কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস
নানান ঝামেলায় থাকি । সকল কথার জবাব কিরুপে দিব । গত দুইদিন কাজের ফাঁকে ফাঁকে কী-বোর্ড , কম্পিউটার টেবিল এইসব পরিষ্কারও করিতে হইতেছে । ময়নার সাথে চ্যাটে বসিলেই লুল আটকানো দায় হইয়া পড়িয়াছিল আরো পূর্ব্বে হইতেই । এতদিন ভালোয় ভালোয় ছিল, রাত্তিরে পড়িলে প্রত্যুষে শুকাইয়া যাইত ।
বিশেষ গা করি নাই । কিন্তু এখন উপায় নাই । অকল্যান্ড যাইতেছি ভ্রমণে । ফিরিব বন্ধুকে লইয়া । সে বুঝিতে পারিলে কেলেঙ্কারির বাকি থাকিবে না ।
এখানকার সমুদ্রতটে মনোহর রমণীকূল স্বল্পবসনে ঘোরাঘুরি করিয়া থাকে । তবু নিজের প্রত্যাশা উচ্চ করিবার সাহস পাই না । আমার আলুলায়িত শ্মশ্রু দেখিলেই উহারা কেমন সংকোচে সরিয়া যায় । বহুবার এরুপ হইবার পরে এইজাতীয় দুরাশা বাদ দিয়াছি । তবে অন্তর্জালের জগতে ভিন্ন কথা ।
আর তাছাড়া তাহা শাস্ত্রসম্মতও বটে । শাস্ত্রে কহিয়াছে সুরমাদানির ভিতরে কাঠির মত প্রবিষ্ট হওয়া ব্যতীত ব্যভিচারের শাস্তি প্রযোজ্য হইবে না । তাই ময়নাই ছিল ভরসা ।
গণকযন্ত্রটির সহিত আজ একযুগেরও বেশি সময় ধরিয়া সহবাস হইলেও মাঝে মাঝে মনে হয় ইহাকে বুঝি না । এক বন্ধু সুকেশ তরুনের মাথাকে যন্ত্রসাহায্যে চকচকে টাক করিয়া দিলে আমি বিমুগ্ধ হইয়া পড়িয়া থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা ।
এক্ষণে ময়না বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া আমাদের অন্তরঙ্গ আলাপসমূহ বারোয়ারি হাটে ছাড়িয়া দিলে , পাড়াসমেত লোকের ঢিঢির মুখে, আমার সমস্ত অবিশ্বাস গিয়া পড়িল হতচ্ছাড়া গণযন্ত্রটির উপরেই । এ কাল-যন্ত্র অসম্ভবকে সম্ভব করিতে পারে । ময়না যে এই বিস্তারিত দুরভিসন্ধি লইয়াই মাঠে নামিয়াছিল তাহা আমার নিকট দিবালোকের মত পরিষ্কার হইল এক্ষণে । নিজের উপর হতাশা জন্মিল । কেন আরো আগেই বুঝিতে পারিলাম না ।
রাত্রির পর রাত্রি একটি বৃহন্নলাসম ষড়যন্ত্রীর সহিত কিরুপে এই আলাপণ আমি চালাইলাম , তাহা ভাবিয়াই কূল পাইতেছিলাম না । বিরতি নিলাম নিজ ভাবনার সহিত অন্তরঙ্গতার নিমিত্ত । তবু সকলকে এই বলিয়া গেলাম, এ নিশ্চয়ই গণযন্ত্রটির কোনরুপ কারসাজি । ইহা দারা যে অসাধ্য সাধন হয় সেই বিষয়ে বিশ্বাসের ঘাটতি আমার ছিল না । আমার শ্মশ্রুমন্ডিত ছবি ইহা বিশ্বব্যাপী ছড়াইতে পারিলে বিশ্বাসের জায়গা আর কোথায় থাকে !
