কি যে বুঝি তাও বুঝি না।
পর্যটন শিল্প ঃ
বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য পর্যটন শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ সাধন করা প্রয়োজন। পর্যটন শিল্প ইতিমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে দৃষ্টাšতমূলক ভূমিকা রেখেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান খাত হিসেবে গার্মেন্টস সেক্টর নিয়ে আমাদের গর্বের অšত নেই।
অনেক দেশে পর্যটন শিল্পও ঠিক তেমনি।
পর্যটন শিল্পে বিভিন্ন দেশের জাতীয় আয় ঃ
বিশ্ব পর্যটন সংস্থার হিসেব মতে, প্রতি বছরই ৯০ কোটি পর্যটক তৈরি হচ্ছে বিশ্বে। আর এই ক্রমবর্ধমান বিদেশী পর্যটকের কারণে এশিয়ার মধ্যে মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ও নেপাল পর্যটন শিল্পের কারণেই বিশ্বময় পরিচিত হয়ে উঠছে দ্রুত। এসব দেশের প্রাকৃতিক কিংবা ঐতিহাসিক আকর্ষণীয় অনেক স্থান উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আরো আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সিংঙ্গাপুরের জাতীয় আয়ের ৭৫%, তাইওয়ানের জাতীয় আয়ের ৬৫%, হংহং এর জাতীয় আয়ের ৫৫%, ফিলিপাইনের জাতীয় আয়ের ৫০% এবং থাইল্যান্ডের জাতীয় আয়ের ৩০% আসে পর্যটন শিল্পের খাত থেকে।
বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের স্বীকৃতি ঃ
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৩৭ বছর পরও পর্যটন শিল্পের তেমন উন্নয়ন হয়নি। কিন্তু ১৯৯১ সালে পর্যটন নীতিমালায় পর্যটন শিল্পকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই খাতটির বিকাশের সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। সমুদ্র পাহাড় বন-বনানী নিয়ে অর্থাৎ আমাদের বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্বর্গ এবং গর্ব করার মতই সুন্দর। আমাদের দেশের হর্তাকর্তাবৃন্দ এই সৌন্দর্য দেখে এই খাতকে সম্পদে পরিণত করার মনমানষিকতা এখনও তৈরি হয়নি।
বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজ ঃ
বিশ্বায়নের যুগে গোটা পৃথিবী ছোট হয়ে আসার বা¯তবতাতো অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
বিশ্বকে এখন বলা গ্লোবাল ভিলেজ। এই গ্লোবাল ভিলেজে যা কিছু ঐতিহ্যমন্ডিত, ঐতিহাসিক, সুন্দর ও আকর্ষণীয় তা দেখার এবং উপভোগ করার অধিকার বাড়ছে বিশ্ববাসীর।
জাতিসংঘের পর্যটন সংস্থার হিসেব অনুযায়ী,১৯৫০ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যšত বিশ্বে পর্যটক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ৬.৫% হারে। আগামী ২০২০ সাল নাগাদ বিশ্বের পর্যটক সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬০ কোটি। আশা করা হচ্ছে ২০২০ সালে বিশ্বে ভ্রমণ ও পর্যটন খাতে প্রায় ৮ লাখ কোটি মার্কিন ডলার আয় হবে।
২০১৮ সাল পর্যšতপর্যটন শিল্পে ২৯ কোটি ৭০ লাখ কর্মসংস্থান হবে এবং বিশ্বে জিডিপিতে ১০ দশমিক ৫ ভাগ জোগান দিবে এই খাত।
পর্যটন শিল্প বিকাশে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঃ
বাংলাদেশে প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বে দিক থেকে দর্শনীয় স্থান নিতাšত কম নয়। দেশের নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু পর্যটন শিল্প বিকাশের অনুকূলে। কিন্তু দেশের প্রশাসনিক কাজে যারা নিয়োজিত তাদের ব্যর্থতা হলো পর্যটন শিল্পের এই খাতকে পর্যটকদের সামনে তোলে ধরতে পারেনি এবং সুযোগ সুবিধা সৃষ্টিসহ অবকাঠামোর উন্নয়ন করতে পারেনি।
সুন্দরবনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণা ঃ
১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠন ইউনেস্কো সুন্দরবনকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট, বা বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশের এমন বিষ্ময়কর প্রাকৃতিক সম্পদ এর অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও এই সম্পদের সঠিক ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলতে পারেনি। বাংলাদেশের এই প্রাকৃতিকরূপ বৈচিত্রকে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর কাছে উপভোগ ও উপযোগী করে উপস্থাপন করার জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই প্রেেিত-
পর্যটন শিল্প বিকাশে সরকারের উদ্যোগ ঃ
বাংলাদেশ পর্যটন অধ্যাদেশ-২০০৮ এর একটি খসড়া বর্তমান সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন। এই অধ্যাদেশ বাস্তুবায়ন হলে পর্যটন শিল্পে বেসরকারী বিনিয়োগ বাড়বে। এই অধ্যাদেশটি অনুমোদিত হলে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনকে ভেঙে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও বাংলাদেশ পর্যটন অধিদপ্তর নামে ভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান গঠিত হবে।
এসব সরকারি প্রতিষ্ঠান পর্যটন শিল্পের বিকাশে আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
পর্যটন শিল্পের ভাবমুর্তি রা এবং প্রচার এবং প্রসারের জন্য সরকারের বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় এবং যোগাযোমন্ত্রণালয়ে কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য জোড় দেওয়া হয়েছে।
বিদেশী পর্যটকদের হয়রানি কমাতে বিমান বন্দরে অন এয়ারভেল ভিসা প্রক্রিয়া চালু করার প্রস্তুাব করারও প্রস্তুাব করেছে পর্যটন কর্পোরেশন। এছাড়া পর্যটনের আকর্ষণীয় স্থানগুলোতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু এবং বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডের সুবিধা, পর্যটনখাতে সরকারি বাজেট বৃদ্ধি ও ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠনের সুপারিশ করেছে পর্যটন খাতের প থেকে।
পর্যটন খাতে বিদেশী বিনিয়োগ ঃ
বাংলাদেশের সোনাদিয়া দ্বীপে ‘‘এক্সকুসিভ ট্যুরিস্টজোন’’ তৈরি করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি বিনিয়োগের প্রস্তুাব করেছে।
জাপানিরাও কক্সবাজারে পর্যটন কেন্দ্র করার জন্য প্র¯তাব দিয়েছে। এ েেত্র বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হলে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ করার প্রস্তুাব বাড়বে এবং নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হবে।
বাংলাদেশের পর্যটন খাত ঘিরে এ ধরণের বেসরকারি ব্যবসায়ী উদ্যোগ ও বিনিয়োগ হচ্ছে বলেই কিন্তু দেশীয় পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। কাজেই সরকারিভাবে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তুবায়ন হলে দেশী-বিদেশী বিনেয়োগ বাড়বে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অর্জনে বড় একটি খাত সৃষ্টি হবে যা আমাদের জাতীয় আয়কে সমৃদ্ধ করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।