গভীর কিছু শেখার আছে ....
গিটারিস্ট হিসেবে মুসাফির ব্যান্ডে কাজ শুরু করলেও ইতিমধ্যে কম্পোজার হিসেবে নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করে চলেছেন নমন। সম্প্রতি রিলিজ পাওয়া সম্পূর্ণ ভিন্নধারার দুটি অ্যালবাম উৎসর্গ ও ধুম তা না’র শ্রোতাপ্রিয়তা এটাই প্রমাণ করে, সব ধরনের গানের প্রতিই শ্রোতাদের আগ্রহ রয়েছে। পরবর্তী অ্যালবামে নমন কাজ করছেন বাউল সম্রাট লালনের জনপ্রিয় ১১টি গান নিয়ে। সম্প্রতি যায়যায়দিন চে কাফেতে কথা হলো মিউজিশিয়ান নমনের সঙ্গে। ব্লগারদের সঙ্গে শেয়ার করলাম-
* পড়াশোনা করেছেন কমপিউটার সায়েন্সে, মিউজিকের প্রতি আকৃষ্ট হলেন কেন?
মিউজিকের প্রতি আগ্রহ আমার ছোট থেকেই।
পরিবারের সবাই জড়িত ছিলেন মিউজিকের সঙ্গে। বাবা ও চাচা গিটার বাজাতেন। তাদের হাত ধরে ছোট থেকেই গিটারের কর্ড ধরে টুংটাং করতাম। তবে সুরের প্রতি আকৃষ্ট হই বেনসন অ্যান্ড হেজেসের মিউজিকাল কম্পিটিশন দেখে। আর কমপিউটার সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন করার পেছনেও পরিবারের ইচ্ছাই ছিল মূল।
এ জন্য মিউজিক ছেড়ে পুরোদস্তুর কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে যাবো এমন কোনো কথা নেই। কারণ আমার দৃঢ় ধারণা ছিল, কমপিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যে অবদান বা কাজ আমি করতে পারবো, মিউজিকের পেছনে সময় দিয়ে তার চেয়ে ভালো কাজ করা সম্ভব।
* ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হলেন কিভাবে?
আমি বড় হয়েছি খুলনায়। খুলনার সেন্ট জোসেফ স্কুল থেকে মিউজিক ও খুলনা সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর গ্র্যাজুয়েশন করার জন্য ঢাকায় চলে আসি। এখানে এসেই পরিচয় হয় ওয়ারফেজের মিজানের সঙ্গে।
মিজান তখন সবে ওয়ারফেজ থেকে বেরিয়ে এসে মুসাফির ব্যান্ড গ্রুপটি গঠন করেছে। মুসাফির ব্যান্ডে আমি গিটারিস্ট হিসেবে জয়েন করি। মুসাফির থেকে বের হওয়া আল্লা রাখা অ্যালবামে কাজ করি। মুসাফিরের পর মেটালমেজ ব্যান্ডে যোগ দিই। এখানেও খুব বেশি সময় ছিলাম না।
কারণ আমি চাচ্ছিলাম নিজস্ব কিছু প্রেজেন্ট করতে।
* অ্যালবামের কাজ কিভাবে শুরু করেন?
ব্যান্ডে কাজ করার ফাকে ফাকে বিভিন্ন স্টুডিওতে কাজ করি। এতে করে আমার বেশ ভালো এক্সপেরিয়েন্স হয়। গানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জি সিরিজের খালিদ ভাই আমাকে তাগাদা দিলেন এককভাবে কাজ করার জন্য। জি সিরিজ থেকে প্রার্থনা ও আধার অ্যালবামে কম্পোজার হিসেবে কাজ করি।
অবশ্য এর আগেই আর বি সিরিজ থেকে বের হয়েছে আমার কম্পোজিশনে করা প্রবর্তন অ্যালবামটি। তবে ভিন্নধারার কাজ শুরু হয় সম্প্রতি রিলিজ পাওয়া উৎসর্গ ও ধুম তা না অ্যালবাম দুটি বাজারে আসার পর থেকে। স¤পূর্ণ ভিন্ন ক্যাটেগরির এ অ্যালবাম দুটি ইতিমধ্যেই শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে।
* পরবর্তী কি কাজ করছেন?
ভিন্নধারার কাজ করতে আমার বরাবরই ভালো লাগে। আর তা ধরে রাখতেই পরে আমি বাউল সম্রাট লালনের ১১টি গান নিয়ে নয় দরজা নামে একটি অ্যালবামের কাজ করছি।
অ্যালবামের সব গানই গেয়েছেন বিমল দাস বাউল।
* অ্যালবামে লালনের কোন গানগুলো রয়েছে?
এ অ্যালবামে থাকবে লালনের খাচার ভেতর অচিন পাখি, ইতরপনা, দাসের পানে, সহজ মানুষ, ধন্য ধন্য, জাত গেল কানাই যে, গোকূলে, গেয়ে গান, গৌরবের প্রেম ও রসের রসিক। রিয়াল এশিয়ান ফিউশনের ছাচ পাবেন শ্রোতারা এ অ্যালবামটিতে।
* নতুন যেসব মিউজিশিয়ান আত্মপ্রকাশ করছেন তাদের সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?
নতুন মিউজিশিয়ান প্রথমেই যে ভুলটি করেন তা হলো তারা টাইপ ক্যাটেগরি নির্ধারণ করে সে ধারাতেই গাইতে শুরু করেন। অর্থ উপার্জনের শটকাট রাস্তা হিসেবে তারা মূলত এটি করেন।
অথচ নিজস্বতা আগে সৃষ্টি করা উচিত।
* আর ব্যান্ড গ্রুপে যারা আত্মপ্রকাশ করছেন তাদের অবস্থা কি?
ব্যান্ডের ক্ষেত্রে প্রথমেই আমি বলতে চাই, ব্যান্ড গ্রুপ গঠন নন-প্রফেশনাল হবে না। ব্যান্ডকে অবশ্যই প্রফেশন হিসেবে নিতে হবে। শখের বশে অনেকেই ব্যান্ড গঠন করেন। ধুমধাম কয়েকটি অ্যালবাম বের করে তারপর দেখা যায় সেই গ্রুপের হদিসই আর পাওয়া যাচ্ছে না।
এটাকে স্রেফ মিউজিকের সঙ্গে প্রতারণ বলা চলে। প্রেম করে ধোকা দেয়া আর মিউজিকের সঙ্গে ধোকা দেয়া একই কথা। মিউজিকের প্রতি অবশ্যই কমিটমেন্ট থাকলেই কেবল ব্যান্ড গঠন করা উচিত।
* বর্তমানে অনেক শিল্পীই কোনো কম্পানি বা চ্যানেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন। এতে করে তারা অন্যত্র কাজ করতে পারছেন না।
এ সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?
প্রথম কথা হলো, একজন শিল্পীকে তার নিজের মতো করেই কাজ করতে দেয়া উচিত। শিল্পীকে কোনো কম্পানি বা চ্যানেলের আওতাভুক্ত করে ফেলা অর্থই হচ্ছে সেই শিল্পীর গন্ডিকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা। এতে করে শিল্পীর সৃজনশীলতা অনেক সময়ই বাধাগ্রস্ত হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।