পরিবর্তনের জন্য লেখালেখি
[ ইহা একটি পাঁচমিশালী স্মৃতিকথা, অনুভব , রাগাবিতা পোস্ট -- সংক্ষেপে, যেই সব পোস্টের কোন আগা মাথা থাকে না ]
সবাইকে ১৪১৬ বঙ্গাব্দের অনেক অনেক শুভ কামনা । আমার উপস্থিতি অনিয়মিত । ১৪১৫ বঙ্গাব্দের অন্তে ব্লগের সমস্ত শুভাকাঙ্খী , বন্ধুদের জানাই অশেষ কৃতজ্ঞতা । ১৪১৫ আমার জন্য ঘটনা বহুল বছর । এই বছর বিয়ে করেছি ।
এই বছরেই চাকরী ছেড়েছি । নতুন করে গবেষনায় যোগ দিয়েছি । বিয়ের সাথে সাথে নিজের চিরচেনা বাড়িটি ছেড়েছি । পুরানো অনেক কিছু বদলে গেছে । দিন যাপনের রুটিন যেমন বদলেছে , বদলে গেছে সারাক্ষণ সাথে থাকা বেশ কিছু সঙ্গী সাথী ।
বাড়িতেই বেশির ভাগ সময় কাটে বলে মুঠোফোন এর ফাঁস থেকে মুক্ত । বিশাল একটা রাবনের সংসার ধরনের ব্যাগ বাদ দিয়ে হাতে এখন বই , খাতা, বাজারের ব্যাগ থাকে । রাতের ঘুম - অঘুমের সময় এখন আরেক জন মানুষের সাথে সামঞ্জস্য করে নিতে হয়েছে ।
রান্না বান্নায় পি এইচ ডি করার তুমুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে । লেখা লেখি মুমুর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে আর গান বাজনা , টিভি একেবারেই বাদ ।
আব্বুর হার্ট এটাকটা সবচেয়ে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা । তারপরেও খুশি আব্বু এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো । নিয়মিত অষুধে ভালো কাজ হয়েছে । চাকুরী ছেড়ে দিয়ে একটা ভালো হয়েছে , নতুন গবেষনা কিংবা কাজের দরকারে এদিক ওদিক যাওয়ার সুযোগটা বেড়েছে । যদিও , খুবই টাইট সময় , তার উপর টাইট অর্থনীতি ।
ব্যস্ততার সীমা ছিলো না । মন খারাপের সময় নেই । কিন্তু তারপরেও মন সারাক্ষণ পড়ে থাকে আব্বু, আম্মু , ভাই -বোন , আপুর বাচ্চাদের কাছে । স্বামী তাঁর কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমার মনের উন্নয়ন কাজে সক্রিয় সহযোগিতা করেন । আমাদের বাড়িটা একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে ।
আমার বাড়ি ছেড়ে আমাদের বাড়ি হচ্ছে । একটু খুন্সুঁটি , একটু বিবাদ আর অনেক ভালোবাসা । সোনালী রঙের রোদ মাখা ঘরটাতে প্রিয় মানুষের হাতে কফি তুলে দিতে দিতে নিজেই চমকে যাই ,
" ওম্মা ! সে কি গো ! বছর পেরিয়ে গেলো নাকি ?"
----------------------------------------------------
শল্য চিকিৎসকদের কাছে রাজমিস্ত্রী ভাই আসিফের এই গানটি আমাদের পড়ুয়াকালে বেশ জনপ্রিয় হয়েছিলো ।
" কখনো বাগান, কখনো দিগন্ত
কখনো শ্রাবন , কখনো বসন্ত
আমি সেই তোমাকেই খুঁজি" ।
চির আকুতির এই খোঁজাখুঁজি আমার কিছুতেই বন্ধ হয় না ।
কি যে খুঁজি , নিজেই পাই না বুঝে
হেলায় ভুলে
খেয়াল খুলে
দেয়াল মরি জুঝে ।
আমার দিন কেটে যায় খুঁজে !
এর চেয়ে প্রিম্যাচিউরড চাইল্ডের শিরা ধমনী খুঁজে পাওয়া সহজ । কিন্তু নিজের শিরায় শিরায় যে পাগলামি দৌড়ে বেড়ায় , তার আশ্রয় মিললো না , স্টেশন পেলো না মন গাড়ি । মনাঞ্চলে রাত পেরিয়ে সূর্য আসবে , এমন প্রতিশ্রুতিতেই কিনা কে জানে , মাস্টার গাড়ি থামায় না । আমার বুকের অতল থেকে তাই কেবল ধোঁয়া ওঠে , চোখ ভরে যায় ধোঁয়ায়।
আমি মরচে পড়া ইঞ্জিন খুলে কেবল চেতনার কয়লা দেখি ।
ভালোবাসার অঙ্গার গুণি অঙ্গীকারের লাশে ,
আমার দিন কেটে যায় অলীক বীজের আশে !
