আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাতক্ষীরায় পাক হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সেই ভয়াল রাত আজ

মানুষে মানুষে সমানাধিকারে বিশ্বাস করি

সাতক্ষীরায় পাক হানাদার বাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞের সেই ভয়াল রাত আজ আজ সেই লোমহর্ষক ২০ এপ্রিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বিকেল ৫টা নাগাদ তাদের সাজোয়া বহর নিয়ে সাতক্ষীরা সরকারি হাইস্কুলে প্রথম উপস্থিত হয়। আর ঐ দিন গভীর রাতে হঠাৎ গর্জে ওঠে পাক বাহিনীর বেয়নেট রাইফেল ষ্টেনগান। পাখির মত গুলি ও বেয়নেটের আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো শতাধিক মানুষ। সাতক্ষীরা সরকারি হাইস্কুলের পিছনে দীনেশ কামারের বাড়িতে ঘটেছিল এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ।

সাতক্ষীরা সরকারি হাইস্কুল পাক হানাদারদের জঘন্য হত্যাকান্ডের এক নিরব স্বাক্ষী। দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে শতশত মানুষের গণকবর বুকে ধারন করে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ডের স্মৃতি বহন করে চলেছে স্কুলটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই অর্থাৎ ৭১’এর ২৫ মার্চের পর থেকে পাক বাহিনীর আক্রমনের মিশন হয় এদেশের অগনিত মানুষ। দেশজুড়ে হানাদারদের অত্যাচার শুরু হলে দলে দলে বহু মানুষ প্রাণভয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। বিশেষ করে হিন্দুরা পাক বাহিনীর সরাসরি টার্গেটে পরিণত হয়।

এসময় হিন্দু অধ্যুষিত জায়গাগুলোতে নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। চলে লুট, অপ্রিসংযোগ। চরম আতংকের মধ্যে পড়ে তারা বাড়িঘর ভিটে মাটি ছেড়ৈ জীবন নিয়ে পালাতে থাকে। এরা ছিল অতি সাধারন মানুষ। সাতক্ষীরা সরকারি হাইস্কুলের পাশে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়ক ধরে এসময় প্রতিদিন শতশত মানুষ ভারতে যাওয়ার পথে উক্ত স্বরনার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহন করতো রাত্রী যাপনের জন্য।

পরদিন আবার ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হতো। নির্মান কাজের জন্য এসময় স্কুলের চতুপার্শ্বে বাশের ভারা থাকায় সে রাতে দু’একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল। মূলত : এই মানুষগুলো এসেছিল ডুমুরিয়া, কেশবপুর, মনিরামপুর, তালা, পাইকগাছা প্রভৃতি এলাকা থেকে। ভারতের পশ্চিম বঙ্গে যাওয়ার পথে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের এই স্কুলটি ছিল একটি ট্রানজিট। ১৯৭১ সালের এই দিন বিকেল বেলায় কেউ কেউ খাচ্চিলো, কেউ বা বসে আছে পরিবার নিয়ে।

কারো সামনে চিড়া মুড়ি, অনেকে কেবলই পৌছেচে শরনার্থী শিবিরে। হানাদার বাহিনী এই অঙ্গনে প্রবেশ করে সুকৌশলে এই মানুষগুলোকে দোতলায় পাঠিয়ে দেয় এরপর গভীর রাতে শুরু করে হত্যাযজ্ঞ। বেয়নেট ও গুলি করে শত শত মানুষকে হত্যা করা হয় যাদের অধিকাংশই যুবক যুবতী। এদেরকে স্কুলের পিছনে দীনেষ কামারের মাটির প্রাচিরের মধ্যেই মাটিচাপা দেওয়া হয়। ভোরবেলা পর্যন্ত ওদের আর্তচিৎকার শুনতে পান অনেকেই।

সাতক্ষীরা সরকারি হাইস্কুলের তৎকালীন ছাত্র শিক্ষকসহ এলাকাবাসির জট বাধা দিনেশ কামার সবার পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৩৭টি বছর পার হয়ে গেল। অথচ : দীনেশ কামারের বাড়ির এই গণকরব আজও অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। এটি সংরক্ষণের আজও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কোন স্মৃতি সৌধও নির্মিত হয়নি সেখানে।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.