আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্যবিমোচন সম্ভব নয়

আমার সম্পর্কে বলার মতো কিছু নেই।

ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্যবিমোচন সম্ভব নয়ঃ ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্যবিমোচন যে সম্ভব নয়, তা বহুবার লিখেছি। নোবেল প্রাইজ পেলেও ড. ইউনুসের জোবরা গ্রামের কথিত 'সোফিয়া'র দারিদ্র বিমোচন হয় নি। এখন আর এই খবর গোপন বিষয় নয়। প্রায় সকলেই জানেন।

ড. ইউনুসের নোবেলপ্রাপ্তির বহু পূর্বেই মাসিক সমাজ চেতনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ড. লেনিন আজাদের গবেষণাপত্র ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধগুলো পড়েছি। আমার আবোল তাবোল লেখালেখির বয়স প্রায় ৩০ বছর চলছে। প্রথম প্রথম চিঠিপত্র বিভাগে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরতাম। তখনই কবিতা ছড়া লিখতাম নিয়মিত, ওই সময়ে তা কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। তবে খামারবাড়ি থেকে প্রকাশিত 'কৃষি কথা'য় 'চাষার গান' নামে আমার একটি ছড়া কবিতা ছাপা হয় ১৯৮০ সালে।

স্থানীয় পত্রিকায়ও লিখতাম। ১৯৮৬ সাল থেকে ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রবন্ধ-নিবন্ধসহ নিয়মিত রিপোর্টিং শুরু করি। এর মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ বা দাদন ব্যবসা নিয়ে অসংখ্য রিপোর্টিং করেছি। এবার দেখলাম, বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক ২০০০-এ 'ক্ষুদ্রঋণের বৃহৎ বাণিজ্য' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করা দরকার।

এ কারণেই আমার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে লিখছি। আমি গ্রামের সন্তান, ক্ষুদ্রঋণের কাজ কারবার সচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছি। '৭৪-এর দুর্ভিক্ষের সময় আমার আম্মাকে নানার বাড়ী থেকে দেয়া ৩০ বড়ি স্বর্ণালংকার বিক্রির পরও আমাদের পারিবারিক প্রয়োজনে ঋণ করতে হয়েছিল। এ সম্পর্কে মনে হয় আমার আব্বা-আম্মা ভালো বলতে পারবেন। অবশ্য এখানে একটি কথা বলে রাখা ভালো, আম্মাকে নানার বাড়ী থেকে দেয়া ৩০ বড়ি স্বর্ণালংকার বিক্রি করে আমাদের গ্রামে মানুষকে খাওয়ানো হয়েছে।

সাংবাদিকতা পেশার শুরুতেও ক্ষুদ্রঋণ ম্পর্কেআমার মধ্যে নেতিবাচক ধারণাই সৃষ্টি করেছিল। যে কারণে বলা যায় গত ৩০ বছরে তা ঘৃণায় পরিণত হয়েছে। বাণিজ্যিকীকরণ করতে গিয়ে ক্ষুদ্রঋণের উদ্যোগটি কিছু লোক শত বা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। গরিব মানুষের ক্ষমতায়ন ও ঋণের অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে তাদের ঋণ-বাণিজ্যের গোলকধাঁধায় আজীবন ঋণগ্রস্তই রেখেছে। যে কারণে দারিদ্র্য বিমোচন হয় নি।

দারিদ্র্যবিমোচন না হলেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ক্ষুদ্রঋণের কারবারি প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে দিনে দিনে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো স্ফীত হচ্ছে। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা দারিদ্র্য দূরে থাক, ঋণের জালে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে সমাজ জীবনে। গত ৩০ বছর ধরে সাংবাদিকতা ও রাজনীতি করতে গিয়ে এ অভিজ্ঞতাই আমার হয়েছে।

