জীবনটা যেন এক বর্ণীল প্রজাপতি
মাস্টার্স পাস করার পর পরই তেমন কোন চাকুরীর চেষ্টা করিনি। পার্ট টাইম চাকুরীই পছন্দ ছিল। আর, তখন আমার পুরো মনযোগ ছিল, ছবি আঁকা নিয়ে। ছবি আঁকা নিয়েই আমি বেশি ব্যস্ত থেকেছি। আর, আমাদের স্যার জানিয়েছেন, যত বেশি আউটডোরে যাবে, তত বেশি বাইরের রূপ নিজ চোখে দেখে ভালভাবে কালার বসাতে পারবে।
অনেকটা তার এই কথাটা রাখতেই আমি এক এন.জি.ও এর হয়ে একটা কাজে গেলাম চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানায়।
আমার সাথে, বা, বলা ভাল যে, আমি যাদের সাথে গিয়েছিলাম ওই কাজে, তাদের সাথে আমার অফিসিয়াল কাজের বাইরে সম্পর্ক ছিল, খালা ভাগ্নির মত।
আর, তিন জন ছেলেও গিয়েছিল। তাদেরকেও আমি আংকেল বলেই ডাকি। যাহোক প্রজেক্ট বেসিস একটা কাজে গিয়েছিলাম এক সপ্তাহের জন্য।
তো , আমরা গিয়েছিলাম, সাত দিনের জন্য ঠিকই। কিন্তু, ওইখান থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারলে, আমাদেরই লাভ হবে। কারন, ফিরে এসে আমাদেরকে আবার ওই কাজের রিপোর্ট কম্পোজ করতে হবে। তারপর বই আকারে তৈরি করে চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতে হবে
তা, আমরা কাজ শেষ করতে থাকা অবস্থায় , দুপুরের দিকে একটু ফ্রি হলে, আমার সাথে থাকা আমার আন্টির মত যিনি, ওই শাহনাজ আন্টি প্রস্তাব করলেন, আমাকে দেখিয়ে, এই মেয়ে তো ঢাকা থেকে এত দূরে কখনো আসে নাই। চল আমরা সবাই বান্দারবানের "মেঘলা"তে যাই।
আমি তখনও জানি না, মেঘলা আসলে কি, বা, কেমন জায়গা।
ওদের সাথে যেতে রাজি হোলাম। নতুন জায়গা দেখা হবে। ছবি আঁকার উপকরণ পাওয়া যাবে। ছবি তোলা হবে।
হুম! অনেক মজা হবে।
তারপর আমরা বান্দারবান যাওয়ার টিকেট কাটলাম। লোকাল বাসেই গেলাম। বাসে করে যেতে যেতে অনেক মজা হয়েছিল। আমরা ৪/৫ জনে এমন ভাবে কথা বলছিলাম বাসে, যেন আমরা বাস টা রিজার্ভ করেছি।
আমরা সবাইই কোন না কোন গান গেয়ে উঠছিলাম। আমি গেয়ে উঠলাম............"এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হত , বলত?"
এইভাবে আমরা পৌছে গেলাম বান্দারবান।
আমরা ওই জায়গায় গিয়ে ভেতরে ধুকার জন্য টিকেট কাটলাম।
তারপর, ঢুকেই দেখি ঢালু পথ চলে গিয়েছে। প্রথমে ভেবেছি ওটা সিড়ির মত।
পরে দেখি হেঁটে যেতে যেতে, এটা আসলে সিড়ি নয়। ইটের পথ চলে গেছে ঢালু হয়ে। হেঁটে যেতে যেতে পরে যাবার অবস্থা। আমাকে আর শাহনাজকে মোশাররফ আংকেল ধরে ধরে নামাল নিচ পর্যন্ত।
মেঘলা অনেক বড় জায়গা।
এক দিক দিয়ে ঘুরে, অনেক উঁচুতে পাহাড়ে উঠে আবার আরেক দিকে নেমেছি। আর, ওইখানে অনেক কলা গাছ দেখলাম। কিন্তু, ওইসব কলা গাছে কলা ধরেনি। কলার গাছগুলোর পাতায় দারুন কালার। সবুজ-হলুদ।
দারুন। বলে বোঝাতে আপ্রছিনা। ছবি দিয়ে দেখাতে পারলে ভাল হত। কিন্তু, ওই ছবিগুলোর প্রিন্ট নাই আপাতত।
এর মধ্যে আবার সাগর আংকেল কলা কিনে ফেলেছে এক কাঁদি।
ছোটো ছোট কলা। নিজেও খাচ্ছে। আমাদেরকেও সাধলেন। আমরাও দেখি খুধা পেয়ে গেছে ঘুওতে ঘুরতে। আমরাও খেতে শুরু করলাম।
দেখতে দেখতে সব কলাই আমরা কয়েকজন মিলে খেয়ে সাফ করে ফেললাম।
ঘুরে ঘুরে আমরা অনেক দিকেই গেলাম। দড়ির ঝুলন্ত সেতুতে ঊঠে ওই পাড়ে গিয়ে উঁচু একটা মিনারের মত আছে, ওইটার উপর গিয়ে বসে, নিচে সিড়িতে দাঁড়িয়ে অনেকগুলো ছবি তুললাম।
সারাটা বেলা কখন যে কেটে গেল! এবার আমাদের ফেরার পালা। আবার চট্টগ্রাম যেতে হবে।
কাল একটু কাজ আছে ওইখানে। তারপর আমরা কক্সবাজারের পথে যেতে পারি। যদি কাজ গুছিয়ে উঠতে পারি।
সন্ধায় আমরা বাসে উঠলাম, চট্টগ্রামের উদ্যেশ্যে.........
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া......
একটি ধানের শিষের উপর একটি শিশির বিন্দু!
বাসে করে চলেছি, আর ভাবছি.........এই পথ যদি না শেষ হত......!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।