"নব্য রাজাকার গোষ্ঠির প্রবেশ নিষেধ"
ভার্সিটি বন্ধ। বান্দরবানে আমার এক ফ্রেন্ডের বাসা। একি ভার্সিটিতে পড়া হয় আরকি। বন্ধে ঢাকার ফ্রেন্ডরা বান্দরবানে গিয়ে উঠল ওর বাসায়। আমার বাড়ী চট্টগ্রামে হওয়াতে সে ফোন করে বলল, "ওরা তো আসল।
তুই ও চলে আয়। "
যদিও বান্দরবানে আগে যাইনি কখনো। যাব কি যাব না কনফিশনে পরে গেলাম। তেমন কোন প্রস্তুতি ছাড়াই উঠে পড়লাম বাসে।
ফ্রেন্ডরা আমাকে দেখে বলে,
-কিরে তোর ব্যাগ কই?
-না মানে....ব্যাগতো আনি নাই।
-এটা কোন কাজ করলি? এখন তো আমরা ঝিলে গোসল করতে যাব, তুই কি করবি?
-কেন আমিও যাব...
তারা বলল "ও"
আমার বন্ধুটি একটা লুঙ্গি দিয়ে বলল, " নে এটা পড়ে নে" কিন্তু আমি যে লুঙ্গি পড়তে পারি না। মানে গিট টিকথাকে না।
"আরে, তোরে এখানে দেখবে টা কে?"
আমার ভয় তো অন্য জায়গাতে, ওরা ক্যামকর্ডার নিয়ে ঘুরা ফেরা করছে
আর কিছু একটা হয়ে গেলে সেটা যে ক্যামরা বন্দি হবে না, সেটার কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছিলাম না। তার উপর আছে ফেইসবুক ভয়।
কি আর করব, কোন উপায় নাই।
লুঙ্গি পড়ে তাদের পিছনে হাঁটা ধরলাম।
বন্ধুটি বলল "লুঙ্গি তো পড়লি, এখন উপরে তোল"
মানে ?
নইলে হাঁটবি কিভাবে,পানির মধ্যে?
ও,তাইতো...সে দেখিয়ে দিল,এই ভাবে পেছনে পেছিয়ে নে,
"ও"
যেই না লুঙ্গী পেছনে পেছিয়ে পড়লাম আর সাথে সাথে ক্যামরা বন্দি হলাম
তারা বলতে লাগল, ওয়াও...দারুন একটা ফেইসবুক ছবি!
যাহোক ভালোই মজা হলো ঝিলে, চারিদিকে পাহাড়। পাহাড় থেকে পানি নেমে এসে ঝিলে জমা হয়। পানি খুব ঠান্ডা আর স্বচ্ছ।
দুপুরের আগে ঝিলের পর্ব শেষ হল।
দুপুরের খাবার খেতে বসলাম, বন্ধু বলল একটা মেনুতে নতুন আইটেম আছে।
আমরা বললাম, কি?
"কাঁকড়া"
আমি প্রথমে মনে করেছিলাম ফাইজলেমী করছে সে।
পরে দেখলাম না, এক বাটি ভর্তি "কাঁকড়া"।
সে বলল হেভী টেস্টী , আমার খুব ফেবারিট, চিংড়ির মত স্বাদ।
রোমে গেলে মানুষ রোমান হয়
আর আমি বান্দরবানে গিয়ে হলাম বন্য।
আমি বললাম আমাকে দে,খাব।
কিছুক্ষনের মধ্যে আমি কাঁকড়ার ট্যাং চাপাতে লাগলাম
বন্ধু বলল, ট্যাং খেতে পারবি না, বডি খা।
হুম।
বডির উপরটা কিছুটা শক্ত কিন্তু ভিতরে চিংড়ির মত। সে ঠিকই বলেছে স্বাদ চিংড়ির মত।
ঢাকার বন্ধুরা খেতে চাচ্ছিল না'' আমি বললাম নে খা,খুব টেস্টি''
তুই আগে কখনো খেয়েছিস নাকি?
কেন দেখে তাই মনে হয়?
হুম। সেইরকমই তো মনে হচ্ছে...
যেভাবে কাকঁড়ার ট্যাং চাপাতে লাগলাম,আমি নিজেই অবাক হালম। আগে কখনো খাইনি শুধু মাত্র নতুন অভিজ্ঞতার জন্য খাওয়া....
সেদিন বান্দরবান স্বর্ন মন্দিরে যাব বলে ঠিক করল সবাই। আর আমার মোবাইল বেজে উঠল,বড় ভাইয়ের ফোন। আমি ভয় পেয়ে গেলাম,নিশ্চয় কোন জরুরী কাজ।
যেখানে বাঘের ভয়,সেখানে রাত হয়...অতঃপর যা ধারনা করেছিলাম সেটাই। অতি গুরুত্বপূর্ন কাজের কারনে বান্দরবন ট্যুর বাদ দিয়ে বাসায় যেতে হবে
ঐ দিন রাতে ছিলাম বান্দরবানে,পরের দিন সকালে আমি রওনা দিলাম চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে আর আমার বন্ধুরা পাহাড় ট্রেকিং জন্য চিম্বুকের দিকে
বাসায় এসে মাকে বললাম নতুন একটা জিনিসের স্বাদ নিলাম...কাঁকড়া খেয়েছি!!!
মা আমার দিকে অনেকক্ষন তাকিয়ে থাকল......।
"কাঁকড়া তো ধর্মের দৃষ্টিতে হারাম, তবে আগে সবাই খেত আর এখন না খেতে খেতে এর উপর ঘৃণা চলে এসেছে "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।