যখনই তোমাকে মিস করি আকাশ থেকে খসে পরে একটি করে তারা ♥ এমন কোন জ্যোৎস্না রাতে যদি আকাশে তাকিয়ে দেখ একলা চাঁদ বসে কাদছে, কোন তারা নেই তারসঙ্গে... তবে মনে রেখ দোষ তোমারই... আমাকে একা করে দিয়ে তোমাকে এত মিস করার সুযোগ দিয়েছ, আর এখন চাঁদ টিকে একা করে দিলে
‘‘আমার আব্বু. আম্মুকে ওরা মেরে ফেলেছে, একবছর আগে৷ আজও তোমরা কিছু করতে পারলে না৷ আমি তাই আবারো দাঁড়ালাম বিচারের দাবিতে৷ আমার আব্বু, আম্মুর খুনিদের শাস্তি চাই৷ আমার আব্বু, আম্মুকে এনে দাও৷’’ - এই কথাগুলো হয়তো সামনে থাকলে মেঘ আমাকে বলতো৷ আমি তার সামনে যাইনি৷ কারণ আমরা এখনো তার বাবা-মায়ের খুনিদের ধরতে পারিনি, খুনের কারণ খুঁজে বের করতে পারিনি৷ এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?
ওপরের কথাগুলো ফেসবুকে ‘সাগর-রুনি হত্যাকারীদের বিচার চাই’ নামক পেজে লিখেছেন পেজটির পরিচালনাকারী। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার পর এই ফেসবুক পেজ তৈরি করা হয়। এতে রোববারের সর্বশেষ এই পোস্টটি করা হয় রাত ১২টার দিকে। তখন পর্যন্ত পেজটি লাইক করেছেন ১৭ হাজার ১১৩ জন ফেসবুক সদস্য।
গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রাজাবাজারে ভাড়া বাসা থেকে মাছারাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতারের আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাগর-রুনির রেখে যাওয়া একমাত্র সন্তান মিহির সারওয়ার মেঘকে দেখভালের দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেন।
ঘটনার পর থেকেই হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে সাংবাদিক সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে রাজপথে নামে। চলমান আন্দোলনের এক বছরের মাথায় সোমবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বৃহৎ কর্মসূচি ‘সাংবাদিক মহাসমাবেশ’ পালন করতে যাচ্ছে সাংবাদিক সমাজ। যোগ হয়েছে স্বাধীনতার পর সব সাংবাদিক হত্যার বিচার, সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার দাবি।
ইন্টারনেটে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও ব্লগ সাইটগুলোতেও সাগর-রুনি খুনের বিচারের জোরালো দাবি চলছে। দেশ ও দেশের বাইরের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই হত্যার বিচার দাবির আওয়াজকে বেগবান করছেন।
‘সাগর-রুনি হত্যাকারীদের বিচার চাই’ পেজে জার্মান থেকে ফারজানা কবীর খান (স্নিগ্ধা) লিখেছেন, “সাহারা খাতুনের ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম আজ ৩৬৫ দিন মানে এক বছর গড়িয়ে গেল। তদন্তের কোনো আশাজনক খবর এখন পর্যন্ত শুনিনি। ”
“মেঘের দায়িত্ব নিয়েও হলো, অনেক অনেক প্রহসন।
আজ মেঘের খবর কেউ রাখে না। মেঘ যেন অসীম আকাশে ভেসে যাওয়া মেঘদলের একজন। এই ছোট্ট শিশুটি যে একজন কোমল প্রাণের মানুষ তা আমরা ভুলেই গেছি। এই শিশুটি এখনো অনেক অনেক ছোট্ট। ভাবে, তার বাবা-মা আসলে অনেক দূরে ঘুরতে গেছেন।
বাবা-মা যে না ফেরার দেশে গেছেন, মেঘ এখনো তা বোঝে না। ”
স্নিগ্ধা আরো বলেন, “আজ যদি মেঘের মামা বা নানিরা না থাকতো তাহলে এতিমখানায় বড় হতে হতো মেঘকে। কারণ, প্রধানমন্ত্রী মেঘের দায়িত্ব নিয়ে সম্পূর্ণ ভুলে গিয়েছেন তাকে। মেঘের হাতে দুই লাখ টাকার একটি চেক তুলে দিয়ে তার দায়িত্ব শেষ হয়ে গেছে বলেই মনে হয়। আর খেয়াল করবেনই বা কোন মুখে্।
কারণ, তিনি বলে ফেলেছিলেন, সাংবাদিক দম্পাত্তি তাদের বেডরুমে খুন হয়েছেন। ”
“রুনির মা যখন কাঁদেন,মেঘ বলে: তুমি কি বাবা-মার জন্য কাঁদছো? বিচারের জন্য আর্তনাদ করছে সাগর-রুনির আত্মা দ্বারে দ্বারে। ”
“আমি বিশ্বাস করি, সরকারের সঠিক সহযোগিতা থাকলে খুনিদের সনাক্ত করা সম্ভব ছিল এবং এখনো তা করা যায়। সরকারের কোনো এক বিশেষ দুর্বলতাই সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গায়েব হতে সাহায্য করেছে। ” বলেন তিনি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।