আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন ক্ষুদ্র অর্থনীতির কথা বলি

আল বিদা

শওকত হোসেন মাসুম ভাই পত্রিকায় আর ব্লগে প্রায়ই অর্থনীতির নানা দিক নিয়ে লিখেন। শুধু বাংলাদেশ না বিশ্ব অর্থনীতিতেই তার আগ্রহ দেখা যায়। অর্থনীতির ভাল-মন্দ, সমস্যা সমাধান সবকিছুই তার নজরে। আপনারা কেউ যদি ভেবে থাকেন তেমন কিছু লিখব তাহলে অলরেডী আপনি অনেক সময় নষ্ট করে ফেলেছেন। ধরা যাক, বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক মোট ১০০০ টাকা ছেপেছেন।

এর সাথে যুক্ত হতে পারে রপ্তানী আয় আর রেমিটেন্স। আবার আমদানী ব্যয়, বিদেশ ভ্রমন, পড়াশোনা, চিকিৎসা ব্যয় বাদ যাবে। এই টাকাটাই দেশের মধ্যে ঘুরতে থাকবে। এই টাকা যত রোলিং হবে তত বেশী এর সুবিধা সবাই ভোগ করবে। মাঝে মাঝে দেখা যায় অযথা রাস্তায় কাটাকাটি চলে।

আমরা বিরক্ত হলেও বুঝে নিন এ সরকারী অর্থ জনগনের মাঝে ছড়ানোর একটি উপায়। কারন সরকার সাধারনত ডিরেক্ট জনগনের হাতে টাকা দেয় না (দূর্যোগ ছাড়া)। এমনকি বাজারে যে পন্যের দাম ১২০ টাকা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সরকার তা ১০০ টাকায় বিক্রি করতে বলে না। বরং ২০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে তা জনগনের ক্রয়ক্ষমতায় নিয়ে আসে। একটি দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হয় বিনিয়োগ বৃদ্ধির উপর।

অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য যে পরিমান বিনিয়োগ দরকার আমাদের দেশে তার অর্ধেকও নাই (তথ্যের সূত্র : লোকমুখ)। আমাদের খরচও বিনিয়োগের একটি অংশ। এ কারনে অর্থনীতিবিদরা ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেন। ধরে নেই, আপনি ৫০০ টাকা দিয়ে ৪০০ টাকা বিনিয়োগের চাল কিনলেন। চাল বিক্রেতা ৪০০ টাকা পুনরায় বিনিয়োগ করে বাকি ১০০ টাকা দিয়ে ৮০ টাকা বিনিয়োগের তরকারী কিনলেন।

তরকারী বিক্রেতা ৮০ টাকা পুনরায় বিনিয়োগ করে ২০ টাকা দিয়ে ১৫ টাকার বিনিয়োগের কাপড় কিনলেন। কাপড় বিক্রেতা ১৫ টাকা পুনরায় বিনিয়োগ করে ৫ টাকা দিয়ে সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে গেলেন। হল মালিক ৫ টাকা থেকে ৩ টাকা দিয়ে দিলেন সিনেমার প্রযোজকদের। সিনেমার প্রযোজক এই ৩ টাকা থেকে ১ টাকা দিলেন নায়িকা মৌসুমীকে। নায়িকা মৌসুমী এই টাকা নিয়ে গেলেন চাল কিনতে এবং চাল বিক্রেতা .......................।

এভাবে আপনার টাকা নায়িকার মৌসুমীর হাত ঘুরে আবার বাজারেই চলে যায়। এবার বিনিয়োগের অন্য কথা বলি। বিনিয়োগ করলে এই বিনিয়োগকে ঘিরে আরো কিছু বিনিয়োগকারী গড়ে উঠে। দেশে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানী গড়ে উঠলে তার জন্য কন্সট্রাকশন ম্যাটেরিয়াল, এড ফার্ম, নিউজপেপার, বিলবোর্ড, ব্যাংক এমন আরও কয়েকটি সার্ভিস কোম্পানী গড়ে উঠে। বিনিয়োগ বলতে আমরা সাধারনভাবে কোন ব্যবসায় বিনিয়োগ করাটাই বুঝি।

আপনি ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে বিনিয়োগ নিয়ে তো আর কিছু বলার নেই। এখন যদি আপনি চাকরী করে থাকেন আর দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে বলছি। আপনার সঞ্চিত অর্থ আপনি যদি বিনিয়োগ করতে চান তা যত সামান্যই হোক নি কেন তা দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরী। আপনি হয়ত মাস শেষে ১০০০ টাকা জমালেন। এই টাকাও দেশের বিনিয়োগে সরাসরি যোগ হবে।

আপনি হয়ত কোন ব্যবসা করতে পারছেন না। আপনার টাকা ব্যাংকে রাখুন। ব্যাংকই আপনার হয়ে এই টাকা বিনিয়োগ করবে। যত সামান্য টাকাই হোক ব্যাংকে রাখুন। আরেকটি বিনিয়োগের মাধ্যম হচ্ছে শেয়ারে বিনিয়োগ করা।

আপনার এই সামান্য ১০০০ টাকা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন কোম্পানী মার্কেটে শেয়ার ছেড়ে হাত পেতে বসে আছে। এই দুইটি পথ সাময়িকভাবে এবং সাধারনভাবে বিনিয়োগ হিসেবে বলছি। কারন প্রায় ঝামেলা ও দু:শ্চিন্তাহীন বিনিয়োগ এই দুইটিকে বলা যায়। দেশের অর্থনীতিবিদরা ম্যাক্রো ইকনমিক্স নিয়ে কাজ করেন। আমাদের মত সাধারন মানুষ আর ড. ইউনূসের মত বিশেষ মানুষ জন মাইক্রো ইকনমিক্স নিয়ে ভাবেন।

আমরা আমাদের পকেটের অর্থনীতি নিয়েই থাকি। এর মাঝে কখনও যদি মনে হয় এমন কিছু বিনিয়োগ করি যা প্রকারান্তরে দেশের বিনিয়োগ বাড়াবে তাহলে ব্যাংকিং করুন বা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করুন। আপনি হয়ত ভাবছেন, আপনার সামান্য অর্থ দেশের জন্য কিছুই না। আপনিও তো দেশের ১৫ কোটি ভাগের ১ ভাগ। আমরা আমাদের মত করেই অর্থনীতিটাকে বুঝি।

*এই পোস্ট কেবল অর্থনীতি নিয়ে নিজের মত করে ভাবা। তত্বগত ভুল যদি কিছু থাকে শুধরে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.