আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিউশনি কাব্য এবং কিছু চর্বিত চর্বণ-(পর্ব ২)

এবার বিদায়ের পালা ...

পর্ব ১ View this link অনিবার্য কারণবশত দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশে বিলম্ব হওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কারণটা...... আচ্ছা থাক বলেই ফেলি,আসলে ইদানীং নতুন একটি টিউশনি এবং তৎসংলগ্ন ব্যস্ততার কারণেই এই অনিচ্ছাকৃত বিলম্ব। একটি কথা না বললেই নয়,বর্তমানে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বিভিন্নভাবেই আমাদের নৈমিত্তিক জীবনের ওপর পড়ছে। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে হালাল ব্যবসা টিউশনির ওপরও যে পড়বে তা আপামর ছাত্রসমাজের সূদুরপ্রসারী কল্পনাতেও ছিলনা। আগে যারা বিলাস ব্যসনের গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দু হাতে টাকা ঊড়াত তাদের পকেটও এখন গড়ের মাঠ।

সে যাই হোক,আমাদের ছাত্রসমাজের দুঃখ দুর্দশার মর্মান্তিক চিত্র :# তুলে ধরে সাহোর ব্লগারদের কাছ থেকে অকৃত্রিম সহানুভূতি আদায় করা কোনোমতেই আমার উদ্দেশ্য নয় । এমনকি দৈনিক পত্রিকার বিকল্প হিসেবে "পড়াইতে চাই শিরোনামে সাহোতে নিজের রাশভারী প্রোফাইলের বর্ণনা দিয়ে মুফতে প্রচারণা চালানোও আমার অভিলাষ নয়। আম শুধু বুয়েট জীবনের কিছু মজাদার ঘটুনাই আজ আপনাদের নেকনজরে আনব। এটা ১-২(লেভেল ১ টার্ম ২) এর একেবারে শুরুর দিকের ঘটনা। তখনো বাবা মায়ের ভাল ছেলের তকমাটা আমাদের অনেকের গায়ে সেঁটে ছিল।

ফলে টিউশনি নামক পেশাটির মহত্ত্ব অনুধাবনে আমরা বিলকুল অপারগ ছিলাম। তো এর মাঝেই কিছু কিছু সাহসী ছেলে তাদের অর্থনৈতিক ক্যারিয়ার চাঙ্গা করতে শুরু করে। তখন আসলে এমন অবস্থা ছিল যে যা পেত তাতেই দিলখুশ থাকতে হত। টিউশনির বাজারে জাঁদরেল অভিভাবকের সাথে যে মুলোমুলি করার সুযোগ থাকে সে চিন্তা কস্মিনকালে আমাদের মাথায় তখন আসেনি। তো তখন আমার এক বন্ধু কোন এক পরিচিতর মাধ্যমে একটি মহামূল্যবান টিউশনি বগলদাবা করতে সক্ষম হয়।

তো প্রথম যেদিন টিউশনিতে যাচ্ছিল সেদিন তার সাথে আমার দেখা। মুখে দন্তবিকশিত হাসি,ভাবখানা এমন যে অর্ধেক রাজত্ব ও রাজকন্যা পেয়ে গেছে। কিন্তু টিউশনিতে গিয়ে তো তার আক্কেল গুডুম। জায়গাটি ছিল ক্যান্টনমেন্ট থেকে নামার পর প্রায় ১৫ টাকা রিকশাভাড়ার দূরত্বের । সে যাক,প্রথমে গার্জেন যে সম্মানীর পরিমাণ বললেন তাতেই যে কারো মূর্ছা যেত।

কিন্তু টিউশনি করবই,বন্ধুর এই ধনুর্ভংগ পণের কারণে সে কথা চালিয়ে গেল। তার পরের শর্ত হপ্তায় আসতে হবে ১৫ দিন,আর পড়াতে হবে ২ ঘন্টা। বন্ধুটি সবিনয়ে বলল ঘড়ি ধরে দুঘন্টা পড়ানো কষ্টকর। তখন ঐ গার্জেন বলল সেক্ষেত্রে তারা ঘণ্টা হিসেব করেই টাকা দেবেন। তার ওপর অন্যান্য শর্তাদির মধ্যে ছিল ছাত্রীকে পড়ানোর সময় অভিভাবক সামনে বসে পাহারা দেবেন।

এতক্ষন সব শুনলেও এবার বন্ধুর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেল। বেশ কিছু উত্তপ্ত মন্তব্য শুনিয়ে সে প্রস্থান করল। তবে মুদ্রা উল্টো পিঠে আরো কিছু মজাদার ঘটনাও আছে। আমারই পরিচিত এক বড় ভাই নাকি এক ছাত্রী পড়াতেন। উনি ছিলেন নিপাট ভদ্রলোক,ভাজামাছটি উল্টিয়ে খেতে জানেননা টাইপের।

উনাকে আবার সেই বাসায় ব্যাপক যত্নআত্তি করা হত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে সন্দেহ জাগে ,ডালমে কুছ কালা হ্যায়। ভাইয়া তখন ফাইনাল টার্মে,একদিন বেতন দিতে বেশ বিলম্ব হওয়ায় উনি বাধ্য হয়ে কথাটা তুললে তাকে বলা হয়,"আরে এটাতো কোনো ব্যাপারই না,তুমি পরে বিদেশ গেলে তার টাকা তো আমরাই দেব,নাকি?"বলাই বাহুল্য, মেয়ের জন্য হবু ইঞ্জিনিয়ারের মত এমন উপযুক্ত পাত্রকে হাতছাড়া না করার অভিপ্রায়েই ভদ্রলোকের এহেন মন্তব্য। পরে অবশ্য সেই টিউশনির পাট চুকোতে ভাইয়াকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।