I realized it doesn't really matter whether I exist or not.
আমাদের বাড়িটা খুব সম্ভবত মুক্তিযুদ্ধের পরে কেনা। আবার আগেও হতে পারে, ঠিক মনে নেই। টিনশেডের বাড়ি। মিরপুর এক নাম্বার থেকে খুবই কাছে। একসময় জায়গাটা ছিল মরুভুমির মতো।
সারাদিনে দু'একটা রিকশার দেখা মিলতো। কালের পরিবর্তনে সেই মরুভূমি এখন মাছের বাজারে পরিণত হয়েছে। আগে যে রাস্তায় দিনে দু'একটা রিকশার দেখা মিলতো, সেই রাস্তায় এখন "রাস্তাটা" দেখা যায় গভীর রাতের দু'এক ঘণ্টা। বুঝতেই পারছেন কতোটা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে এলাকাটা।
যাই হোক, আমাদের বাসার উত্তর-পশ্চিম কোণে একটা রুম আছে যেটাতে আগের মালিক মালপত্র রাখতো।
অর্থাৎ, স্টোররুম হিসেবে ব্যবহৃত হতো ঐ রুমটি। পরবর্তীতে আমরা ওটা ব্যবহার করতে শুরু করি। বলা বাহুল্য, আমাদের ঐ রুমটায় যথেষ্ট সমস্যা হয়েছে। হ্যাঁ, জ্বীনের কথাই বলছি। কোনভাবেই অস্বীকার করতে পারবেন না জ্বীন বলে কিছু নেই।
অবশ্যই আছে এবং আমরা তার বাস্তব প্রমাণও পেয়েছি। আমাদের বাড়িটা যেখানে নির্মিত, একাত্তরে সেখানে ছোটখাটো একটা পুকুরের মতো ছিল যেখানে নাম না জানা অসংখ্য মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল। অনেকে বলে, হয়তোবা এজন্যই আমাদের বাসার অবস্থা একটু খারাপ। মানে জ্বীন-ভূতের উৎপাত মাঝেমধ্যে সহ্য করতে হয়। এজন্য তাবিজ-কবচও কম করা হলো না।
যাই হোক, আসল কথায় আসি। বোনের বিয়ে হয়ে যাবার পর বোনের রুমটা আমি দখল নেই। কিন্তু রাতে থাকার সাহস করি না। কারণ, ঐ রুমটাই ছিল আগের বাড়িওয়ালার স্টোররুম, যেখানে [সম্ভবত] একসময় জ্বীনের বসবাস ছিল। কে জানে এখনো হয়তো আছে।
আমার মনে আছে আজ থেকে বেশ কয়েকমাস আগে একদিন রাতে ঘুমানোর সময় আমি দরজাটা সম্পূর্ণ খুলে দিয়ে ঘুমিয়েছিলাম। কিন্তু ঘুম থেকে উঠে দেখি ভিতর থেকে দরজাট ছিটকিনি লাগানো। আমি প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলাম। বুঝতে অসুবিধা হয়নি কাজটা কার। আমার স্পষ্ট মনে ছিল আমি দরজা লাগাইনি।
ভিতর থেকে দরজা লাগানো দু'জনের পক্ষে সম্ভব। এক, আমি নিজে। দুই, অন্য কেউ। সেই অন্য কেউটাকে জ্বীন হিসেবে ধরে নিতে ভুল করিনি।
সে যাই হোক, রুমটার আমি গালভরা একটা নাম দিয়েছি।
"শনির আখড়া"। নামটা বাসার সবাই পছন্দ করেছে। এখন আর তেমন উৎপাত হয় না। তবু ঘরটা দেখলেই কেমন যেন লাগে। এমনিতেই টিনশেডের অনেক পুরনো বাড়ি।
দেয়াল থেকে চুন খসে খসে পড়েছে জায়গায় জায়গায়। একপাশে শয়ে শয়ে পুরনো বই খাতার স্তুপ। ছোট্ট একটা ঘর। তার মধ্যেই আমার পড়ার টেবিল। হ্যাঁ, রাতে ঘুমানোর সাহস না করলেও পড়াশোনার কাজটা আমি ওখানেই করি।
অর্থাৎ, আমার পড়ার টেবিল অবস্থিত আমাদের বাসার "শনির আখড়া"য়।
ছবিঃ Nokia 5130 XpressMusic
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।