আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জ্বীন’দের 'বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিতে' অন্তর্ভূক্তি পূর্বক এই প্রজাতি রক্ষায় 'পঞ্চবার্ষিকী প্রকল্প' গ্রহন করার দাবী জানাই ।



হাজার বৎসর পূর্বে ... ধর্মপ্রচারকদের আস্তিনের ভাজে, মেন্দি'রঙ্গিল চোয়ালের দাড়ির গোড়ায় কিম্বা বগলের চিপায় ধরিয়া রাখা ধর্মগ্রন্থের পাতায় চড়িয়া ... এই ভারতবর্ষে এবং অতি অবশ্যই এই বঙ্গীয় সমতটে যে রোশনাই জীববৈচিত্র'টির আগমন ঘটে; তাহার নাম জ্বীন । বৈজ্ঞানিক নাম জ্বীনোনূড়াস আলিফোলাইলাস । ইহারা অ্যাড়াবিয়ানো নাইটাস গোত্রভুক্ত হইলেও অনেক বুজুর্গ জীববিজ্ঞানী ইহাদের কোরান্টিস রোশনাইয়াস গোত্রভুক্ত বলিয়া অভিমত দেন । সে যাহাই হোক ... সুপ্রশিদ্ধ কাফকাফ নগরীতে ইহাদের আদি বাস ... স্থান বৈচিত্র, কাফকাফ নগরে খাদ্যের অপ্রতুলতা ইত্যাকার কারণে তাহারা প্রানের কাফকাফ নগর ছাড়িয়া পৃথিবীর দিকবিদিক ছড়াইয়া পরে । খাদ্যের ব্যাপার যেহেতু আসিল, তখন বলিতেই হয় ... ইহাদের প্রধান খাদ্য ছিল গৃহপালিত পশুপক্ষীর 'ঘু' ... (এই লইয়া বুজুর্গ পুষ্টিবীদ'দের ব্যাপক মত পার্থক্য থাকলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ মত'টাই এখানে দেওয়া হল) ... ইতিহাসবীদ'দের মতে কাফকাফ নগরে শুধু ঊষ্টক এবং দুম্বা নিঃসৃত ঘু' খাইয়া জ্বীন'দের পোষাইতেছিল না ... ভারতবর্ষের মাঠে-ঘাটে, পথে-প্রান্তরে ছড়ানো গব্য ঘু'য়ের খ্যাতি কাফকাফ নগরেও পৌছাইয়াছিল ... তাই জ্বীন সম্প্রদায়ের একাংশ ব্যাপক উৎসাহিত হইয়া পৃথিবীর এই প্রান্তে আসিবার সুযোগ খুজিতেছিল ।

আর এভাবেই ভারতবর্ষে তথা বঙ্গীয় সমতটে শুরু হয় হাজার বছরের ধন্য জ্বীনীয় ইতিহাস । কালের সাক্ষ্যঃ তাহারা টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া শাসন করিত, গৌরব'মাখা তাদের ক্রিয়াকলাপের লোকগাথা শুনিয়া এই বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই মাথা নুইয়ে আজ'ও স্মরণ করে ... পরম শ্রদ্ধায় ... চরম আতংকে । তো' যা বলিতেছিলামঃ ... যুগের পট পরিবর্তনে এই জ্বীনকুল ব্যাপকভাবে এবং আতঙ্কজনকহারে হ্রাস পাইতেছে । গবেষনায় দেখা গিয়াছে; এই সমতটে শায়তানের প্ররোচনায় বিদ্যুৎ বা ইলেক্ট্রিসিটি নামক 'শক্তি-আধার' প্রচলনের পর থেকেই মূলত জ্বীন'কূলের এই দূর্গতি শুরু। প্রায় শত বছর ধরে এই শায়তানের আধার শহর ছাড়িয়া গ্রাম-গঞ্জ, বন-বাদার, পাহার-পর্বত, হাট-মাঠ-ঘাট-খাল-বিল দখল করিয়া ফেলিয়াছে ।

কোথাও শান্তি নাই । যেখানেই যাও সুইস টিপিলেই ফকফকা ... জ্বীন'রা থাকিবে কোথায় ? তাহাদের অন্ধকার প্রয়োজন । বনের অন্ধকার , মনের অন্ধকার দুইটি'ই তাদের অস্তিত্বের নিমিত্তে অতি'জরুরী । তাও খুজিয়া পাতিয়া যেটুকু অন্ধকার পাওয়া যায় তাহতেও ঘাপলা । বনে বাত্তি নাই ঠিকই, কিন্তু খাম্বা আছে; উহাতে শায়তানের লেজ ছড়ানো; তাহাতে শায়তানী বিদ্যুৎকনা ছুটাছুটি করে প্রতি নিয়ত ।

