আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনবী (সাঃ) পর্ব-(১)

দুনিয়া ঐ ব্যক্তিরই থাকার জায়গা যার থাকার কোন জায়গা নেই। আর ঐ ব্যক্তির জন্যই সম্পদ যার জ্ঞান বুদ্ধি নেই।

শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনবী (সাঃ) বিশ্ব জাহানের শান্তির অগ্রদূত আখেরি নবী (সাঃ) মানব জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুখ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি আদর্শ জীবনবিধান প্রতিষ্ঠা করে সর্বাধিক কৃতিত্বের আসনে সমাসীন হয়েছেন। যার প্রশান্তি সর্বকালের ও সর্বযুগের জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের মুখে মুখে বিধৃত। নবী করিম (সাঃ) শ্রমিকদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘এরা তোমাদের ভাই, তোমাদের খিদমত করছে।

আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। তাই যে ভাই যার অধীনে রয়েছে, যা সে নিজে খায়, তাকে তা থেকে খেতে দেবে। যা সে নিজে পরে, তা-ই তাকে পরাবে। আর যে কাজ তার জন্য অতি কষ্টকর, সে কাজের বোঝা তার ওপর চাপিয়ে দেবে না। অগত্যা যদি সে রকম কাজ করাতেই হয়, তবে নিজে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে তাকে সাহায্য করবে।

’ (বুখারি শরিফ) শ্রমিক বলতে সাধারণত কর্মচারী শ্রেণী, দিনমজুর, কুলি, তাঁতি, জেলে, কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, গাড়িচালক, রাজমিস্ত্রি, ছুতার মিস্ত্রি ও হেলপার প্রভৃতি পেশাজীবীকে বোঝায়। যদি তার মজুরি আজ না দিয়ে আগামীকাল দেয়ার জন্য রেখে দেয় কিংবা মেরে দেয়, তাহলে সে টাকার অভাবে খাবার কিনতে না পেরে ছেলেমেয়েসহ সারা রাত-দিন অভুক্ত কাটাবে। এ কারণেই মহানবী (সাঃ) শ্রমিককে কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি দিয়ে দেয়ার জন্য বিশেষ তাগিদ দিয়েছেন। নবীজী (সাঃ) আল্লাহ পাকের নির্দেশকে জানিয়ে দিয়ে বলেছেন, অকর্মণ্য অলস ব্যক্তি আল্লাহর অপছন্দনীয় এবং উপার্জনকারী কর্মঠ ব্যক্তি আল্লাহর পছন্দনীয়। নবীজী (সাঃ) নিজে শ্রম করতেন আর অপরকে উৎসাহিত করতেন।

তিনি নিজের জামা নিজে ধৌত করতেন এবং নিজের জুতা নিজেই সেলাই করতেন। নিশ্চয় হজরত দাউদ (আ•) নিজ হাতে উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অন্যান্য নবী-রাসূলও নিজেদের কাজ নিজেরাই করতেন। নবী করিম (সাঃ) শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষকে অত্যন্ত সম্মানের দৃষ্টিতে দেখতেন। এ জন্য যে, যারা সৃষ্টির কল্যাণের জন্য নিজেদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, শরীরের রক্ত পানি করে দিন-রাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে, নিজেদের ঘাম ঝরায় মানুষের সুখের জন্য, শান্তির জন্য, মানুষের মুখে হাসি ফোটায়, নিজেদের তিলে তিলে নিঃশেষ করে দেয়; নিজের সুখ-শান্তি বিসর্জন দেয়, তারা মহান আল্লাহর দরবারে বড় মর্যাদার অধিকারী।

মহানবী (সাঃ) যখন শ্রমজীবী কাউকে অসচ্ছল ও দুর্দশাগ্রস্ত দেখতেন, তখন তিনি বিচলিত হয়ে পড়তেন এবং বিত্তশালীদের তার প্রতি সাহায্য ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। কোন দাস-দাসী, অভাবি, গরিব বা সেবাকর্মে নিয়োজিত কাউকে বিবস্ত্র কিংবা মলিন কাপড়ে দেখলে তার মালিককে এ অবস্থার জন্য সাবধান করে দিতেন। তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে বলতেন। নবী করিম (সাঃ) বলেন, ‘তার চেয়ে উত্তম কোন আহার নেই, যা মানুষ তার নিজের হাতে উপার্জন করে আহার করে। ’ রাসূলে করিম (সাঃ) শ্রমিকদের সম্পর্কে বলেছেন, ‘শ্রমিকদের এমন কাজে বাধ্য করা যাবে না, যা তাদের অক্ষম ও অকর্মণ্য বানিয়ে দেবে।

’ চলবে.........................

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.