ফলে মডেল দেশ বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ এখন টেকসই ব্যবসা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারীদের এখন মানুষ বাঁকা চোখে দেখলেও এখনো সমীহই করে। আমার নিজের গ্রামই নয়, দেশের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন ঘুরে দেখা যাচ্ছে, ক্ষুদ্রঋণ মানুষকে 'টাউট বাটপারে পরিণত করছে। এক সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে অন্য সংস্থায় পরিশোধ করে, না হলে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নিয়ে কিস্তি দেয়। ওই ধারের টাকা চাইতে গেলেপালিয়ে বেড়ায়।

এই পক্রিয়ায় ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারী জনগণ সর্বস্বান্তই হয়েছে। ক্ষুদ্রঋণের ওপর পরিচালিত বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ঋণদানকারী সংস্থাগুলো দিনকে দিন স্ফীত হলেও, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা আয়-দারিদ্র্য থেকেই মুক্তি পায়নি। বরং তাদের ঋণগ্রস্ততা ও দারিদ্র্য আরও বেড়েছে। শুধু ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন সম্ভব নয়, দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য বহুমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণ জরুরি। ওই গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, ঋণগ্রহীতাদের বড় অংশেরই আয়-উপার্জন বাড়েনি।

বরং অর্থনৈতিক ও অন্যান্য কর্মকান্ড থেকে তাদের যে আয় হচ্ছে তা দেশের গরিব মানুষের গড় আয়েরও নিচে। ক্ষুদ্রঋণের আর্থ-সামাজিক ইতিবাচক প্রভাব খুব সীমিত। স্বল্প সংখ্যক ঋণগ্রহীতা অবশ্য লাভবান হয়েছেন। তবে বেশির ভাগই কোনও সুফল পাননি। বরং অনেক ঋণগ্রহীতা আছেন, বিভিন্নভাবে যাদের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ঋণগ্রহীতারা ১০ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত ভিত্তি হারে সুদ দেয়। তবে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষেত্রে কার্যকর সুদের হার ও ঋণ গ্রহণের ব্যয় যথাক্রমে ২৭ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ পর্যনত্ম চড়া। ব্র্যাক, আশা ও প্রশিকার ক্ষেত্রে এই হারগুলো আরও বেশি। এগুলো যথাক্রমে ৩৯ থেকে ৪১ শতাংশ ও ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশ। আরও একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারী পরিবারের ক্ষেত্রে যৌতুকের প্রবণতা বাড়ছে।

ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হলেও আসলে তা ঘটেনি। এই ঋণ দিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে। কেউ বলছে ভবিষ্যৎ ভালো হবে, কেউ মনে করছে সামনের দিনগুলো খারাপ হবে। গবেষণার ফল থেকে দেখা যায়, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা সাধারণভাবে এমন সব অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত, যেগুলোর অধিকাংশের তেমন সম্প্রসারণের সুযোগ নেই। ফলে বছরের পর বছর ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণই গ্রহীতাদের ওইসব কাজে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে, যা থেকে তারা সহজে বেরিয়ে আসতে পারে না।

অধিকাংশ ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাই খাদ্য নিরাপত্তায় ভোগে এবং সঠিক চিকিৎসা পায় না। ফলে তারা হাতুড়ে চিকিৎসকদের কাছে যায়। তবে কিছু সংখ্যক ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতার স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি ঘটেছে। তার প্রধান কারণ হলো সরকারি-বেসরকারি জনসচেতনামূলক কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার কারণে। এই ঋণ গ্রহণের পর তাদের জমির মালিকানায়ও তেমন কোনও পরিবর্তন হয়নি।

জীবনযাত্রার মান বিচারে দেখা যায়, এক-তৃতীয়াংশ ঋণগ্রহীতার কিছু উন্নতি হয়েছে। বাকিদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি অথবা অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। অর্থাৎ ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের বড় অংশই ঋণ গ্রহণের পরও আগের মতো সেই প্রান্তিক অবস্থায় রয়ে গেছে। ঋণের কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ঋণগ্রহীতারা নানা ধরনের কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হন। কিস্তি পরিশোধের জন্য তাদের চড়া সুদে মহাজনের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ, অন্য সংস্থা থেকে ঋণ গ্রহণ এবং গৃহস্থালি সামগ্রী বিক্রির মতো কঠিন কাজ করতে হয়।