মনের সুখে উড়াল পাড়িবি, সে উপায় নাই ... একবার ঐ ল্যাঞ্জায় জড়াইলে এক্কেরে গ্রীল চিকেন ঝুলিবে । শেষ শয়নের জন্য মাতৃভুমি কাফকাফ নগরে জায়গা পাইবিনা । কাফকাফ নগরে গ্রীল চীকেন কবর দেয় না, বিধান নাই । তাই জ্বীন'কূলের ঊড়াউড়ি বন্ধ, আর উড়াউড়ি বন্ধ মানেই খাওয়া খাইদ্য নাই । এক জরিপে দেখা গেছে ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জ্বীনের দর্শনকারী সংখ্যা ৭০ গুন কমিয়া গিয়াছে ।

উপরন্তু কাফকাফ নগরীর দৈনিক কাব্জহাব পত্রিকার বিবরণ অনুযায়ী জ্বীন'দর্শনা বাবদ ফরেন রেমিটেন্স আশংকাজনক হারে কমিয়া গিয়াছে । নগরের চারটি প্রধান সরকারী ব্যাংক দেউলিয়া হইয়াছে । আর এজন্য কাফকাফ মেয়র ‘হাবলু ইবনে কাবলু’ সাম্প্রতিক রিসেশন’কে নয় বরং শত বৎসরের পৃথিবীময় ব্যাপ্ত এবং অনুশীলিত শায়তানী কৃষ্টিকালচার ... আংরেজ শিক্ষানীতি ... হারাম প্রযুক্তি’কে দায়ী করেন । মেয়র দুঃখভারাক্রান্ত মনে আরও বলেনঃ "স্যাটেলাইট টিভি, মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের যুগে কেউ আর আমগোরে বেইল দেয় না"। গত বৎসর চাঁদ দেখা কমিটি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জনৈক বুজুর্গ ওলানে চিস্তি শরীয়তপুরী বলেন, “এই মুহুর্তে আমাদের মোল্লা-পুরহিত'দের জীবন জীবিকায় ব্যাপক টান পড়িয়াছে ।

জ্বীন সংকটে ... কেউ আর আগের মত আমাদের ধুতরা"পড়া ... ঝারু"পড়া খাইতে আসেনা”। এমাতবস্থায়ঃ আমাদের বঙ্গীয় সমতটের আসনাসিন সরকারের উচিত "জ্বীন সংরক্ষন নীতিমালা ১৯৭৭"তে ব্যাপক পরিবর্তন আনিয়া কঠোর ভাবে "জ্বীন সংরক্ষন অধ্যাদেশ ২০০৯" প্রনোয়ণ করা । সরকারী উদ্যোগে পাড়ায়-মহল্লায় মুরব্বিদের সংগঠিত করিয়া 'জ্বীন দেখা কমিটি'; 'জ্বীন রক্ষা কমিটি' তৈরী করা ... পরিবেশবাদী'দের উচিত "জ্বীন বাচাও, আলো ঠেকাও" স্লোগান দিয়া দেশের সকল ইলেট্রনিক বাত্তি, যন্ত্রাদি ২০ হাত মাটির নিচে পুতিয়া ফেলা (ইহাদের রেডিয়েশন'ও যেন জ্বীনকূল'কে স্পর্শ করিতে না পারে) । ... ঘরে ঘরে আমাদের'ও দায়িত্ব কম নহে। আলাদিনের প্রদীপ না পাইলেও হারিকেন, কুপি, সলতা; এমন কি মোমবাত্তি হইলেও তা নিভাইয়া ব্যাপক ঘষাঘষি করিয়া দু একটা জ্বীন'কে উত্তেজিত এবং উজ্জীবিত করা যায় কিনা সে চেষ্টা করিতে হইবে ।

পরিশিষ্ঠঃ পরবর্তি জাতি সংঘ কনভেনশন ২০১০’য়ে আমাদের সরকারের উচিত "বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতি" হিসেবে জ্বীনের স্বীকৃতি দাবী করা । স্বীকৃতি মিলিলে ব্যাপক ফান্ড আসিবার সম্ভাবনা আছে, যা দিয়া আমরা "জ্বীন উদ্ধার কার্যক্রম" পরিচালনা ছাড়াও বানিজ্যিক ভিত্তি'তে আলাদিনের চেরাগ উৎপাদনের লক্ষ্যে আদমজী জুট মিল'কে কাজে লাগাইতে পারিব । সাফল্য সুনিশ্চিত । শ্রুতি আছে ... জনমানব শুন্য আদমজী জুট মিল এখন ভুত-প্রেতের কারখানা। এই মুহুর্তে সরকার অত্রাঞ্চলে একটি পঞ্চবার্ষিকী প্যাকেজ প্রজ়েক্ট হাতে নিলে তাতে সাফল্যের নিশ্চয়তা ৯৯.৯৯% ।

খেয়াল রাখিতে হইবে, জ্বীনশিল্পে আমাদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল ... ঈর্ষাম্বিত হইয়া বহির্শত্রু ইহাতে ষড়যন্ত্র করিবেই ... ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুত' থাকিতে হইবে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।