আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নামে কক্সবাজার স্টেডিয়াম

রাজনৈতিক সফরে আগামীকাল কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে বেশকিছু জায়গায় ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক সফরের মধ্যেই তিনি উদ্বোধন করবেন টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মহিলাদের ভেন্যু কক্সবাজার স্টেডিয়ামের। যার নামকরণ করা হচ্ছে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে। কক্সবাজার স্টেডিয়ামের নতুন নাম বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশ্বস্ত সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এটা অষ্টম আন্তর্জাতিক ভেন্যু। বিসিবির অনেকে আবার বলছেন স্টেডিয়ামের নামকরণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জৈষ্ঠ্য পুত্র শেখ কামালের নামে। অন্যরা বলছেন, বিতর্ক এড়াতে নাম রাখা হচ্ছে কঙ্বাজার আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখায় সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেওয়া হয়।

এদের অন্যতম মোহাম্মদ রুহুল আমিন। ১৯৩৫ সালে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরী থানার বাঘচাপড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫৩ সালে এসএসসি পাস করে জুনিয়র মেকানিক্যাল হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কর্মজীবনে ১৯৬৮ সালে বখতিয়ার নৌ-ঘাঁটিতে বদলি হন। ১৯৭১ সালের এপ্রিলে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে।

মুক্তিযুদ্ধে শফীউল্লাহর নেতৃত্বাধীন ২ নম্বর সেক্টরে যোগ দেন এবং তার অধীনে বিভিন্ন স্থলযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গঠন করা হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী। নৌবাহিনী গঠনের পর 'পদ্মা' ও 'পলাশ' নামে দুটি গানবোট উপহার দেয় ভারত সরকার। পলাশের প্রধান ইঞ্জিনরুমে আর্টিফিশার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন রুহুল আমিন। ৬ ডিসেম্বর ভারতীয় নৌবাহিনীর সহায়তায় যশোর সেনানিবাসের পতন ঘটে।

ওই অভিযানে অংশ নেন রুহুল আমিন। ১০ ডিসেম্বর পলাশ ও পদ্মা গানশিপ দুটি খুলনা শিপইয়ার্ডের কাছে পৌঁছানো মাত্রই তিনটি পাকিস্তানি বিমান থেকে গোলাবর্ষণ করা হয়। গোলাবর্ষণে বিকল হয়ে যায় পলাশের ইঞ্জিনরুম। শত চেষ্টা করেও পলাশকে বাঁচাতে না পেরে আহত রুহুল আমিন ঝাঁপিয়ে রূপসা নদীতে এবং সাঁতার কেটে তীরে উঠে আসেন। তীরে উঠে আসার পর স্থানীয় রাজাকাররা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।

১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকারি গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাতজন বীর সন্তানকে মরণোত্তোর বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেওয়া হয়। সেই তালিকাতে নাম যুক্ত করা হয় মোহাম্মদ রুহুল আমিনের। টি-২০ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার পরপরই বিসিবি থেকে ঘোষণা করা হয় কঙ্বাজারে স্টেডিয়াম তৈরি করার কথা। সেখানে মহিলাদের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে বিসিবি কঙ্বাজারে জমি অধিগ্রহণ করতে চেষ্টা করে।

শেষ পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে ৪৮ একর জমি অধিগ্রহণ করে বিসিবি। গত এপ্রিলে কাজ শুরু হয় স্টেডিয়ামের। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যাবতীয় কাজ সমাপ্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির গ্রাউন্ডস কমিটির ম্যানেজার আবদুল বাতেন, 'আমাদের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। আশা করছি ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ সমাপ্ত হবে। ' এরমধ্যে স্টেডিয়ামের বাউন্ডারি দেওয়ালের কাজ শেষ হয়েছে।

শেষ হয়েছে ৫টি উইকেট। যেখানে আসরের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া অনুশীলন মাঠের উইকেট প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে সেন্টার উইকেট বানানো হয়েছে ৩টি এবং মাঠের দুইদিকে ২টি করে তৈরি করা হয়েছে চারটি উইকেট। কক্সবাজার জেলা স্টেডিয়ামেও অনুশীলনের জন্য বানানো হয়েছে ৮টি উইকেট।

এছাড়া আউট ফিল্ডের ঘাস লাগানোর কাজ চলছে দ্রুতলয়ে। কাজ চলছে ড্রেসিং রুমের। কাজ চলছে গ্রান্ডস্ট্যান্ড প্যাভিলিয়নের। যেখানে ২ হাজার লোক বসে খেলা দেখতে পারবেন। এছাড়া ৫০০০-৬০০০ লোক বসে খেলা দেখার জন্য বানানো হচ্ছে ভিউস গ্যালারি।

এ রকম গ্যালারি রয়েছে নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে।

টি-২০ বিশ্বকাপ শুরু হবে ২০১৪ সালের ৬ মার্চ। চলবে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত। মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে হবে মহিলাদের ৮ দলের খেলা এবং পুরুষদের ১৬ দলের খেলা অনুষ্ঠিত হবে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এবং সিলেট বিভাগীয় বা ফতুল্লা স্টেডিয়ামে।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.