শাহবাগের উত্তাল জন সমুদ্রে শুধুই স্লোগান। হঠাৎ স্লেগানের জোর কমে আসলে কেউ একজন বলে উঠছে ‘জয় বাংলা’। ব্যাস, আবার চতুরদিক প্রকম্পিত করে প্রজন্মের যোদ্ধার আকাশ বাতাস কাপিয়ে দাবির স্লোগান দিচ্ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ, ছাত্রী থেকে গৃহিণী সবাই গলা ছেড়ে মিলিয়ে যাচ্ছে এই স্লোগান জয় বাংলা। একই সাথে সারাদেশের সব শহীদ মিনার এখন শত শাহবাগ হয়ে স্লোগান তুলছে ‘জয় বাংলা’।
গত মঙ্গলবার থেকে লাখো তারুণ্যের বাঁধভাঙ্গা আওয়াজ জয় বাংলা। ৭১ এর মতো আজও শাহবাগের প্রধান স্লোগান জয় বাংলা। সাথে বজ্রকন্ঠে উচ্চারিত হচ্ছে তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা সহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রকম্পিত হওয়া সকল স্লোগান। জয় বাংলা স্লোগানটি ছিল মুক্তিযোদ্ধা দামাল ছেলেদের রণধ্বনি। আজ আবার নতুন প্রজন্মের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের কাছে একই শক্তি নিয়ে এসেছে ‘জয় বাংলা’।
ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণী, দল সব ভুলে আজ সব বাঙ্গালী এক কাতারে দাড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছে জয় বাংলা।
এ স্লোগানটি বাঙালির যুদ্ধ জয়ের শক্তিশালী স্লোগান, মুক্তিযুদ্ধের নিশানা। এই স্লোগানই বাঙ্গালী জাতিকে পৃথক সত্ত্বা দিয়েছে। পরাস্ত করেছে 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' ধ্বনির রাজাকারদের স্লোগানকে। উদ্দপ্ত করেছে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধকে।
এই স্লোগান দিয়েই ১৯৭১ সালে বাঙালি যুদ্ধে নেমেছে, রাজাকার আলবদরসহ পাকিস্থানের সামরিক বাহিনীকে পরাস্ত করেছে। এই স্লোগানই একসময় পাকিস্তানের দালাল এদেশের রাজাকার-আলবদর-আলশামস বাহিনীর বুকে আতঙ্কের স্লোগানে পরিণত হয়েছিল। অথচ কালের বিবর্তে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রতীকগুলোকে হারাতে বসেছিলাম আমরা।
নতুন প্রজন্মের যেদ্ধারা দেশকে রাজাকারমুক্ত, যুদ্ধাপরাধীমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ লড়াই শুরু করেছে। লড়াইয়ের এ ঘোষণা আগুনের অক্ষরে লেখা :'বুকের ভেতর জ্বলছে আগুন, সে আগুন ছড়িয়ে দাও।
' সে আগুন ছড়িয়ে গেছে সবখানে। এ হচ্ছে গত গত মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে শাহবাগের গণজাগরণ চত্বরের চিত্র। দিন যতোই গড়াচ্ছে, শাহবাগের গণজাগরণ চত্বরে গণজমায়েতও ততোই বাড়ছে। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী মঞ্চের পাশে এসে দাঁড়িয়ে বা দল বেঁধে গোল হয়ে বসে স্লোগান দিচ্ছে। তাদের মুখে শুধুই স্লোগান- ‘সারা বাংলা ঘেরাও করো, জামায়াত-শিবির খতম করো’, ‘জামায়াত-শিবির-রাজাকার, এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’, ‘জয় বাংলা, তোমার বাংলা, আমার বাংলা’, জামায়াত-শিবির, তুই রাজাকার’, ‘শাহবাগের মোহনা, তোমার আমার ঠিকানা, নিজামি-সাঈদী ভাই ভাই, এক দড়িতে ফাঁসি চাই।
’ রাজাকারের বর্ণমালা নামে স্লোগানটি হলো, ক-তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার, ক-তে কামরুজ্জামাণ, তুই রাজাকার তুই রাজাকার, ক-তে কাঁটাবন মার্কেট, তুই রাজাকার তুই রাজাকার, গ-তে গোলাম আযম, তুই রাজাকার তুই রাজাকার, ই-তে ইবনে সিনা, তুই রাজাকার তুই রাজাকার...। তবে সব স্লোগানকে প্রাণ দিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ সঞ্চারী স্লোগান ‘জয় বাংলা’।
##
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।