কেউ কেউ কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতায় শাস্তি ভোগ করছেন, অর্থাৎ তাদের মালপত্র ঋণদাতাদের দ্বারা অধিগ্রহণ করা হয়েছে। মূলত প্রতি কিস্তি পরিশোধের পরই তারা আবার এক সপ্তাহের মাথায় আরেকটি কিস্তি পরিশোধের চাপে থাকে এবং অর্থ জোগাড় না হলে অবর্ণনীয় ভোগান্তির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় থাকেন। অনেকেই নিজেদের বিভিন্ন ধরনের সম্পদ বা সম্পত্তির বিনিময়ে কিস্তির অর্থ নিশ্চিত করেন, যা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও নাজুক করে তোলে। ঋণ পরিশোধের এই কঠোর চাপ এবং কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে যে খড়গ তাদের ওপর আসতে পারে তা ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের ক্ষেত্রে এক শক্ত সহ-জামানত হিসাবে কাজ করে। তবে অনেক ঋণগ্রহীতা আবার বড় ধরনের সমস্যা ছাড়াই কিস্তি পরিশোধ করতে পারেন।

তারা সেটা পারছেন ক্ষুদ্রঋণ ব্যবহার করে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের আয় থেকে, আবার কখনও অন্য উৎসের আয় বা প্রয়োজনীয় খরচ কমিয়ে। তবে সার্বিকভাবে ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে একটি নাজুক অবস্থানে থাকেন এবং তারা অনেকেই এমন সব পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন, যা তাদের ঋণগ্রস্ততা বাড়িয়ে তোলে এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যম নারীর ক্ষমতায়নের যে কথা বলা হচ্ছে তা আসলে ঘটেনি। খুবই স্বল্প সংখ্যক ঋণগ্রহীতা দাবি করছেন যে, বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে তাদের পূর্ণ কর্তৃত্ব আছে। সিংহভাগ ঋণগ্রহীতাই জানিয়েছেন, এক্ষেত্রে তাদের কোনও কর্তৃত্ব নেই।

তারা স্বামী বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ সব কাজ করে থাকেন। খুব কম সংখ্যক গ্রহীতাই পরিবারের কোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরম্নত্ব পান। নারী ঋণগ্রহীতারা এখনও পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন এবং এক্ষেত্রে স্বামীই প্রধান নির্যাতক। ঋণ গ্রহণের পর এই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। আর একটি উদ্বেগজনক বিষয় হলো, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণকারী পরিবারের ক্ষেত্রে যৌতুকের প্রবণতা বেড়েছে।

বোঝা যাচ্ছে, যেহেতু এ সব পরিবার ক্ষুদ্রঋণ সংগ্রহ করতে পারছে, সেহেতু এই পরিবারগুলোর মেয়েদের বিয়ের সময় পাত্রপক্ষ যৌতুকের জন্য বেশি চাপ দিচ্ছে। দারিদ্র্য হ্রাসের একটি হাতিয়ার হিসাবে ক্ষুদ্রঋণ খুবই সীমাবদ্ধ। তার মানে এই নয় যে গরিবদের জন্য ঋণের প্রয়োজন নেই। ক্ষুদ্রঋণের ধারণায় দারিদ্র্যের সংজ্ঞায়নে যেহেতু কেবল আয়-উপার্জনকেই বিবেচনায় আনা হয়েছে, সেহেতু ধরেই নেওয়া হয়েছে যে, সামান্য এই ঋণ গরিব মানুষের আয় বৃদ্ধি করবে, যা তাদের গরিবি ঘোচাবে এবং জীবনযাত্রার মান বাড়াবে। কিন্তু গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের অধিকাংশের আয় বাড়েনি, বরং তাদের অবস্থার অবনতি হয়েছে।

