তখনও জানিনা আষাঢ় মাস নিয়ে আলাদা কোনো মাতামাতি হয়। তখনও শুনিনি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বাদলও দিনেরও প্রথমও কদম ফুল কাকে না কাকে দেয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে অসাধারণ গানও লিখেছেন।
আমি শুধু জানি বছরের একটা সময় আমাদের ছোট্ট মফস্বলের আশেপাশের কিছু গাছে এক ধরণের গোল গোল ফুল হয়। যা ফুল হলেও ফুলর মতো না ফুটে ফলের মতো ঝুলে থাকে।
ফুলের নাম কদম।
এই ফুলের গন্ধ তেমন আকর্ষণীয় না, তারপরও ফুলটা নাকের কাছে নিয়ে ধরে রাখতে ভালো লাগে।
ডাল ফুলের ওজন বেশি হওয়ায় এই ফুল হাতে নিয়ে চলাফেরা খুব বেশী কমর্ফোটেবল না। তারপরও এই ফুল হাতে রেখে রেখে চলতে ভালো রাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
কেন?
বোটানির ষ্টুডেন্ট বা উদ্ভিদ গবেষক না হওয়ার দরুণ বহুদিন খুঁজেও তেমন উল্লেখযোগ্য কারন পাইনি।
তবে আমরা নন প্রফেশনাল লাইফ লিড করা বাঙালি মনের ভেতর এমনিতেই কিছু সৌন্দর্য সঞ্চয় করে রাখি।
বিশেষ বিশেষ সময়ে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সেগুলো বেরিয়ে আসে। চাইলেও গোপন করে রাখতে পারিনা।
কদম ফুল, সেরকমই এক ধরণের উপকরন যার জন্যআমাদের ভালোলগার শেষ নেই। সৌন্দর্যময়ী গোলাপ বা সুতীব্র সুবাসদায়িনী রজনীগণ্ধারও ভালোবাসা আছে। কিন্তু সেরকম ক্রেজ নেই।
বহু মানুষকে দেখেছি একটা কদম ফুলের জন্য মহর তন্ন তন্ন করে ফেলেছে। বহু অফিসমুখী এক্সিকিউটিভকে দেখেছি অফিসের ব্যাগ সাইডে রেখে বাড়ীর সামনের কদম পারায় ব্যাস্ত পাড়ার বাচ্চাকাচ্চা ছেলেদের সাথে।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা আসলে কদম ফুলের গাছের মতো। যখন প্রস্ফফুটিত থাকি তীব্রভাবে থাকি।
পেটে ক্ষুধা থাকুক তবু ফল নিয়ে কোনো লাভজনক ভাবনা আমাদের খুবই কম।
আমরা বরং এর চেয়ে সৌন্দর্য নিয়ে মেতে থাকতে বেশি ভলোবাসি।
অনেকের মুখে শুনে শুনে হতাশ হই। নিজেও প্রচুর বলি, এ জাতির আসলে কিছু হবেনা।
মাঝে মাঝে মনে হয় এতো সৌন্দর্য, এতো দৃষ্টিময় প্রশান্তির দেশে কিছু না হলে নাই। এমনিতেই ভালো আছি।
এইরকম নন কমার্শিয়াল, ন্যচারাল সৌন্দর্য্যের ভেতরেইবা বেঁচে থাকার ভাগ্য পৃথিবীতে কয়টা জাতিকে সৃস্টিকর্তা দিয়েছে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।