আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোনো বিভেদ দেখেন না মুশফিক

 ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে গ্রেডিং পদ্ধতি এলে জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা খেলবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সে অবস্থান থেকে সরে এসেছেন আপনারা?
প্রশ্নটা কেড়ে নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন মুশফিকুর রহিম, ‘তার আগে বলুন, আপনারা কোত্থেকে এটা শুনেছেন বা কোথাও থেকে এমন কোনো স্টেটমেন্ট কি পেয়েছেন যে জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা বলেছে লিগ খেলবে না? এটা আমার একটা প্রশ্ন। যদি উত্তর দিতেন...। ’
কাল সকালে হঠাৎ করেই বিসিবিতে একসঙ্গে দেখা গেল মুশফিক, সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালকে। প্রত্যেকেই বলেছেন, ব্যক্তিগত কাজে এসেছেন।

আবার সবাই একসঙ্গে কথা বলেছেন নির্বাচকদের সঙ্গেও। তাঁদের আলোচনায় প্রিমিয়ার লিগে খেলোয়াড়দের গ্রেডিং পদ্ধতিটাই মুখ্য ছিল বলে জানা গেছে। যদিও মুশফিক বলেছেন, ‘এ রকম মিটিং সব সময়ই হয়। সামনে সিরিজ আছে, গত সিরিজে কী করলাম, এসব নিয়ে কথা হয়েছে। ’ প্রিমিয়ার লিগ প্রসঙ্গে শুরু করলেন ওই পাল্টা প্রশ্ন দিয়েই।


নতুন নিয়মের প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে জাতীয় দল এবং জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটা বিভেদ দেখা যাচ্ছিল। কাল বিসিবি অফিসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুশফিক পুরো ব্যাপারটাকে বললেন ভুল বোঝাবুঝি। মুছে দিতে চাইলেন বিভেদ রেখা, ‘আমরা এটা সবার জন্যই করতে চেয়েছিলাম। কারণ তামিম, আমি বা সাকিব বলেন আমরা কিন্তু গ্রেডিং পদ্ধতিতে যা আসবে ক্লাবের কাছ থেকে তার চেয়ে বেশিও পেতে পারি। কিন্তু এই পদ্ধতি হলে যারা ১৫-২০ লাখ টাকা পেত তারা ৫ বা ১০ লাখ পাবে।

তাদের কথা চিন্তা করেই এটা করেছিলাম। কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক আমাদের বড় ভাইরা বলেছেন, আমরা আমাদের স্বার্থের জন্য করেছি। আসলে এ রকম কিছুই না। ’ দিয়েছেন জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড়দের বাদ দিয়ে আলোচনা করার ব্যাখ্যাও, ‘খেলোয়াড়দের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও জিম্বাবুয়েতে আমরাও এ ব্যাপারে সচেতন ছিলাম। দেশে ফিরে অল্প সময়ের মধ্যে সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে বসা সম্ভব ছিল না।

তাই জিম্বাবুয়েতে যারা ছিলাম এবং আশপাশে যারা ছিল জাতীয় দলের সে রকম খেলোয়াড়দের কাছে জানতে চাই, তারা এ ব্যাপারে কী মনে করে। পদ্ধতিটা আমাদের জন্য ভালো হবে কিনা। ’ মুশফিক বলেছেন, এসব নিয়ে খেলোয়াড়দের সংগঠন কোয়াবের সঙ্গে আলোচনা চলছে তাদের। ভবিষ্যতে যা করার কোয়াবের মাধ্যমেই করবেন। সঙ্গে একটা অনুরোধও করেছেন সব ক্রিকেটারকে, ‘জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড়েরা নিশ্চয়ই আমাদের কথা বুঝবেন।

