আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পর্যটন ঃ অপরূপ সোন্দর্য্য সীতাকুন্ড ইকোপার্ক



View this link] পাহাড় এবং সমুদ্র বরাবরই আকর্ষণ করে ভ্রমন পিয়াসিদের। প্রকৃতির নিবিড় ছোঁয়া আর বুক উজার করা সৌন্দর্য মুহুর্তেই ভুলিয়ে দেয় জীবনের যাবতীয় হতাশা। শীত এলেই শুরু হয় পর্যটন মৌসুম। পাহাড়ী প্রকৃতির একান্ত সান্নিধ্য পেতে আর উচ্ছল ঝর্ণার শীতল স্পর্শ পেতে হলে সীতাকুন্ড ইকোপার্কই হলো প্রকৃত স্থান সীতাকুন্ড পৌরসদর থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে গেলেই ফকিরহাট এলাকায় সীতাকুন্ড বোটানিকেল গার্ডেন ও ইকোপার্ক। প্রধান সড়ক থেকে পূর্বদিকে এক কিলোমিটার রাস্তা গেলেই ইকোপার্কের প্রধান ফটক।

এখানে আগত দর্শনার্থীদের একটু থামতে হবে। কারণ, জনপ্রতি দশ টাকা করে টিকিট কাটতে হবে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য টিকিটের মূল্যে ছাড় রয়েছে। এরপরই পার্কের সৌন্দর্য পথ মেলে যাবে আপনার সামনে। আপনি ইচ্ছা করলে গাড়ী নিয়ে(যদি থাকে) কিংবা পায়ে হেঁটে গাছ-গাছালির সুশীতল ছায়ায় শুরু করুন পাহাড়ের আঁকা-বাঁকা পথযাত্রা।

তবে আরোহন শুরু করার আগে ইকোপার্ক সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন পর্যটন অফিস থেকে। প্রধান গেইট দিয়ে পার্কে ঢুকলেই পর্যটন অফিস। অফিসের সামনে প্রস্তর ফলকে উৎকীর্ণ আছে ইকোপার্কের মানচিত্র। সুদৃশ্য ল্যান্ডস্কেপ থেকে দর্শনীয় স্থানগুলো বাছাই করে নিতে পারেন। বিস্তারিত জানতে পর্যটন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা গাজীর উদ্যোগে স্থাপিত মিনি লাইব্রেরী থেকে একটু পড়াশুনাও করে নিতে পারেন।

কিছু তথ্য জানা থাকা ভালো নয় কি? অফিসের পাশেই রয়েছে অর্কিড গার্ডেন ও গোলাপ বাগান। ভ্রমনের শুরুতে কিংবা ফেরার পথে তা দেখে নিতে ভুলবেন না যেন ! কিছুদুর উঠলেই রয়েছে সুপ্তধারা জলপ্রপাত। ঝর্ণার øিগ্ধতা পেতে হলে সিঁড়ি ধরে নেমে যান পাহাড়ের তলদেশে। বেশ কিছু সিঁড়ি অতিক্রম করলেই একটি ছাউনি। সেখানে একটু বিশ্রাম নিয়ে পাহাড়ী ঢাল বেঁয়ে নীচে নামতে হবে সর্তকতার সাথে।

না হলে গড়িয়ে পাহাড়ের গভীর তলদেশে পড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে হলে নীচে নানেমে উপায় নেই। ্ তবে পাহাড়ী ছরা ধরে পাথুরে পথ ধরে পানির শীতলতা নিতে নিতে পৌঁছানো যায় ঝর্ণার একেবারে নীচে। শত ফুট ওপর থেকে অভিরাম গড়িয়ে পড়া ঝর্ণাতে একটু ভেজা বা উঞ্চতা আহরনের আনন্দ আলাদা। সহস্রধারা জলপ্রপাত নামে আরেকটি ঝর্না আছে ইকোপার্ক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের শেষ সীমানায়।