অকল্যান্ডের সমুদ্রতটে বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম , পাড়ার লোকের রক্তচক্ষুর সামনে কিরুপে দাঁড়াইব , কি নিয়া দাড়াইব ।
স্বল্পবসনা রমণীরা, ক্ষুদ্র বালকবালিকারা পর্যন্ত এই মনোরম গ্রীষ্মে হাঁটুজল, কবন্ধজলে কেলি করিতেছে । আমি খাড়ুজলে লাইফ-জ্যাকেট নিয়া নামিয়াছি । মন বিক্ষিপ্ত রহিয়াছে কয়েক দিবস । বেঘোরে প্রাণ যাইবার সম্ভাবনা সমূহ । আপন দুশ্চিন্তায় মগ্ন, হয়ত খেয়াল করিব না কখন জোয়ার আসিয়া টানিয়া লইয়া যাইবে ।
ইয়াহুর বদমেজাজি কর্মীণিটিকে দুরালাপনে পাইলাম । সুহৃদপ্রতিম একজন পরামর্শ দিয়াছিলেন উহাদিগের সহিত আলাপ করিয়া দেখিতে । এত বস্তু তাহারা নিত্য ঘাঁটিয়া বেড়ায় কোন না কোনরুপ সম্ভাব্য অবস্থার খোঁজ দিতে পারিবে যাহার সাহায্যে আমার অবস্থানটিকে ঘোলাটে করা যাইবে । বদমেজাজি মাগীটি উল্টা খ্যাঁচখ্যাঁচ করিয়া উঠিল, আমার আইডি পাসওয়ার্ড শুনিয়াই । প্রথমে বুঝিয়াই পাইলাম না ।
আমার আইডিখানা নিয়া তাহাদেরও কেন এত ক্ষোভ । পাড়ায়, মহল্লায় এমনকি বিশ্বব্যাপীও লক্ষ্য করিয়াছি আমার আইডি নিয়া ষড়যন্ত্র সেই প্রথম দিবস হইতেই । কিন্তু ইয়াহুর আমি কি ক্ষতি করিলাম বুঝিতে উঠিয়া পারিতেছিলাম না । কর্মীণিটির কথা কিঞ্চিৎ থিতু হইয়া আসিলে কিছুটা বুঝিলাম তাহার রাগের নিমিত্ত । সার্ভার ঘর পরিষ্কার করিতে করিতে তাহাদের নাকি প্রাণান্ত হইতেছে বিগত কয়েক মাস যাবৎ ।
লুলে সার্ভারসমূহ কয়েকদিন পর পর নাকি ওভারফ্লাডিং হইতেছে । এই অপিচ অধমকেই নাকি তাহারা লন্ঠন প্রজ্জলিত করিয়া খুঁজিতেছে । বহির্গামি সমস্ত লুল নাকি আমার আইডি হইতেই তাহাদের সার্ভারে জমা পড়িতেছে ।
মিনমিন করিয়া তাহাদের নিকট জানিতে চাহিলাম, বহিঃস্থ কোনো আইপি হইতে আমার আইডিখানায় লগইন করিবার কোনরুপ প্রচেষ্টার কথা তাহারা শুনিয়াছে কিনা । বলিলাম পুরাপুরি হ্যাঁ/না না বলিলেও চলিবে ।
মধ্যস্ত কিছু দিয়াই কাজ চালাইয়া লইতে পারিব । আইপির উল্লেখমাত্র বদমেজাজি মাগীটি খ্যাঁকাইয়া উঠিল । আইপি যদি তাহার সনাক্ত করিতে পারিতই তাহা হইলে এতদিনে আমি নাকি সার্ভার ধ্বংসের অপরাধে লাল দালানে পঁচিতাম । দুরাচার আইএসপি নাকি ব্যবহারকারীর ব্যাক্তিগত তথ্যের দোহাই দিয়া আমার অবস্থান নির্ণয়ে কোনরুপ সাহায্য করিতেছে না তাহাদের ।
মেজাজ বিরুপ হইয়া উঠিতেছিল বলিয়া তাহার সহিত কথাবৃদ্ধি করিলাম না ।
