ে যারা এ মোরগটি কেনে তারা আসলে একটা পাকিস্হানী অরিজিন মুরগি, আমাদের দেশে যার নাম "সোনালি" কিনে নিয়ে যায়।
দেশি বলতে আমরা যে মুরগি চিনি/জানি এটা সেই মুরগি না। ধোকা দেয়ায় বেপারিকে অবশ্য পুরাপুরি দোষ দেয়া যাবেনা। কারন স্বাদে গন্ধে এই মুরগি দেশির মতই।
ব্রয়লার মুরগি অনেকেই খেতে পারেনা (এ দলে আমিও) আবার বিয়ের অনুস্ঠানে খাওয়াদাওয়ার গুরুত্বপূর্ন আইটেম হলো "রোষ্ট" যেটা এ মুরগি ছাড়া হবেনা।
খেয়াল করে দেখবেন ঢাকার প্রায় সব রেস্টুরেন্টে দেশি নামে এই মুরগিই বিক্রি হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কারনে এ মুরগির গুরুত্ব অনেক।
আগুন ঝরানো বাজারে গরিবের মাংস বলতে এখন ব্রয়লারই বুঝায়।
দেশি মুরগির চাহিদা আর বানিজ্যিক ভাবে লাভজনক না হওয়ায় বিকল্প হিসাবে পাকিস্হানী মুরগি কয়েক ধাপে ক্রস হয়ে "সোনালির" জন্ম খুব বেশি দিন আগে নয় ১০ , ১২ বছর হবে ।
২০০১ -২০০২ সাল থেকে উত্তরের এক ছোট্ট জেলা জয়পুরহাটে একটা বিরাট অর্থনৈতিক বিপ্লব হয়েছে এই সোনালী মুরগিকে ঘিরে।
ধিরে ধিরে শতশত কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে । পোল্ট্রি ফিড কারখানা গড়ে উঠেছে গোটা চার ,পাচেক, হ্যাচারি দশ বারোটা, আর গড়ে উঠেছে নয় দশ হাজার ছোট , মাঝারি ও বড় ফার্ম । প্রায় বিশ হাজার দরিদ্র , বেকার লোক স্বাবলম্বী হয়েছে। গতবছর বার্ডফ্লু আতংকের কারনে গাজীপুরে এ শিল্পে ধস নামে আর এই ফাকে মাংসের সোনালি মুরগি ও ডিম উৎপাদনে জয়পুরহাট এখন ১ নম্বর।
তো আর কি ! আপনারা দেশি, পাকিস্হানী চিনলেন আর আমি মুরগি কাহিনীও শেষ করলাম।
সাথে চামেচামে আমার ফার্মের কিছু ছবি দিলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।