আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অগোচরে ভাবনা। (সমালোচনা )

বছর দুই এক আগের ঘটনা। ছাত্র লীগের কয়কেজন নেতা সহ আমরা আড্ডার মতো করে বসে ছিলাম। চলছিল খোশ মেজাজের গল্প। ঠিক এমন সময়ে মধ্য বয়স্ক এক লোক এসে ছাত্র লীগের নেতাকে বললো : ভাই আমার মেয়েকে ভিক্টোরিয়া কলেজে ভর্তি করিয়েছি। যদি একটা মহিলা হোস্টেলের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে বড় উপকার হয়।

তখন ছাত্র লীগ নেতা এই বলে আশ্বস্ত করলো যে, ঠিক আছে আমি দেখি কোনো শিবিরের মেসে উঠিয়ে দিতে পারি কিনা। মেয়েদের জন্য শিবিরের মেস গুলো বেশ নিরাপদ। তখন শিবির সম্পর্কে একটি ভালো ধারনা জন্মায়। শিবিরের ছেলেদের একটা ভালো চারিত্রিক বৈশিষ্ট আছে বটে। তা না হলে ঐ নেতা এমনটা বলবেন কেন? কাদের মোল্লার জন্য হরতাল ডাকার পর তাদের প্রতি আমার সব ধারনাকে কবর দিতে হয়েছে।

শুধু তাই নয় ওদের জন্য এক প্রকার ঘৃণাবোধ ও জন্মাচ্ছে। জামায়াতি নেতা আবুল কালাম আযাদের ফাসীঁর জন্য রায় হয়েছে। আমরা আনন্দিত। সে তুলনায় কাদের মোল্লা আরো বেশি প্রতিষ্ঠিত রাজাকার। তার বিচারের রায়, আমাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদাকে প্রবলভাবে তিরস্কার করা হয়েছে।

এ রচনায় মোল্লা সাহেবের অপরাধ কির্র্তীর তালিকা তুলে ধরার ইচ্ছা আমার নেই। শুধু একটু ভাবতে চাই। আমাদের গঠিত সরকারের উদ্দেশ্যটা কি? ছোটো মাপের অপরাধী বলে খ্যাত আবুল কালাম আযাদের হলো ফাঁসী, আর প্রতিষ্ঠত রাজাকার ও বড় মাপের অপরাধী মোল্লা সাহেবের যাবজ্জীবন কারাদন্ড কেন হোলো? আমাদের গঠিত সরকার কি আমাদেরই বোকা বানাচ্ছে? আমরা আম জনতা ধরেই রেখেছিলাম এই বিচারের রায় হবে ফাঁসী। আচ্ছা আদালত কি জানতেন না এ রায় ফাঁসী না হলে জনগন রাস্তায় নেমে যাবে? তাদের আন্দোলোন অবাক করার মতো কিছু না। ওদিকে আওয়ামিলীগের প্রচারনা সম্পাদক তো বলেই ফেললেন, বিচারের রায় যখন ফাঁসী হয়নি তখন এটা প্রমানিত হয় যে, সরকার বিচার বিভাগের উপর কোনো প্রভাব ফেলছেনা।

তবে কি সরকার নিজেকে পরিশুদ্ধ প্রমান করার চেষ্ট করছে? আদালতের উপর রাজনৈতিক প্রভাব না থাকলেও বিচারকের উপর থাকবেনা তার ভরসা কোথায়? আমরা অতিতে দেখেছি, আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় আসার জন্য গোলাম আযমের কদমবুসি ও করেছে। ক্ষমতায ও এসেছে। তখন গোলাম আযম ছিলেন তাদের চাচার বয়সী। এই হলো তাদের আদর্শ। এখন অবশ্য দৃশ্যপট পাল্টেছ।

তারা এখন এক হাতে জামায়াতের গলা টিপে ধরেছে অন্য হাতে পা। জামায়াত যখন আওয়ামিলীগের আনুগত্য স্বীকার করবে তখনি আমরা আম জনতা সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবো না। তখন রায় কী হবে তা নিশ্চয় ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। আর যদি আনুগত্য স্বীকার না করে তাহলে অবশ্য জনগনের হাতে তালির অভাব হবে না। বিচারক সাহেবকে প্রশ্ন করছি, কাদের মোল্লার অপরাধ কি ফাঁসীর যোগ্য ছিল না? কেন তার ফাসীর রায় হয়নি? আপনি কি আপনার মায়ের সাথে প্রতারনা করনে নি? আবুল হোসেনকে যখন বিশ্ব ব্যংক বারবার বলছিল তিনি দূর্নীতিগ্রস্থ, তখন সরকার ঢোল পিটিয়ে প্রমান করলেন তিনি নাকি দেশরপ্রমিক! ইদানিং কালো বিড়ালের মুখ থেকে বাঘের মতো গর্জন ও বের হয়! সরকার পদ্মা সেতু করবেন নিজেদের অর্থ দিয়ে! তিনি শেয়ার বাজারটাই ঠিক মতো ধরে রাখতে পারলেন না. করবেন পদ্মা সেতু! কী হাস্যকর! এর পরেও জনগন কিচু বলে নি।

কিন্তূ যুদ্ধাপরাধকে ইস্যু করে রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ খেলবেন, তা আমরা এক সকেন্ডের জন্য ও বরদাস্ত করবোনা। দেশের জন্য আপনারা অনেক কিছু করেন তাই আপনাদের জন্য কৃতজ্ঞতা। কিন্তু ৭১ এর খুনী, ধর্ষক কিংবা রাজাকারদের সাথে আপনাদের যোগসাজশ জনগন ভুলেও ক্ষমা করবেনা। আবারো বলছি যুদ্ধাপরাধকে ইস্যু করে রাজনৈতিক মারপ্যাঁচ খেলবেন না। এদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করছি।

আর কাদের মোল্লার আমৃত্যু ফাঁসী তো ফরজ তাই না? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.