সত্যের পথে সবসময়
লিখেছেন- আক্তা হোসেন.
প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫ বছর পর কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার বিহার মন্ডল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বালিকা বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবরে স্থানীয় প্রশাসন,রাজনৈতিক মহলসহ সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় ওই বালিকা বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি ‘লিগ্যাল নোটিশ’ প্রকাশিত হওয়ার পর এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়। শুক্রবার সকালে বিহারমন্ডল এলাকায় গিয়ে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে নাম পরিবর্তন করার প্রক্রিয়ার সত্যতা পাওয়াগেছে। তবে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সাফ বক্তব্য এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না।
বিদ্যালয় সূত্র ও স্থানীয়রা জানান বিগত ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বিহার মন্ডল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন স্থানীয় বিএনপি দলীয় সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। এর আগে কয়েক মাস ওই বিদ্যালয়টি প্রথমে বিহারমন্ডল বালিকা বিদ্যালয় ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী বালিকা বিদ্যালয় নামে কার্যক্রম চলছিল। ২০০৫ সালে শহীদ জিয়াউর রহমানের নামে ওই বালিকা বিদ্যালয়ের নামকরন সরকারীভাবে চুড়ান্ত করা হয়। বিগত ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লা শিা বোর্ড থেকে ওই বিদ্যালয় কে পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়। বর্তমানে এ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রায় দেড়শ’ জন ছাত্রীর মধ্যে ৭৫ জন উপবৃত্তি পাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি রয়েছে ৭৫ শতাংশ। চলতি মাসের ৩ জুলাই স্কুল পরিচালনা পরিষদের এক সভায় বিদ্যালয়ের নাম থেকে ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের’ নাম কর্তন করে বিহার মন্ডল বালিকা বিদ্যালয় নাম করন করার সিন্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১০ জুলাই (শুক্রবার) স্থানীয় দৈনিক রূপসী বাংলা পত্রিকায় বিদ্যালয়ের পে পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম লিগ্যাল নোটিশ প্রকাশ করেন তাতে উল্লেখ রয়েছে “ এলাকার ও বিদ্যালয়ের বৃহত্তর কল্যাণ স্বার্থে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এতে কারো আপত্তি থাকলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে হবে’। প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫ বছর পর হঠাৎ কেন বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন এমনই প্রশ্নে প্রধান শিক নবী নেওয়াজ জানান এলাকার মেয়েদের শিার উন্নয়নে সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন, কিন্তু এখন বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব রাই কঠিন হয়ে পড়েছে, শিা বোর্ডে ঝুলে আছে স্কুলের স্বীকৃতি,শিক কর্মচারীরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিনা বেতনে চাকুরী করছে, তাই নাম পরিবর্তন ছাড়া আর কোন উপায় নেই। স্কুল পরিচালনা পরিষদের সদস্য ফরিদ উদ্দিন মেম্বার জানান স্কুলটি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে,কিন্তু এখন মতায় আওয়ামীলীগ তাই নাম পরিবর্তন করেও যদি স্কুলটি রা করা যায় সেই চেষ্টাই চলছে।
স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম জানান স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে সবার মতামত নিয়ে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক বিএনপি নেতা জানান বিধিমোতাবেক শিা বোর্ডের শর্ত পূরন হলে বোর্ড স্বীকৃতি দিয়ে থাকে, বর্তমান মহাজোট সরকার মতায় আসার এ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি অনেকটা জোরালো হয়। স্থানীয় একটি সূত্র জানায় জুন মাসে স্বীকৃতির জন্য শিা বোর্ডে আবেদন করার পর বোর্ড থেকে কোন পরিদর্শন কিংবা চিঠি প্রেরনের পূর্বেই এখন তড়িঘড়ি করে নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন ছিল না।
এদিকে ওই স্কুলের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আতাউর রহমান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিা অফিসার মতিউর রহমান শুক্রবার বিকেলে জানান স্কুলের নাম পরিবর্তনের ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপ তাদেরকে লিখিত কিংবা মৌখিকভাবে অবহিত করেনি,তবে বিষয়টির খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বিএনপি দলীয় স্থানীয় সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী ঢাকা থেকে সেল ফোনে যুগান্তরকে জানান এলাকার নারী শিার উন্নয়নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে ওই বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা করেছিলাম,এখানে শহীদ জিয়া কিংবা আমার পরিবারের কেউ লেখা পড়া করে না,করবেও না,কিন্তু সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে যদি একজন জাতীয় নেতার নামের শিা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাহলে ভবিষ্যতে বিএনপি মতায় গেলে এমনই অনেক নেতিবাচক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।