আইপি ঠিকানা দুএকটি জোগাড় করা আর কিরুপ কষ্টকরই বা হইবে । সিসকোর ওয়েবসাইটে কত আইপিই মিলিবে উদাহরণসমূহ ঘাঁটিয়া দেখিলে । সুহৃদের সহায়তায় বানাইয়া লইলাম দুইটি । ঐগুলি কি ফিনল্যান্ডের নাকি চীনের তাহা লইয়া বিশেষ মাথা ঘামাইলাম না । পাড়ার লোক কি আর আমার সুহৃদের মত অত মাথাওয়ালা ।
উহাদের নিকট যাহা চীনের তাহাই বাংলাদেশের । দীর্ঘদিনের লালিত শ্মশ্রু বিসর্জন দিতে মনঃপীড়া হইলেও কলঙ্কমোচনের নিমিত্ত বলিয়া মনকে বুঝাইলাম । ফরাসি অনুকরণে ছাঁট দিয়া, গায়ে মুখে নানান রকমের প্রসাধণী মাখিয়া ছবিও তুলিয়া লইলাম কয়েক গাছি । ফিরিলাম বন্ধুকে না লইয়াই । কলঙ্কমোচনের কাজে আমাকে দেখুক , তাহা কিছুতেই চাহিতেছিলাম না ।
সপ্তাহের বিরতির পরে পাড়ায় ঢুকিয়া কিছুটা সঙ্কোচ হইলেও সামলাইয়া লইলাম ধীরে ধীরে । ইনাইয়া বিনাইয়া অনেক কথা বলিতে হইবে । লজ্জা পাইলে চলিবে না । অপরাধ করিয়া বাঁচিয়া যাইবার একমাত্র উপায় হইল কোনমতেই তাহা স্বীকার না করা, সে শিক্ষা বাল্যকালেই পাইয়াছি । এখন আর আগের মত দুর্বল নই ।
দুই দুইটা আইপি ঠিকানা এবং ফরাসি ঘরানার শ্মশ্রু লইয়া কয়েকগাছি ছবিও আছে । বাছিয়া বাছিয়া পাড়ার এমন দুইজনকে ছবি দেখাইবো বলিয়া ঠিক করিলাম , আমাকে স্বচক্ষে দেখিবার সম্ভাবনা যাহাদের বিন্দুমাত্র নাই । বিন্দুপ্রতিম সম্ভাবনাকেও এইখানে অগ্রাহ্য করিয়া এড়াইয়া যাওয়া ঠিক হইবে না ।
দীর্ঘদিনের অন্তর্জালিক সহবাসে ময়না নাম্নী বালিকাটির অনেক দুর্বল দিক আমার নখদর্পনেই ছিল । একটি সুলিখিত নাট্য রচনায় সমস্যা হইবার কথা নহে ।
দরদ মিশাইয়া রচনা করিলাম । চিরশত্রুদের দিকে সন্দেহের তীর ঘুরাইয়া দিবার কৌশলটি প্রাচীণ হইলেও কার্যকারিতা পরীক্ষিত । সেই কৌশলেই যাহারাই, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সময়ের জন্য হইলেও বিন্দুমাত্র অসূয়াভাব প্রদর্শণ করিয়াছে তাহাদের ভরপেট কটুকথা বলিয়া লইলাম । ইহাতে আমার মূল অপরাধের তুলনায় তাহাদের ভূমিকাটিই মূখ্যরুপে প্রতিয়মান হয় । লোকের অস্থিরতার দিকবিভ্রম ঘটে ।
আর আত্নজৈবনিক কিছু কারিশমার কথাতো থাকিলোই । কারিশমা যে লোক ঘটে করিয়া বহিয়া বেড়ায় তাহার অপরাধ ম্লান হইয়া যায়, অন্তত সাধারণের দৃষ্টিতে সেই ব্যাপারে কিঞ্চিৎ ভরসা আছে । নিজে নাটক করিয়া প্রতিপক্ষকে অভিনয়ের অপবাদ দিতে হয় , এইটিও পরীক্ষিত কার্যপ্রণালী ।
পাড়ায় মেকি দম্ভ লইয়া আবার ঘুরিতে লাগিলাম , সেই পুরাতন শাস্ত্রবাণী মনে করিয়াই । অপরাধ করিয়া কস্মিণকালেও লজ্জিত হইবে না ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।