তাদের জন্যই আমরা সবকিছু করতে চাচ্ছিলাম। আমরা খেলোয়াড়েরা সব এক। ’
জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বাকিদের বিভেদ রেখা তাহলে কীভাবে এল? পরোক্ষভাবে দায়টা যেন সংবাদমাধ্যমের ওপরই চাপালেন মুশফিক, ‘কারও সঙ্গে আলোচনার সময়টুকুও আমাদের দেওয়া হয়নি। আমরা কোয়াব ও বোর্ডের সঙ্গে কথা বলার আগেই অনেক কিছু পত্রিকায় দেখলাম। এমনকি সব দায়িত্ব নাকি আমি নিয়েছি এবং এটার সবকিছু নাকি আমি বলেছি! এসব ভুল।

একটা জিনিস পরিষ্কার করতে চাই, জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা বাইরের খেলোয়াড়দের চেয়ে আলাদা নয়। জাতীয় দল আমার বাবার দল না যে আমি এখানে সারা বছর খেলব। ’
প্রিমিয়ার লিগের গ্রেডিং পদ্ধতি নিয়ে শঙ্কাটা নতুন। নইলে বিপিএলের পাওনা টাকা পাওয়ার দুশ্চিন্তাও তো এখনো কাটেনি ক্রিকেটারদের! বিসিবি এখনো পর্যন্ত ক্রিকেটারদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে পারেনি। তার পরও মুশফিক তাকিয়ে আছেন বোর্ড সভাপতির দিকে, ‘এখনো আমাদের জানানো হয়নি প্রিমিয়ার লিগের কোন গ্রেডে কত টাকা দেওয়া হবে।

বিপিএলের টাকা আদৌ পাব কিনা সেটারও নিশ্চয়তা নেই। এখন পর্যন্ত আমি ২৫ শতাংশ টাকা পেয়েছি। গত বছরের টাকাও অনেকে পায়নি। তবে সভাপতি বলেছেন টাকা দেবেন। আমাদেরও বিশ্বাস আছে দেবেন।

’ টাকা পাবেন কী, দ্বিতীয় বিপিএলে যে ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেছেন, সেটির মালিককেই নাকি খুঁজে পাচ্ছেন না মুশফিক, ‘সিলেট রয়্যালসের কোনো মালিকই খুঁজে পাচ্ছি না যে বলব টাকাটা কবে দেবেন। এ রকম চলতে থাকলে খেলা ছেড়ে অন্য কোনো লাইন খুঁজতে হবে। ’
বিপিএল যখন ক্রমেই ‘বকেয়া প্রিমিয়ার লিগ’ হয়ে যাচ্ছে, তখন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগকেই দেশের ক্রিকেটারদের আয়ের প্রধানতম উৎস মানছেন মুশফিক। এর মধ্যে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসের বিরুদ্ধে ওঠা ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ বিপিএলকেই করে তুলেছে বিতর্কিত। আকসুর তদন্তাধীন বলে প্রসঙ্গটা এড়িয়ে গেলেন মুশফিক।

তবে আইপিএল-বিপিএল ক্রিকেটকে যেভাবে কলঙ্কিত করে চলেছে, তাতে ক্রিকেটার হিসেবে তিনি লজ্জাবোধ করছেন, ‘এ রকম ভদ্র একটা খেলায় এসব ভুল অবশ্যই হওয়া উচিত না। ক্রিকেটার হিসেবে এতে খারাপ তো লাগেই। আমাদের সবারই আরও সচেতন থাকা উচিত। ’
কথাগুলো জাতীয় দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমই বলছেন বলে মনে হচ্ছিল। জিম্বাবুয়ে সফরের মাঝপথে আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও পরে তো বলেছিলেন, সিদ্ধান্তটা আবেগাক্রান্ত মনের ভুল।

কিন্তু কাল আবার বললেন, ‘বোর্ড নতুন করে দায়িত্ব দিলে চিন্তা করব কী করা যায়। তবে এই মুহূর্তে আমি পদত্যাগ করেই খুশি। ’।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.