ফ্রম দ্যা হার্ট অফ ডার্কনেস
আজ ২৩শে মার্চ, পাকিস্তান দিবস। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে পাকিস্তান দিবস নিয়ে কোন আগ্রহ থাকার কথা নয় এবং নেইও। পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মোহ মুক্তি ঘটেছে অনেক পুর্বেই। সেই ৭০ সালেই পাকিস্তান দিবসে বাংলাদেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়নি।
তবে ইতিহাসে এইদিনের তাৎপর্য অন্যখানে।
এইদিনেই লাহোর প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিলো। পুর্ববাংলার নেতা শেরে বাংলা ফজলুল হক সর্বপ্রথম লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
ভারতীয় উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক হিংসা, বিদ্বেষ আর হানাহানির যে রাজনীতি তার মুলে ধর্মীয় বিভাজনে এই অন্চলের ভুখন্ড এবং সেই সাথে মানুষকে কেটে ফেলা। সাম্প্রদায়িক দেশবিভাগের সেই লিগ্যাসি এই অন্চলের মানুষদের এখনো দু:স্বপ্নের মতো তাড়া করে ফিরছে। অনেকেই ভারতবিভক্তির মুলে লাহোর প্রস্তাবকে মুল প্রনোদনাদানকারী হিসেবে অভিযুক্ত করেন।
বিতর্কিত মনে হতে পারে তবু ঐতিহাসিক বাস্তবতায় আমি লাহোর প্রস্তাবকে সমর্থন করি। সাম্প্রদায়িক লাহোর প্রস্তাব বাস্তবায়িত না হলে পাকিস্তান হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের আদৌ অভ্যুদয় ঘটতো কিনা সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দিহান। উপমহাদেশে অন্য অনেক পরাধীন জাতিগোষ্ঠির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম দেখে আমার সন্দেহ বিশ্বাসে পরিণত হয়।
ধর্মের ভিত্তিতে এই নিষ্ঠুর বিভাজন কি আদৌ গ্রহনযোগ্য? অবশ্যই না। কিন্তু ব্রিটিশরা
ভারতবর্ষ ছেড়ে যাওয়ার পর কিভাবে তা পরিচালিত হতো পারতো?
১) দুর্বল কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে পৃথক জাতিসত্তার জন্য পৃথক পৃথক পূর্ণ স্বায়ত্বশাসিত অন্চল।
এবং আমার বিবেচনায় সেটাই সবচে ভালো হতো।
সম্প্রদায়গত অবিশ্বাস, এলিটদের আপত্তি সেই প্রস্তবনাকে কখনোই সামনেই আসতে দেয়নি।
২) প্রত্যেক জাতিসত্বার জন্য পুর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র।
ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতীয় জাতিয়তাবাদের আড়ালে হিন্দু জাতীয়তাবাদ অনেকটাই বিকশিত। হিন্দুত্ববাদভিত্তিক ভারতীয় জাতিয়তাবাদ চেয়েছে অখন্ড ভারত।
লাহোর প্রস্তাব কোন উদ্যেগ নয়, বরং এক ধরনের প্রতিক্রিয়া। পিছিয়েপড়া মুসলমানদের শেষ খড়কুটো।
কি ছিলো লাহোর প্রস্তাবে?
লাহোর প্রস্তাবে ছিলো ভারতের পশ্চিম এবং সেই সাথে পুর্বাংশে মুসলমানদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রস্তাবনা। দুর্বল কেন্দ্রের অধীনে পৃথক জাতিসত্বার জন্য শক্তিশালী প্রাদেশিক শাসনের মতো আপাত প্রগতিশীল ভাবনাও লাহোর প্রস্তাবে ছিলো। সেই লাহোর প্রস্তাব পরবর্তীতে দিল্লিতে গিয়ে পরিবর্তিত হয়ে শুধুমাত্র ভারত এবং পাকিস্তান
সৃষ্টির প্রস্তাবনায় দাঁড়ায়।
যে পাকিস্তান জন্মগতভাবেই ছিলো এক ভংগুর রাষ্ট্র।
ইতিহাসের এই প্রতারণা আজও আমাকে ভাবায়। সাম্প্রদায়িক সেই লাহোর প্রস্তাব অবিকৃতভাবে বাস্তবায়িত হলে সেই ৪৭ এ পেয়ে যেতাম স্বাধীন বাংলাদেশ।
সাংবাদিক হামিদ মীরে লেখায়
"লাহোর প্রস্তাবে আসলে কি ছিল" লাহোর প্রস্তাব সম্পর্কে জানা যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।