আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুষ্প্রাপ্য বইয়ের জাদুঘর

...

বাংলাদেশের অন্যতম সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার নিঃসন্দেহে বাংলা একাডেমীর। ১৯৫৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাংলা একাডেমীর জন্য একটি গ্রন্থাগার নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মূল্যবান গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা সংগ্রহের মাধ্যমে গ্রন্থাগারটি ক্রমেই সমৃদ্ধ হতে থাকে। এই গ্রন্থাগারের জন্য অনেক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিসেবী স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বহু মূল্যবান গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা দান করেন। সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে।

১৯৭২ সালে বাংলা একাডেমীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাঙলা উন্নয়ন বোর্ড সমন্বিত হওয়ার পর বহু প্রাচীন, দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা এবং পুঁথিপত্রসমৃদ্ধ গ্রন্থাগারটি বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগারের সঙ্গে যুক্ত হয়। উন্নয়ন বোর্ডের গ্রন্থাগারের বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা এবং সংগৃহীত হাতে লেখা প্রাচীন দুষ্প্রাপ্য পুঁথি একাডেমী গ্রন্থাগার ও শহীদুল্লাহ গবেষণা কক্ষে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ১৯৬৫ সালে মুক্তাগাছা জমিদারের ১১ হাজার দুষ্প্রাপ্য মূল্যবান গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকা উন্নয়ন বোর্ড সংগ্রহ করে বাংলা একাডেমীর গ্রন্থাগারকে সমৃদ্ধ করে। এ ছাড়াও বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগার সমৃদ্ধ হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এনসাইক্লোপেডিয়ার সর্বশেষ সংস্করণগুলোর সংগ্রহে। রিচার্ড এ বার্টন রচিত ১৮৯৭ সালে প্রকাশিত অ্যাবারিয়ান নাইটস, রেনেল বেঙ্গল অ্যাটলাস ১৭৮৩, বেঙ্গল গর্ভনমেন্ট গেজেট (ইংরেজি-বাংলা) ১৮৫২, লন্ডন ম্যাগাজিন ১৮৫১ সাল থেকে সংগৃহীত বাংলা পঞ্জিকা ইত্যাদিও বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগারের উল্লেখযোগ্য সংগ্রহ।

বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগার বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীন মধ্য ও আধুনিক যুগের সাহিত্যিকদের বিভিন্ন গ্রন্থের বিপুল সম্ভারে সমৃদ্ধ। উনিশ শতকের শেষার্ধে ও বিশ শতকের প্রথমার্ধের বিশিষ্ট সাহিত্যিক মুন্সী মেহেরুল্লাহ, সৈয়দ ইসমাইল হোসেন শিরাজী, মীর মশাররফ হোসেন, মাওলানা আকরম খাঁ, কবি শাহাদাৎ হোসেন, কবি কাজী নজরুল ইসলাম, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াৎ, শেখ ফজলল করিম, মুন্সী রেয়াজউদ্দিন আহমদ প্রমুখের গ্রন্থ বাংলা একাডেমীর গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। এসব অমূল্য সংগ্রহ গবেষকদের কাজে বিশেষভাবে সহায়ক বলে বিবেচিত। জ্ঞানতাপস ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর নামে প্রতিষ্ঠিত বাংলা একাডেমীর ‘শহীদুল্লাহ গবেষণা কক্ষ’ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যকে ধারণ করে আছে। শহীদুল্লাহ কক্ষে সংরক্ষিত রয়েছে বিপুল পরিমাণ হাতে লেখা প্রাচীন পুঁথি ও তাঁর ব্যবহার করা বিভিন্ন রকমারি জিনিস।

এ ছাড়া শহীদুল্লাহ গবেষণা কক্ষ ও বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগারে যেসব পুরনো ও দুষ্প্রাপ্য পত্রপত্রিকা রয়েছে সেগুলো হলো সওগাত, মাহে নও, মাসিক মোহাম্মদী, আল এসলাম, বুলবুল, নওরোজ, মোসলেম ভারত, বঙ্গীয় মুসলমান পত্রিকা, মোয়াজ্জীন, পরিচারিকা, প্রতিভা, সখিনা, বঙ্গনুর লাঙ্গল, সোপান, পূবালী, রংপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা, ক্যালকাটা, রিভিউ ও এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নাল। বর্তমানে বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগারে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার গ্রন্থ ও সমপরিমাণ পত্রপত্রিকা রয়েছে। সেই সঙ্গে সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত দেশি-বিদেশি গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার নিয়মিত সংগ্রহ বাংলা একাডেমী গ্রন্থাগারকে সমসাময়িক প্রকাশনা জগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেখেছে। এখানে প্রকাশিত ফিচার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.