I am fine
আমাদের এই ছোট ঢাকা শহরে বর্তমানে বহুসংখ্যক লোকের বসবাস। দিনে দিনে এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে হারে লোকসংখা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হারে আমাদের আবাসন সংকট এবং বিনোদনের স্থান আরো প্রকট আকার ধারণ করছে। ঢাকা শহেরে যারা বসবাস করে তাদের জন্য বিশেষ করে ছোটদের জন্য এমন কোন ভালো জায়গা নেই বলল্লেই চলে। যা দু একটি স্থান আছে তার পরিবেশ যে কিরকম একমাত্র ভুক্ত ভোগীরাই বলতে পারবেন।
আজ প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে একটা সমস্যার কথা প্রায় গার্জেন পক্ষ থেকে শোনা যায় তা হলো এখনকার ছেলেমেয়েরা বাবা-মার কথা শোনে না, একগুয়ে, নিজের স্বাধীন মত চলতে চাই ইত্যাদি নানা জাতীয় কথা। অথচ একটা জিনিস চিন্তা করলে সহজেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে সেটা হচ্ছে আমাদের শৈশব কাল । প্রবিন দের কথা বাদই দিলাম । আজ থেকে প্রায় দশ বিশ বছর আগের কথাও যদি হিসাব করি তাহলে বলা যায় এই সময়ের মধ্যে ও যারা তাদের শৈশব অতিবহিত করেছে গ্রামে তাদের শৈশবটা ও খুব একটা মন্দ ছিল না। তাদের শৈশব ছিল অত্যন্ত আনন্দময় যা তারা উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছে।
আমরা দেখেছি ঘাস-লতাপাতা,গাছ-পালা নদ-নদী,পাখি,পাখির কলতান,ধান শশ্যের ক্ষেত, ভোরের আলো, শিশির ভেজা মাঠ,বনফুল,আম কাঠালের বাগান নানা জিনিস। সেই ক্ষেত্রে বর্তমানের শিশুদের কথা চিন্তা করলে বলতে হয় তাদের শৈশব বলতে আদৈ কোন কিছু নেই। তারা এসব কিছুই চেনে না। এরা সকাল থেকে রাত অবদি শুধু ইট পাথরের চার দেওয়ালের মধ্যে বাধাঁ থাকে। তাদের বেশির ভাগ সময় কাটে সেল ফোন টিপাটিপি করে, আর কারও কারও ক্ষেত্রে কম্পিউটার গেইম খেলে।
এরা কোনটা কি গাছ,কোনটা ফসলের খেত তা ভালো করে বলতে পারে না। তারা খেলতে পারে না, প্রকৃতির কাছে যাবার সুযোগ পায় না, তারা শৈশবের স্মৃতিময় সুন্দর পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। এখনকার বাচ্চাদের মানষিক বিকাশ হয় না বলল্লেই চলে। লেখাপড়ার পাশা-পাশি প্রতিটি মানুষের প্রকৃত মানুষ হিসাবে গড়ে উঠার জন্য ,তার শারীরিক এবং মানষিক উন্নতির জন্য পারবারিক ও পরিবেশগত পরিবেশ অত্যন্ত জুরুরী। কিন্ত কোথায় পাবে তারা এ পরিবেশ? আছে কি ঢাকা শহরে কোথাও এমন জায়গা? যা বলছিলাম, বোটানিক্যাল গার্ডেন সম্পর্কে ।
যদি কেও ইদানিং এই গার্ডেন দেখে থাকেন তবে সেই বুঝতে পারবে যে এই গার্ডেনের কি বেহাল অবস্থা। আর এই নাকি আমাদের জাতীয় উদ্যান। গার্ডেন যদি গার্ডেনের মত না হয় তাহলে কি তাকে গার্ডেন বলা যায়? শুধু বিরাট জায়গা আর কিছু গাছ থাকলেই কি গার্ডেন হয়ে যায়? কি দেখবো আমরা সেখানে গিয়ে ? নেই কোন সুন্দর ফুল, নেই পাখি, আর গাছ গুলোর অবস্থা গুলো দেখলে মনে হয় কত বছর যে এর পরিচর্যা করা হয় না তা দেখলেই বোঝা যায়। পুরা এলকা জুড়েই নোংড়া পরিবেশ। নেই কোন গাছের পরিচিতি।
বসার কোন জায়গা নেই। কেও যদি সখ করে ঘাসের মধ্যে একটু বসতে চায় তা তারা পারবে না কারণ সমস্ত জায়গা জুড়ে প্রসাবের গন্ধ ,নোংড়া এক কথায় বলা যায় অত্যন্ত অস্বাস্থ কর পরিবেশ। সমস্ত এলাকা জুড়ে একশেণীর বাজে দালাল লোকদের আনা গোনা । সবচেয়ে বড় কথা, কেও যদি ওখানে গিয়ে বাথরুম অথবা টয়লেট ব্যবহারের প্রয়োজীয়তা অনুভব করে সেটা সে পারবে না। কোন বাথরুম কিংবা টয়লেট চোখে পড়ে না।
যা একটা দুটো আছে তাতে কার সাধ্যি নেই সেখানে গিয়ে সে প্রয়োজনীয় কাজ সারবে। একদম ওপেন,দরজা বিহীন,পানি নেই, সমস্ত জায়গা জুড়ে মলমূত্র ভিজা স্যাতসেতে ,পোকামাকড় ঘিন ঘিন করছে ভাঙ্গা ঘর । নেই কোন বাচ্চাদের খেলার জায়গা অথবা খেলার কোন সামগ্রী কিংবা একটু নাস্তা করার জায়গা। এই যদি গার্ডেনের অবস্থা হয় তাহলে ঢাকা শহরের মানুষ বিশেষ করে শিশুরা কোথায় যাবে ঘুরতে? কিভাবে তারা গাছ পালা প্রকৃতি চিনবে? তাদের বিনোদনের জায়গা কোথায়? এসব ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কি কোন দায়-দায়িত্ব নেই? এটা কি ভ্রমনের উপযোগী করে তোলা খুবই কঠিণ কাজ?ঢাকা শহরের প্রায় সব জায়গা গুলোই এরকম অবস্থা । অথচ শুধু একটু রক্ষণাবেক্ষনের দ্বারা এবং পরিচর্যার মাধ্যমে সরকার এই জায়গা গুলোকে দেশী- বিদেশী পর্যটকদের জন্য ভ্রমনের উপযুক্ত ব্যবস্থা করে তুলতে পারে।
এতে সরকারের লাভ ছাড়া কোন ক্ষতির সম্ভবনা তো নেই। সবশেষে কর্তৃপক্ষের দুষ্টি আর্কষণ করে বলতে চাই শহরের মধ্যে এই ভ্রমণের জায়গা গুলোকে ভ্রমণের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য ব্যবস্থা নিতে। কর্তৃপক্ষ যদি সে ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয় তবে উনারা চিন্তা করতে পারেন ভ্রমেণের এই জায়গা গুলোকে বেসরকারী খাতে ছেড়ে দিতে। তাতেও যদি আমাদের এবং আমাদের সকল শিশুদের মানষিক বিকাশেরে কোন জায়গা পাওয়া যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।