মুহাম্মদ ইউনূসের সমালোচনা করছেন অনেকেই । ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক, কলামিস্ট এই শ্রেণীর লোকজনই বেশী যাদের মাঠ পর্যায়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। বাম ডান দুই ধারা লোকই আছেন। আওয়ামী লীগের লোকজনও তাকে পছন্দ করছে না-রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দিয়েই তিনি এই বিপদে পড়েছেন।
দারিদ্র বিমোচন ও নারী ক্ষমতায়ন এই যে শ্লোগান নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক কাজ করে সেগুলো আমার মনে হয় আর তেমনভাবে কার্যকর নেই গ্রামীণ ব্যাংকে বর্তমানে।
তারপরও অনেক সমালোচনার মধ্যেও অনেকগুলো দিক আমার ইতিবাচক মনে হয়।
মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তের ঋণ সুবিধা রয়েছে। তারা গাড়ির জন্য ঋণ, বাড়ির জন্য ঋণ, কম্পিউটারের জন্য ঋণ নিয়ে থাকেন। কিন্তু গরিব লোকদের জন্য কোন ঋণ সুবিধা ছিলো না। কারন তারা গরিবÑতাদের জামানতের সম্পদ নেই।
গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাক ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান এই ঋণ সুবিধা তাদের কাছে নিয়ে গিয়েছে। দ্ররিদ্র জনগোষ্ঠী কি এর আগে ঋণ গ্রহণ করতো না? করতো এবং তা গ্রামের মহাজনদের কাছ থেকে। আর গ্রামের মহাজনরা কী পরিমাণ চড়া সুদে ঋণ দেয় তার অসংখ্য বর্ণণা আছে বাংলা সাহিত্যের গল্পে-উপন্যাসে। এখনও গরীবলোকদের এই সকল প্রতিষ্ঠানের বাইরেও ঋণ গ্রহণ করতে হয়। বিভন্ন সমিতি, ব্যক্তি থেকে শতকারা ৩ টাকা ৫ টাকা ১০ টাকা মাসিক সুদে তারা ঋণ করে থাকে।
গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ২০% যা তাদের মতে ক্ষুদ্র ঋণদানকারীদের মধ্যে সর্বনিম্ন।
প্রত্রিকায় প্রায়ই সময় ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের বাড়ি-ঘর ক্রোক করা নিয়ে সমালোচনা হয়। আমার মনে হয় ঋণের নগদ টাকা যখন হাতে আসে তখন অনেকেই জীবনের তাৎক্ষনিক প্রয়োজন আর সাধের কাছে হার মেনে বেহিসেবি খরচ করে ফেলেনÑসেটা গরিব-বড়লোক উভয়ের ক্ষেত্রেই্। এরপর গরীবরা হয়ে পড়েন ঋণগ্রস্ত আর বড়লোকরা ঋণখেলাপি। কিন্তু গরীবের ঋণের টাকা আদায় করা সহজ কারণ তারা গরিব, তাদের বাড়ি-ঘর ক্রোক করা হয়।
গ্রামীণ ব্যাংকের মোট সম্পদের পরিমাণ ৬০০০ কোটি টাকা(২০০৫)। আমি যতটুকু জানি এই টাকার মালিক গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা। অনেকেই মনে করেন ড. মহাম্মদ ইউনূস এর মালিক। আমাদের দেশের গরীবদের টাকা সারা পৃথিবীর ব্যাংক, কোম্পানী, মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানী নিয়ে নিচ্ছে সেখানে গ্রামীণ ব্যাংকই বা কিছু নিল।
গ্রামীণ ব্যাংকের কারণে এর বেশ কিছু সহযোগী সংগঠনের আবির্ভাব ঘটেছে।
আনু মুহাম্মদ সাপ্তাহিক ২০০০ এর বর্তমান সংখ্যায় এর একটা তালিকা দিয়েছেন। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে উক্ত ব্যাংক ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশ কিছু সংখ্যক লোক চাকরী-বাকরী করে খাচ্ছে।
অনেকেই গ্রামীণ ব্যাংকের কাছ থেকে গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আচরণ প্রত্যাশা করে থাকে। খুব কম সুদে ঋণ দেয়া, ঋণগ্রস্তদের বাড়ি-ঘর ক্রোক না করে ছেড়ে দেয়া ইত্যাদি। কিন্তু ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলেকে সুদের টাকা থেকে তাদের কর্মচারী-কর্মকতাদের বেতন দেয় ইনক্রিমেন্ট দেয় তাই তাদের সুদ কিংবা আসল কোনটাই ছাড়া সম্ভব নয়।
বরং যারা ঋণ গ্রহণ করছেন তাদের আরো সচেতন হতে হবে যাতে অপ্রয়োজনে ঋণ না নেয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।