এশিয়ান হাইওয়ের নামে ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার প্রতিবাদে এবং টিপাই বাঁধের বিরুদ্ধে ২২ জুন ২০০৯ সারা দেশে জেলা/ উপজেলায় গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার পক্ষ থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকায় মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ ও শেষে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
মোর্চার সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজএর সভাপতিত্বে মুক্তাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন টিপু বিশ্বাস, সাইফুল হক, মোশরেফা মিশু, এডভোকেট আব্দুস সালাম, জোনায়েদ সাকি, গোলাম মোস্তফা, বদরুল আলম, হামিদুল হক প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সভায় এশিয়ান হাইওয়ের সাথে যুক্ত হওয়ার নামে ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে সার্বভৌমত্ব বিরোধী তৎপরতা থেকে বিরত থাকতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সমাবেশে বলা হয়, বিএনপি শাসনামল (১৯৯১-৯৫) এ এই প্রস্তাব অনুমোদন করে আর বর্তমান মহাজোট সরকার এবার এটা গ্রহণ করলেন। এশিয়ান হাইওয়ের নামে বাস্তবে ভারতের এক অংশ থেকে আর এক অংশে যাওয়ার একটা ব্যবস্থা হচ্ছে।
ভারতের পশ্চিমাঞ্চল থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় ৭ রাজ্যে দুর্গম ও বিপদ সংকুল পাহাড়ী পথে যোগাযোগের ঝুঁকি এড়িয়ে ভারত বাংলাদেশের সমতল ভূমির রাস্তা ব্যবহার করবে। ভারত পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর খনিজ সম্পদ ও কাঁচামাল সংগ্রহ এবং এ অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণের কাজ করবে। বিদ্রোহ দমনও তার জন্য সহজ হবে।
আর বাংলাদেশ!
ঢাকা থেকে টেকনাফ হয়ে রেঙ্গুন এর চেয়ে ঢাকা থেকে তামাবিল হয়ে আসাম-নাগাল্যান্ড-মিজোরাম-রেঙ্গুন এ রুটে ঢাকা থেকে রেঙ্গুন এর দূরত্ব হবে ১৫০০ কিলোমিটার বেশী হবে। আমরা মনে করি এশিয়ান হাইওয়ের নামে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে অর্থনৈতিক লাভ এর চিন্তা কাল্পনিক।
বরং ট্রানজিট করিডোর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকীর মুখে ঠেলে দেবে। ফলে আমরা এশিয়ান হাইওয়ের নামে ভারতকে ট্রানজিট দেয়ার মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
এশিয়ান হাইওয়ের মূল পরিকল্পনা ছিল এশিয়ার দেশসমূহের একদেশের রাজধানীর সাথে আরেক দেশের রাজধানীর সংযোগ। কিন্তু বর্তমান পরিকল্পনায় ভারত ১৯৯২ সালে দিল্লীতে এসকাপের (UN-ESCAP) বৈঠককে প্রভাবিত করে যে দু’টি রুটের প্রস্তাব পাশ করে তা ভারতের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে যাওয়ার করিডোর হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করবে। এটা বাংলাদেশের জনগণ কখনও মেনে নিতে পারে না।
কারণ বাংলাদেশের সাথে সৎ প্রতিবেশী সুলভ আচরণ ভারত করেনা।
বাংলাদেশ দক্ষিণ বেরুবাড়ী ভারতকে ৭৩ সালেই দিয়ে দিলেও ভারত তিন বিঘা করিডোর আজও পর্যন্ত বাংলাদেশকে দেয়নি। ফারাক্কা বাঁধ, গজলডোবার বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার এবং বর্তমানে দহগ্রামে No mans land এ কাঁটাতারের বেড়া দেয়াসহ অসংখ্য বিষয়ে ভারত বাংলাদেশকে পদানত করে রাখতে চায়। বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতে আমদানী-রপ্তানি শুল্ক হারেও সমতা তৈরিতে ভারত উদ্যোগী হয়নি।
নেতৃবৃন্দ সুরমা-কুশিয়ারার উজানে বরাক নদীর টিপাই মুখে ভারত কর্তৃক বাঁধ নির্মাণ ও বাংলাদেশকে মরুভূমি বানানোর ভারতীয় ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং ভারতীয় নদী আগ্রাসন ও আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি লংঘন করে আন্তর্জাতিক নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না জানানোয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করে অবিলম্বে টিপাই বাঁধের বিরুদ্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে এ বিষয়ে মিমাংসার দাবি তুলতে সরকারের প্রতি দাবি জানান।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ দেশপ্রেমিক গণতন্ত্রকামি বাম প্রগতিশীল সকল শক্তিকেঐক্যবদ্ধভাবে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী-আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ।
*************************************************
দা ডেইলি স্টার ২২ মে ২০০৯ পড়ুন
Asian Highway Network
Alternative route bid abandoned
Govt decides to get connected as per original UN-Escap plan
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।