"বীজ"
আমার অঙ্গনে একটা বীজ বুনে দাও ।
অনেক দিন খালি পড়ে আছে ।
চৈত্র সংক্রান্তির পূর্ণিমায় শূন্য উঠোন জুড়ে কেবল ধু ধু ! হাহাকার বাজে।
উত্তুরে হিম হাওয়ায় নিষ্ফলা ধুলোর দাগে
কত্ত গল্প লেখা হয় !
আলু থালু সূর্যেরও আগে ।
আমার মাটি প্রতিবাদ করে ।
তাজা তরল রক্তে ভেসে প্রতিবাদ করে ।
এক নদী জল চেয়ে প্রতিবাদ করে ।
বিজয় দেখিনি, দালাল দেখেছি ।
জীবন দেখিনি , প্রাণ দিয়েছি ।
আজ হিংস্র পশুর নখরে নখরে , ছিঁড়ে খুড়ে যায় উঠোনের বুক
তবুও আগুন । তবু উন্মুখ,
চাতকী উঠোন ঝরা শিউলির ফুল টুকু চায় ।
এলোমেলো নিয়মের হাটে বিকিয়ে যাওয়া ভুলটুকু চায় ।
কত বিজয়ের আলোহীন রাত কেটে গেলো কারো দীর্ঘশ্বাসে
হু হু কান্নার বিষ নিঃশ্বাসে স্বপ্নহীন ফাঁপা জড়দেহের উৎপাত ।
মায়ের জায়নামাযে ছায়া, বাপের লাঙলের ধার
জংলার শূকরে মেরে খেলে , শিরোনামে " অপঘাত" !
আর নয় -
এবার মাটি মানুষ চায় ।
উল্টোপথের উলটো হাটা প্রতিবাদী মুখ ,
এত শক্তি , ক্ষমতা , এত প্রাণ উন্মুখ
এবার জমিতে লাঙল দেবে।
অসঙ্গতির বুক চিরে ভালোটুক
কাঁদা মাটির কালি মেখে আলোটুক
তুলেই নেবে , তুলেই নেবে ।
তারার আলোতে জোনাকীর সাথে ফোঁপানো কথন আর নয় ।
অমেরুদন্ডী হীন চেতনাতে সহবাস বিষ আর নয় ।
এবার জমিতে নতুন প্রভাতে আগুন দেব , আগুন জ্বালা !
সবুজ আগুনে ভরবো গোলা , আগুনা জ্বালা লাঙল চালা !
প্রাণে প্রাণ , সুর ও লিপিতে
গীতি, নাট্যে , নৃত্যে , মেলায়
লাঙল চালা , আগুন জ্বালা , লাঙল চালা , লাঙল চালা !
মনুষ্যত্বের মহোৎসবে
শিমুল পলাশ কদমের ঘাট
আউশ, আমন, সোনালী পাট
কামার, কুমোর , জেলেদের হাট
শাপলা শালুক , আবার হবে ।
শুধু একবার বীজ বুনে দাও, মানুষের বীজ !
(প্রথম পাঠ , বর্ষ বরণ ১লা বৈশাখ , ১৪০৮ বঙ্গাব্দ । সামান্য পরিবর্তিত , পূনঃপ্রকাশ ১লা বৈশাখ ১৪১৬ বঙ্গাব্দ , সামহোয়ার ইন ব্লগ।
ছবি কৃতজ্ঞতা , আন্তর্জাল - আমাদের প্রযুক্তি ওয়েব সাইট)
[ মূল পোস্টে উপরের লাইনটা ছিলো । ব্লগার বিপ্র ভাইজান না বুঝেই আমার উপর খেপ্লেন , তাই সরাসরি তার মন্তব্য থেকে কুপি জ্বালানো হইলো ঃ
ছবিটি চারুকলার তমাল বড়ালের তোলা। তার অনুমতিক্রমে প্রথমে আমাদের প্রযুক্তি-তে এখানে গত নববর্ষে প্রথম পোস্ট করা হয়েছিল অনলাইনে।
]
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।