আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জনতার রোষানল থেকে বাঁচতে জেনারেল মইন আত্মগোপন করেছে। যুগে যুগে এদের মতো বেইমানরা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে- কুমিল্লায় নাগরিক সমাবেশে মাহমুদুর রহমান

কথা বলি মানুষের

সাবেক জ্বালানী উপদেষ্টা ও আমারদেশ পাবলিকেসন্স এর চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে প্রতারিত করছে। তারা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে ভারতের হাতে তুলে দিতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলবেন আর ভারতের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন তা হতে পারে না। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মতায় আসার পর আমাদের কি উপহার দিয়েছে? তারা আমাদের ৪টি জিনিস উপহার দিয়েছে,- অরক্ষিত সীমান্ত, বিডিআর এবং সেনাবাহিনীকে পঙ্গু করা হয়েছে, বাংলাদেশকে মরুকরণের লক্ষে টিপাইমুখ বাধ বাস্তবায়ন করছে এবং এশিয়ান হাইওয়ে নয় ইন্ডিয়ান হাইওয়ে বাস্তবায়ন করছে। মহাজোট সরকারের মন্ত্রীদের কথা শুনলে মনে হয় তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী নয় ভারতের মন্ত্রী।

এপর্যন্ত কোন মন্ত্রী দেশের স্বার্থে টিপাইমুখ বাধের বিরোধীতা করে কোন বক্তব্য প্রদান করেনি। বরং ভারতের পক্ষে সাফাই গাচ্ছে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা জনগনকে ঐক্যবদ্ধ করার পরিবর্তে বিপথের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি আজ কুমিল্লায় আমার দেশ পাঠক মেলা কুমিল্লা শাখা আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের চ্যালেঞ্জ টিপাইমুখ বাঁধ/ এশিয়ান হাইওয়ের প্রভাব; নাগরিক দায়বদ্ধতা শীর্ষক এই সমাবেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।

কুমিল্লা টাউনহল মিলনায়তনের এই সমাবেশে শিক্ষক, চিকিৎসক, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহন করেন। মাহমুদুর রহমান বলেন, জেনারেল মইন জাতির সাথে প্রতারণা করেছেন। তাকে একটি নিউজের জন্য আমারদেশের রিপোর্টার বাসায় ফোন করলে তার অনুপস্থিত থাকার কথা জানায় এবং তারপর বিদেশে কিনা জানতে চাওয়া হলে বাসা থেকে উত্তর দেয়া হয়, বলছিনা তিনি বাসায় নেই, এতো কথা বলেন কেন? তাতেই কি বুঝা যায়না জাতির সাথে প্রতারণা করে জেনারেল মইন এখন আত্মগোপন করে রয়েছে। যুগে যুগে মীরজাফররা জাতিকে বিভ্রান্ত করে টিকে থাকতে পারেনি ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। জেনারেল মইনও ইতিহাসের কলঙ্কিত আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

জনতার উপর সে এতো বেশি নির্যাতন শোষন করেছে যার ফলে সে জনতার রোষানল থেকে বাচার জন্য আত্মগোপন করে আছে। তিনি বলেন, মহাজোট সরকারের ভারততোষণ নীতির বিরুদ্ধে এখন শুধু অডিটরিয়ামে বসে সমাবেশ করলেই চলবেনা এই সমাবেশ করতে হবে রাজপথে। ফারাক্কা বাধ যখন দেয়া হয় তখন শেখ মুজিব ছিলেন ক্ষমতাসীন। তিনি জনগনকে ধোকা দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন দেশের ১৫কোটি জনগনকে ধোকা দিয়ে টিপাইমুখ বাধ নির্মান করতে দেয়া হবেনা।

গড়াই নদীর নিচে আজ ধুধু বালুচর, পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ এর উপর দিয়ে যাতায়াতের সময় মনে হয় এই ব্রীজের কি প্রয়োজন ছিল, কেননা ব্রীজের নিচে পানি নেই। নদী শুকিয়ে রয়েছে। ধুধু বালুর এই চর ফারাক্কা বাধের ফসল। মাহমুদুর রহমান বলেন, আওয়ামীলীগ খুব উচ্চস্বরে সবসময়ই বলতো মহাজোটের আন্দোলনের ফসল ওয়ান ইলেভেন ও মইন-ফখরুদ্দিনের সরকার। তাহলে এটাও খুব পরিস্কার মইন উদ্দিনের সরকারের ফসল আজকের সরকার।

মইন উদ্দিন সরকারের সকল অপকর্মও মহাজোটের ফসল এবং বর্তমান মহাজোট সরকারের অপকর্মও জেনারেল মইন উদ্দিনের ফসল। তিনি বলেন, এশিয়ান হাইওয়ে তথা ইন্ডিয়ান হাইওয়ের নামে বাংলাদেশের ভৌগলিক স্বাধীনতা ছিনতাইয়ের ষড়যন্ত্র চলছে। পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেছেন টিপাইমুখ বাধ না ব্যারেজ হবে তা এখনও তিনি জানেননা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপুমনি বলেছেন, টিপাইমুখ বাধ এর বিষয়ে সকল নথিপত্র ভারত তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এখন তারা সেগুলো পর্যালোচনা করছেন।

তাদের এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্য শুনলে আশ্চর্য হতে হয় তাহলে পানি সম্পদ মন্ত্রীর কাজটা কি? মাহমুদুর রহমান বলেন, তিনি সুধীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের অনেক দায়িত্ব আপনারা কি সন্তানদেরকে একটি পরনির্ভরশীল দেশ উপহার দিতে চান? যদি না চান তাহলে এই সরকারের সকল দেশবিরোধী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। আমার দেশ পাঠকমেলার সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা কি স্বাধীন দেশের পরিচয় নিয়ে থাকতে চাও নাকি পরাধীনতার শৃংখলাবদ্ধ থেকে বেঁচে থাকতে চাও। এই সিদ্ধান্ত এখন তোমাদের। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ মতায় আসার পর আমাদের দারুন জিনিস উপহার দিয়েছে। দিন বদলের শ্লোগান নিয়ে এই সরকার মতায় আসার পর আমাদের দিন বদল করতে না পারলেও ঘন্টা বদল করেছে।

বিচারকদের কাজ ইতিহাস লিখা নয়। কিন্তু দূর্ভাগ্য আমাদের বিচারকের রায়ে দেশের ইতিহাস পরিবর্তন হয়। বিচারক কি বললো সেটা ইতিহাস নয় জনগন কি শুনলো সেটাই ইতিহাস। স্বাধীনতার ঘোষক কে জনগন তা শুনেছিল ৭১এর অগ্নিঝরা মার্চে। আমার বয়স তখন ১৭বছর।

আমি ২৭মার্চ নিজ কানে মেজর জিয়ার কন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষনা শুনেছি। এই ইতিহাস জনগন লালন করে এবং তা জনগনের হৃদয়ে গেছে আছে। শেখ মুজিব যদি স্বাধীনতার ঘোষনা করেন তবে কেন তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করেছিলেন। কেউ স্বাধীনতা ঘোষনার পর আত্মসর্পন করলে পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।