তাহলে, লড়াই শুরু করি। তৌববুদি মিরাং মহুমদা মিরাং অমা ওন্না লৈবাসিনা মনুঙাইখি...
আমার জন্ম হয়েছে বৃহত্তর সিলেটের এক অজ পাড়াঁগায়ে।
শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছি নিজের এলাকায়, মৈতৈ খুঙ্গং এ।
বেড়াতে বেড়াতে চলে যেতাম বিভিন্ন চা রাষ্ট্রে ( চা বাগান - এখনও টি স্টেট বলে, কাজ কারবারও ঐরকম, আলাদা এক একেকটা রাজ্যের মতো) , গরু-মহিষের পিছু নিতে নিতে ঢুঁকে যেতাম রিজার্ভ ফরেষ্ট এ, যদিও আমাদের প্রবেশ নিষেধ ছিল।
ইবেনধৌ (প্র-পিতামহি) হলো আমার খেলার সাঁথী।
তিন তিনটি রাষ্ট্রের নাগরীক হয়েছেন এক জীবনে। বৃটিশ- ভারত তারপর পাকিস্তান সর্বশেষে বাংলাদেশ। এসব নিয়ে তাঁর কোন মাথা ব্যাথা ছিলনা, যত মাথা ব্যাথা আমাকে নিয়ে। মজার মজার মৈতৈভাষার রূপকথা, কল্পকাহিনী বলে শোনাতেন, মনিপুর রাজ্যের রাজরাণীদের নিয়েও কম বকবক করতেন না। আমার শৈশব কৈশোরের স্বপ্নগুলোও ছিল খুব এলোমেলো, একদিকে বাংলার ঠাকুমারঝুলি আর ইবেনধৌ এর ঝুলি একাকার হয়ে যেত।
সাথে ছিল 'খোংজোম পর্ব্ব ' , মেরা পালি , 'খোবাক ঈশৈ', 'শুমাং লিলা' যা আমার চেতন-অবচেতন মনে খেলা করতো খম্বা থোইবি-নোংবান, পঞ্চ পান্ডব- দ্রৌপদি, রাম-লক্ষণ-সীতা, মাইনু পেমচা-শন্দ্রেম্বি, আরব্যরজনীর শাহজাদা-শাহজাদি, লব-কুশ, চৌরজীৎ -মারজীৎ.............................
পাড়ার পাঠশালা, হেড মাষ্টার আবার একজন পাঙন মৌলভী। বাংলা প্রায়ই বলতেন না, শুধু ইন্সপেক্টর আসার দিন নিতান্ত প্রয়োজন হলে সিলেটি বাংলায় এ টা ওটা জিজ্ঞেস করতেন। পাঠ্যবই বাংলা, আমরা সবাই মূখস্থবিদ্যায় পারদর্শী, না বুঝে শুধু শব্দ গুলো দেখে দেখে আওড়াতাম। বাড়ীতে এসে বড় ভাই -বোনদের কাছে পড়তে বসা। কিল-ঘুসি-চড়-থাপ্পর সমস্ত যন্ত্রনা শেষে আবার ইবেনধৌ এর কাছে বসা, ফুংগা ওয়ারী শোনার জন্য।
স্বপ্নের মধ্যে চিৎকার করতাম --
পেবেৎ,
অয়ো অয়ো ইবুঙো.....
থা থা থাবোংতোন
নচা মোইরাং পোবিগে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।