দরিদ্র মানুষের অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের মতো মৌলিক চাহিদাগুলোর পাশাপাশি মানব মর্যাদা ও মানবাধিকারের মতো মানবিক চাহিদাগুলোও রয়েছে। দারিদ্র্য ও দারিদ্র্য বিমোচনকে এই বৃহত্তর মানব উন্নয়নের প্রেক্ষিতেই বিবেচনা করতে হবে। এক্ষেত্রে দারিদ্র্য বিমোচনে বহুমুখী প্রক্রিয়া গ্রহণ জরুরি। তখন অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ দারিদ্র্য হ্রাস প্রক্রিয়ায় একটি উপাদান হতে পারবে। সেক্ষেত্রে ঋণের শর্তগুলো আরও সহজ হতে হবে, কিস্তি পরিশোধ ও সুদের কার্যকর হার সহজ হতে হবে।

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলো ঋণ সরবরাহ ও কিস্তি আদায় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বড় ধরনের ঋণ তহবিল গড়ে তুলতে পারে। যেমন মাত্র পাঁচ হাজার টাকা ঋণ দিয়ে যাত্রা শুরম্ন করে ১০ শতাংশ হারে ভিত্তি সুদ এবং পাঁচ শতাংশ বাধ্যতামূলক প্রাথমিক জামানত ব্যবস্থা থেকে সাপ্তাহিক ঋণ আদায় ও ঋণদান প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এক বছরে বাড়তি ১২ হাজার ৬৪৯ টাকার তহবিল সৃষ্টি হয়। উচ্চতর ভিত্তি সুদের হার ও ঋণগ্রহীতাদের জমাকৃত সাপ্তাহিক সঞ্চয় হিসাবে নিলে তা আরও অনেক বেশি হবে। মূলত এ কারণেই এই ক্ষুদ্রঋণ একটি লাভজনক ও আকর্ষণীয় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে, যা দেশজুড়ে ছোট বড় শত শত ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠায় উৎসাহ জুগিয়েছে। এতে ঋণ তহবিল দ্রম্নত বাড়তে থাকায় সংস্থাগুলোও দিন দিন স্ফীত হচ্ছে।

কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতারা আয়-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাননি, বরং তাদের ঋণগ্রস্ততা ও দারিদ্র্য আরও বেড়েছে। সেখানে জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়া ও আয়ের স্তর বাড়ার আশা বাতুলতা মাত্র। উত্তরবঙ্গে মঙ্গার ওপর কাজ করতে গিয়ে দেখা গেছে, বেশকিছু এনজিও অভাবী মানুষদের ভাগ্য উন্নয়নের নামে কাজ করছে। কিন্তু তাদের কর্মকান্ড কতটা গতরখাটা মানুষের অভাব দূর করবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বেশির ভাগ এনজিওই হতদরিদ্র মানুষগুলোর ভাগ্য উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা মাফিক কৌশল প্রয়োগ না করে ‘ক্ষুদ্রঋণের’ ব্যবসা ফেঁদে বসছে।

কিছু কিছু এনজিও অবশ্য এই ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসায় না গিয়ে দরিদ্র মানুষগুলোর সঙ্গে কথা বলে তাদের অবস্থার উন্নয়নে কোন কৌশল সঠিক তা নির্ধারণ করে তাদের মাধ্যমেই তা বাস্তবায়ন করছে। তবে বেশির ভাগ এনজিওই দরিদ্রদের নিজের পায়ে দাঁড় করানোর পরিবর্তে সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে মঙ্গাকে জিইয়ে রাখছে। মঙ্গার সময় দরিদ্র মানুষদের কাজের ব্যবস্থা না করে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। এতে অভাবী মানুষেরা অলস হয়ে পড়ছে। তাদের কর্মস্পৃহা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.