তিন’শ ফুট সিঁড়ি ভেঙ্গে এবং কিছু পাহাড়ি পথ বেয়ে চলে যাওয়া যায় ঝর্ণার পাদদেশে। এখানে এসে পানির পানির øিগ্ধ পরশ পাওয়ার লোভ সামলানো দায়। লোভ সামলাতে পারেননি আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলামও। তাইতো তিনি এই ঝর্ণার পরশ নিতে ১৯২৬ সালে ও ১৯২৯ সালে ছুটে এসেছিলেন। রচনা করেছেন তাঁর বিখ্যাত গান “আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ।

ঐ পাহাড়ের ঝর্ণা আমি উধাও হয়ে রইগো”। পাহাড়ের গায়ে প্রস্তর ফলকে উৎকীর্ণ আছে সেই পঙতিগুলো। ঝর্ণা দেখে উপরে এসে কিছু খেয়ে এবং গলাটা ভিজিয়ে নিতে পারেন দোকান থেকে। দাম একটু বেশিই নেবে। কারণ পণ্যগুলো অনেক উপরে বয়ে আনতে হয় যে ! পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে উঠে ডুবন্ত সুর্য ও সমুদ্রতট দেখা যাবে পশ্চিমে তাকালে।

ছবির মতো দেখতে অদুরবর্তী সমুদ্রের রূপ না দেখলে বুঝা যায়না। পার্কের উত্তর পাশেই রয়েছে চন্দ্রনাথ মন্দির। যা কিছু সুন্দর ঃ ১৯৯৬ একর পার্কটি দুই অংশে বিভক্ত। এক হাজার একর জায়গায় বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ৯৯৬ একরজায়গা জুড়ে ইকোপার্ক এলাকা। ৩টি পিকনিক স্পট, ৮টি বিশ্রাম ছাউনি সম্বলিত ইকোপার্কে রয়েছে- মেছোবাঘ, ভালুক, মায়াহরিণ, বানর, হনুমান, শুকর, বনরুই, সজারু, বনমোরগ প্রভৃতি পশু।

দাড়াঁশ, গোখরা, লাউডগা, কালন্তি প্রভৃতি সাপ থাকলেও শীতকালে বের হয় কম। দূলর্ভ কালো গোলাপসহ ৩৫ প্রকার গোলাপ, জবা, নাইট কুইন, লিলি, স্থল পদ্ম, মোসান্ডা, রংগন, রাধা চুঁড়া, কামেনি, কাঠ মালতি, এলামেন্ডা, বাগান বিলাস, হাসনা হেনা, গন্ধরাজ, ফনিকা মিলে রয়েছে ১৫০জাতের ফুল। শাল, সেগুন, গর্জন, চাম্পা, আমলকি, আম, জাম, হরিতকি প্রভৃতি কাঠ, ফল ও ঔষধি বৃক্ষ আর লতা- গুল্ম মিলে আছে ১৫’শ প্রজাতির গাছ-গাছালি। আছে অত্যাধুনিক গ্রীন হাউজ প্রকল্প। পর্যটকদের সুবিধার্থে পিকনিক কর্ণার ঃ বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকো-পার্কের উত্তরে শুধু পাহাড় আর পাহাড়।

এ যেন পাহাড়ের স্রোত কেবলই বয়ে চলেছে হাট হাজারী, মন্দাকিনী ও ফটিকছড়ি পযর্ন্ত। পাহাড়ের চুঁড়ায় কয়েকটি পিকনিক কর্ণার, বিশ্রামাগার,টয়লেট, পানির জলের ব্যবস্থা। যেভাবে যাবেন ঃ[| চট্টগ্রাম শহর থেকে বাস, মেক্সী, টেক্সীতে ৩৭ কি.মি. উত্তরে এলে কিংবা সীতাকুণ্ড থেকে ২কি.মি.দক্ষিণে ইকোপার্ক। সীতাকুণ্ড থেকে পার্ক গেইট পর্যন্ত রিক্সা কিংবা টেক্সীতে সর্বোচ্চ ৪০ টাকা ভাড়া নেবে। সিএনজি টেক্সী নিয়ে পাহাড়ের উপরেও যাওয়া যায় তবে ভাড়া একটু দর-দাম করে নিলেই ভালো।

আর নিজস্ব গাড়ী থাকলেতো কথা নেই। ছবি : ইকোপার্ক চট্টগ্রাম] Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link Click This Link

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.