ক্লাস থেকে বেরুতেই জুঁই দৌড়ে এল। চোখটা ভেজা ওর। বুঝতে পারলাম না ওকে দেখে কি হয়েছে। চলে এলাম খানিকটা হেটে গাছতলায়।
বাবু ওকে আবার বকেছে ফোনে।
খুব বাজে ধরনের গালি। প্রতি দশবারদিনে বাবু ওকে ফোন করে বকে। মাঝে মাঝে আমার কাছে এসে ও বাবুকে বকে, মাঝে মাঝে কান্না।
আমি ওর কান্নায় ওতটা গলি না। দোষটা ওরই ছিল।
রাজু আর ওর রিলেশনটা ৩ বছরের। কেউ রাজী হবে না জেনেই ওরা রিলেশনে জড়িয়েছিল। হিন্দুমুসলমান কেইস। জুঁইদের বাসায় বাবুর যাওয়া আসা ছিল, ঘটনা জানাজানি হবার পর অনেক ঝামেলা হলেও পরে দুই ফ্যামিলি ব্যাপারটা মেনে নিয়েছিল। সেটা একটা অবাক করা ব্যাপার।
আমরা সবাই এটা নিয়ে বেশ অবাক এবং খুশি ছিলাম। বাবু পরে আর্মির অফিসার রেংকে ঢুকতে ট্রেনিং এ চলে গেল। এর ছসাতমাস পরেই জুঁই প্রনবের প্রেমে পড়েছে। প্রনবের কথা জুঁই বাবুকে বলত প্রায় যে ছেলেটা শয়তান, বদমাস ধরনের, ওর এক্কেবারেই পছন্দ না। বাবু ওত পাত্তা দিত না, প্রনব যে মানের ছেলে তাতে ও ওদের সম্পর্কের হুমকি নয়।
জুঁই আমাকেও এটা বলত যে প্রনব শয়তান গোছের।
কিন্তু সেই প্রনবের প্রেমেই পড়েছে জুঁই আর বাবুর কাছে এটা কোনকালেই স্বীকার করেনি। বাবু সন্দেহ করা শুরু করলে কসম টসম কেটেছে। বাবুর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল, সীম বন্ধ করে দিল। বাবু একদিন ওর ফোন চেক করে দেখে ওর ফোন সত্যি বন্ধ।
কিন্তু অন করে দেখে অন্য সীম। মেইলবক্সে প্রনবের লাভইউ বলা মেসেজ দেখে যা বোঝার বাবু বুঝে নিয়েছিল।
তাই জুঁই কান্নায় আমার সহানুভুতি তেমন একটা থাকে না।
বাবু বকাবকি করে ওর রিভেন্জ নেয়। নিজে কষ্টও পায়।
এবং প্রত্যেক বকাবকির পরের দিন ফোন করে আবার সরি বলে। জুঁই প্রত্যেক বকাবকির পরে আমার কাছে আসে, কোন কোনদিন বাবুকে বকে কোনকোন দিন কান্না করে, কিন্তু প্রনবের সাথে ওর সম্পর্ক চলেই। পরদিন বাবু ফোন করে সরি বলে, তাতে জুঁই এর তেমন ফিলিংস হয় না।
জুঁইকে সান্তনা দিলাম আবার, কাদিস না, যা হবার হয়েছে।
জুঁই ও স্বাভাবিক হয়ে এল।
আমাকে বলে, যাই রে, প্রনব অপেক্ষা করতেছে, আজেকে সিনেমায় যাব।
(বন্ধুদের নাম পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।