আমার প্রিয় বাংলাদেশে কি আজ, এখন বৃষ্টি হচ্ছে? জানা নেই এই মুহুর্তে। কিন্তু হিমালয়ের দেশ নেপালে এখন ঝুমবৃষ্টি হচ্ছে। নেপালে আসার পর গত এক মাসে এমন টানা বৃষ্টি আমি দেখিনি। নেপালের অন্যতম পর্যটক শহর পোখরার বিখ্যাত সেই লেকের পাড়ে বসে দীর্ঘক্ষন ধরে বৃষ্টির তাজা ছোয়া নিচ্ছি।
এ এক অদ্ভুত অনুভূতি।
চারপাশে পাহাড়, অন্নপূর্ণার বিশালতা, তার মাঝে পোখরা লেক এখন বৃষ্টির পানিতে ছলছল করছে। কাউকে ভাষায় বলে বোঝানো সম্ভব নয় এই সৌন্দর্যের কথা।
লেকের পাড়ে এক সাইবার ক্যাফেতে বসে ব্লগ লিখছি। দুই ঘন্টা ধরে চলছে ঝুমবৃষ্টি। ক্যাফেত বসেও আমি তার ছোয়া পাচ্ছি।
যারা নেপাল বেড়াতে এসেছেন এবং পোখরা ঘুরছেন তারা খুব ভালো করেই জানেন পোখরার অপরুপ সৌন্দর্যের কথা। যারা আসেননি তাদের বলছি নেপাল ঘুরতে এলে একটি জায়গা ঘুরে গেলেও সেটি যেন পোখরা হয়। আমি এই নিয়ে তৃতীয়বার পোখরার এলাম। এর যে আকর্ষন, এর যে টান তা ভাষায় বলার নয়। এমন টানেই আমি দেশে থাকতে বারবার ছুটে যেতাম কক্সবাজার কিংবা সেন্টমার্টিনে।
এই টান আপনাকে বারবার নিয়ে আসবে প্রকৃতির কাছে।
যাই হোক, আমরা দুপুরে কাঠমান্ডু থেকে একেটি মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের রিজিওনাল মাষ্টার্সের ছাত্র এবং কয়েকজন অতিথিসহ ১৬ জন পোখরায় এসেছি।
পোখরা আসার পথটা ভারি সুন্দর। দুই পাশে পাহাড়, রাস্তার ধার ঘেষে পাথুরে পাহাড়ি নদী যে কাউকে মুগ্ধ করবে। দীর্ঘ ছয়-সাত ঘন্টার ভ্রমনও তাই মনে হবে আনন্দদয়ক।
তবে আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ, পাহাড় কেটে অনেক উঁচু নিচু করে রাস্তা আপনাকে ভয় পাইয়ে দিতে পারে। কিন্তু এর মধ্যেও আছে এক অন্য আনন্দ। অ্যাডভেঞ্চার।
বিকেলে এসেই আমরা ডেভিস ফলস এবং সেই বিখ্যাত গুহায় ঘুরে এলাম। আমাদের সঙ্গে থাকা মনি ভাই এবং আমি বাদে বাকি সবার জন্য নেপাল সফর প্রথমবার।
তাই তাদের বিস্ময়, আনন্দ আমাদেরও মুগ্ধ করলো।
সন্ধ্যায় আমরা ফের লেক সাইডে বসলাম। সেখাণেই চললো দীর্ঘক্ষন দেশের গান। এর পরেই হঠাৎ করে ঝুম বৃষ্টি। আমরা কিছুক্ষন ভিজেই ছুটলাম নিরাপদ আশ্রয়ে।
বাকিরা হোটেলে আমি সাইবার ক্যাফেতে। বৃষ্টির তীব্রতা, বাজ পড়ার তীব্র শব্দ যেন আমায় ঘোরের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে।
বৃষ্টি আমার খুব পছন্দ। খুব। তাই নানাভাবে, নানা জায়গায় বৃষ্টি দেখেছি।
দেখার চেষ্টা করেছি। ঝড়ের মধ্যে, সাগরে, ক্সবাজারে, নানা জায়গায় বৃষ্টি দেখেছি। ভিজেছি। গতবার যখন নেপালে এসেছিরাম সেবার ছিলো তীব্র শীত। এবার বসন্তেও পেলাম বৃষ্টির ছোয়া।
খুব ভালো লাগছে। বৃষ্টি নিয়ে আমার আনন্দের আরেকটি দিন যোগ হলো। এই বৃষ্টির কারনেই কাল সকালে আকাশ খুব পরিস্কার থাকবে। আশা করছি আমরা হিমালয় খুব ভালো করে দেখতে পাবো।
বাংলাদেশও ভিজে যাক বৃষ্টির ছোয়ায় সেই কামনা করছি, সবার মনে বাজুক বৃষ্টির ছোয়া, ভালোবাৎসায়, গানে বর্ষায় ভরে উঠুক আমাদের জীবন।
শুচি হোক ধরা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।