সারাদিন কাজ শেষে বাড়ি ফিরে একটু ফ্রেশ হয়ে বসে পড়ি রেডিও টা খুলে, এদিক সেদিক নব টা ঘুরাতে থাকি, ভেসে আসে হরেক রকম শব্দ। ১৫ মিটার ব্যান্ড টা তে কিছুই নাই, ২০ মিটার ব্যান্ড টা তে বেশ কিছু ষ্টেশন শোনা যাচ্ছে, ৪০ মিটার আরো রাতে পাওয়া যাবে। ঘুরে ঘুরে কিছু জাপানি, কিছু ইওরোপিয়ান, মাঝে মাঝে ভারতিও ষ্টেশন শুনতে থাকি চা নাস্তার সাথে সাথে।
না না, আমি দুর্গম কোনো পাহাড়ে কিংবা অতি অতি অজ-পাড়া গায়ে (হুমায়ুন চাচ্চু [নাকি ভাই বোলবো!!] যদিও বলেছেন অজ-পাড়া গা মানে বিশাল গ্রাম) থাকি না, এই ঢাকা শহরেই থাকি, ঐতো আসে পাশের ফ্ল্যাট থেকে ভেসে আসছে ২০০৯ সালের বেহেস্তি আনন্দ- হিন্দি গান আর সিরিয়ালের সুমধুর আওয়াজ। নিশ্চয় ভাবছেন টিভি রেখে এই যুগে কেও রেডিও শুনে!! আমি শুনি, পৃথিবী যুরে আরো কোতো মানুষ শুনে, নাহলে এতো রেডিও ষ্টেশন কেন প্রচার করে? ওহ্, কথা বল্তে বল্তে খেয়ালি করিনি খুব পরিষ্কার এবং শক্তিশালী একটা ষ্টেশন শোনা যাচ্ছে, ভালো করে শুনলাম ষ্টেশন আই-ডি "ভি-কে-২-আই-আর", তার মানে অস্ট্রেলিয়ান কোন ষ্টেশন।
চা নাস্তা শেষ, হাত টা প্যান্ট এ মুছে নিয়ে রেডিওর মাইক্রোফোন টা টেনে নিয়ে বল্লাম, ভিকে-টু-আইআর দিস ইস সিয়েরা-টু-ওয়ান-রোমিও-চার্লি... উতফুল্লো উত্তর ভেসে আসলো "সিয়েরা-টু-ওয়ান-রোমিও-চার্লি মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড টুটুল গুড ইভিনিং টু ইউ, ইয়োর সিগনাল কামিং হিয়ার ফাইভ নাইন......", কথা চলতে থাকলো টমি-র সাথে। অবাক হোচ্ছেন? বল্তে ভুলে গেছি একেবারেই, এটি একটি টু-ওয়ে রেডিও, মানে এই টা দিয়ে কথা শোনাও যায় আবার বলাও যায়, সহজ বাংরেজী তে অয়্যারলেস। আমরা কিন্তু ইন্টারনেট অথবা টেলিফোনের মাধ্যমে কথা বলছি না, কথা হচ্ছে সরাসরি আমার বাসার রেডিও ও টম এর বাসার রেডিও-র মধ্যে। নিচে একটি তেমন রেডিওর ছবি:
যদিও এটি অনেক পুরানো একটি শখ কিন্তু আমাদের দেশে তেমন একটা চল নাই। মূলত আমরা নিজেদের বেতার যন্ত্রের সাহায্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের (+ নিজের দেশের) অ্যামেচার রেডিও অপারেটর দের সাথে কথা বলি, ভয়েস চ্যাটিং বলতে পারেন, আমরা বলি ডিএক্সিং (dx=distance exchange/communication). এই ডিএক্স কে কেন্দ্র করে অনেক রকম মজার একটিভিটি আছে:
QSL card collection, DX Country hunting, Communicating through Satellites & Space Station, Operating from Island, Operating from Summits, Dxpedition, Fox-Hunting/Radio Directional finding, etc.
আমাদের দেশে অ্যামেচার রেডিও অপারেটর কম থাকার কারনে আমরা রেডিও তে কথা শুরু করলেই বিভিন্ন দেশের অশঙ্খ মানুষ আমাদের সাথে কথা বলতে চায় (বাংলাদেশের চাহিদা বেশি, ডিমান্ড সাপ্লাই কার্ভ মনে আছে?)।
মনে পড়ে যায় সাইক্লিস্ট সায়িদ ভাই এর উক্তি: সব-ই এই লাল সবুজ এর জন্য।
পাঠক দের ভাল লাগলে বিস্তারিত লিখব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।