সুখি হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় বিবেক হীন হওয়া।
একাত্তরে সুদীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে অনেক ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। এটি অর্জনে বাঙ্গালি জাতিকে পরিশোধ করতে হয়েছে চরম মূল্য। বিজয়ের চল্লিশ দশক পরও স্বাধীন বাংলার মাটিতে একাত্তরের হায়েনাদের বীরদর্পে বিচরন জাতি হিসাবে বাঙ্গালীর কপালে এঁকে দিয়েছিল কলংকের তিলক। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ নিলে দেশপ্রেমিক জনতা আশায় বুক বাঁধে – এবার বুঝি জাতির কলংক মোচনের সময় এল।
বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসীর রায়ের মাধ্যমে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। সত্য প্রমানিত হয় সেই পুরনো প্রবাদ – পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। বিচারের শুরুটায় জনগনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটলেও বিস্ময়করভাবে দ্বিতীয় রায়ে এর ব্যত্যয় ঘটে। ফলশ্রুতিতে মুক্তি যুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বেবিত দেশের নতুন প্রজন্ম হয়ে পড়ে বিস্ফোরণমুখ। ভার্চুয়াল জগতে তারা গড়ে তোলে তীব্র প্রতিবাদ।
ধীরে ধীরে তাদের এ ভার্চুয়াল প্রতিবাদ রূপ নেয় প্রজন্ম চত্তরের একচুয়াল গণজাগরণে। সেই ইতিহাস এখন সবার জানা। ভার্চুয়াল জগত কতটা শক্তিশালী মিশরের পর এবার টের পেল সমগ্র বঙ্গবাসী।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধারা আমাদেরকে উপহার দিয়ে গেছেন একটি স্বাধীন ভু খণ্ড। সেই ভু খণ্ডে যখন একাত্তরের হায়েনারা আস্ফালন করে,দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ব্যাঙ্গ করে ; তখন দূর আকাশ থেকে মুক্তি যোদ্ধাদের অতৃপ্ত আত্মা কতটা কষ্ট পায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
তাই এ প্রজন্মের সারথিদের উপর এবার দায় বর্তেছে ইতিহাসের দায় মেটানোর। এখন কোন বাধাই আর তাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। প্রজন্ম চত্বরে যে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে তা মুক্তি যুদ্ধের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। তরুণ প্রজন্ম আজ জেগে উঠেছে। তাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে শামিল হয়েছে ধর্ম , বর্ণ, পেশা নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষ।
সকলের হৃদয়ের আকুতি একটাই – যে কোন মূল্যে যুদ্ধাপরাধী দের ফাঁসি। দেশের আপামর জনসাধারণের প্রানের এই আকুতি কিছুতেই বৃথা যেতে পারে না। ৩০ লক্ষ শহীদদের অতৃপ্ত আত্মার অভিসম্পাত এ জাতি কিছুতেই কাঁধে তুলে নিতে পারে না।
যে কোন মূল্যেই হোক, নতুন প্রজন্ম সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে। কারণ এর সাথে মহান মুক্তিযোদ্ধাদের মান মর্যাদার বিষয়টি জড়িত।
মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা কোন দেশপ্রেমিক বাঙ্গালীর কাম্য হতে পারে না।
অতএব , হে জাতির সূর্য সন্তান মুক্তি সেনানীরা, তোমরা উৎকণ্ঠিত হবে না মোটেও, তোমাদের চেতনা আর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করা নব্য মুক্তি যোদ্ধারা স্বাধীন বাংলার মাটিতে সকল যুদ্ধাপরাধীদের কবর রচনা করে তোমাদের রক্তের ঋণ কিঞ্চিৎ হলেও পরিশোধ করবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।