কানাকে কানা, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না, ইহাতে উহারা কষ্ট পায়
বিডিআর পিলখানায় হত্যাকান্ডের বিচার সেনাবাহিনীর আইন অনুযায়ী সামরিক আদালতে করার বিষয়ে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে যে চিঠি দিয়েছে তাতে এই হত্যাকান্ডের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,বিডিআর যেহেতু সামরিক বাহিনীর অংশ নয় সেহেতু এই বিচার প্রক্রিয়া সামরিক আদালতে হতে পারে না। সংগঠনটি মনে করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে হবে। এবং প্রচলিত আইনে উন্মুক্ত আদালতে তাদের বিচার করতে হবে।
বিভিন্ন রিপোর্টে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিদ্রোহের পর থেকে এপর্যন্ত ১৭ জন বিডিআর জওয়ানের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী যে সমস্ত জওয়ানদের চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে তাদের অধিকাংশই নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায়ের ফলে নানা ধরনের শারিরীক সমস্যায় ভূগছে। আজকের যুগে মানবাধিকারের নামে যারা মিডিয়াকে ব্যবহার করেন, উদ্ভট ও কাল্পনিক তথ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে বলে নানা অভিযোগ করেন এবার তাদের কোন দেখা মেলেনি। স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য যে কোন ধরণের শারিরীক নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লংঘন হলেও এরা নিশ্চুপ। নির্যাতনের মাধ্যমে এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক অথবা অমর্যাদাকর আচরণ বা শাস্তির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সনদে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করলেও বাস্তবে এক্ষেত্রে সে আইন মানা হচ্ছে না।
গভীর উদ্বেগের বিষয় হলো অন্তরীণ বা জেলে আটক থাকা সদস্যদের আত্নীয় পরিজন বা স্ত্রী ছেলে মেয়ের সাথে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না।
শত শত লোক প্রতিদিন জওয়ানদের সাথে দেখা করার জন্য জেল গেটে অপেক্ষা করে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। সীমাহীন দুর্ভোগের স্বীকার এই গরীব পরিবারের পক্ষে কথা বলার কোন লোক নেই। প্রতিদিনই জিজ্ঞাসাবাদের নামে বিপুল সংখ্যক সদস্যকে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে,জেলে পাঠানো হচ্ছে। এর আগে বিদ্রোহের ঘটনার সময় ভিতর থেকে বেচে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল যে স্বল্প সংখ্যক অল্প বয়সী জওয়ানরা এই নারকীয় ঘটনার সাথে বেশী জড়িত। বাকীরা কেউ নিষ্ক্রিয় এবং সেনা অফিসারদের বাচাতে সাহায্য করেছে।
তবে কেন এতো লোককে প্রতিদিন জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন সেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এ প্রশ্ন আসাই স্বাভাবিক। কিন্তু এ প্রশ্ন করার কোন লোক নেই, প্রশ্নের উত্তরদাতার দেখা মিলছে না। ভাগ্যাহত এসব জওয়ানদের পরিবারের জন্য কোন আশ্বাস বা ভরসা নেই। একই সঙ্গে চাপা পড়ে গেছে বিদ্রোহের কারণ ও তাদের দাবি দাওয়াগুলো,ডাল ভাত কর্মসূচি, মেজর শাকিলের বাসায় ১৭টি ফ্রিজ পাওয়া, ১২৪ গরু পালন (যেগুলো দেখা শোনা নাদান বিডিআর সদস্যরাই করতো) ছাড়াও বিডিআর জওয়ানদের প্রতি সেনা কর্মকর্তাদের নানা অমানবিক আচরণ সবই চাপা পড়ে গেল।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা এবং নির্দোষদের মুক্তি ও চাকুরী ফিরিয়ে দেয়ার জন্য দাবি ক্রমেই সোচ্চার হচ্ছে এটাই আশার কথা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।