কম্পিউটার বিশারদ পেশায়, নেশায় যুক্তিবাদী
কয়েকদিন ধরে মুম্বই সন্ত্রাস নিয়ে অনেক লেখা পড়লাম। বেশ কিছু লেখাতে অনেক ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছে দেখেছি। এখন কিছু কিছু ঘটনার গতিপ্রবাহ আস্তে আস্তে প্রকাশিত হচ্ছে।
আজকে ভারতে ভোটগণনার চলছে। চারটি উত্তর-ভারতীয় রাজ্যে ভোট ছিল।
এই রাজ্যগুলোতে বিজেপির যথেষ্ট শক্ত ঘাঁটি বলে মানা হত। মুম্বই ঘটনার পরে অনেকেই মনে করেছিলেন এই ভোটে বিজেপি খুব সহজেই জয়লাভ করবে। উলটে দেখা গেল, চারটের মধ্যে দুটোতে কংগ্রেস জিতছে, আর একটাতে উভয়পক্ষই খুব কাছাকাছি। আরো মজার কথা হল, যে দুটো রাজ্যে কংগ্রেস জিতছে, উভয় রাজ্যেই ভোট হয়েছে মুম্বই ঘটনার পরে (রাজস্থানে ২৬-২৭ তারিখ আর দিল্লীতে ২৯ তারিখ)। সিএনএন-আইবিএন এর সমীক্ষায় প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুসারে দুই রাজ্যে এই ঘটনা প্রভাব ফেলেছে ১ শতাংশেরও কম ভোটে।
রাজস্থানে মূলত মেয়েদের ভোটে বিজেপি পরাস্ত হয়েছে, কারণ মেয়েরা হয়ত ধর্মবাদী দলকে পছন্দ করে নি। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের ভোটও কংগ্রেসের পক্ষে গিয়েছে।
অন্যদিকে, মুম্বই হামলায় ধরা পড়া একমাত্র সন্ত্রাসী আজমল কাসব জেরার মুখে জানিয়েছিল যে সে পাকিস্তানের পাঞ্জাবের ফরিদকোটের বাসিন্দা। তার বক্তব্য প্রকাশ হবার পরেই সাংবাদিকেরা এই গ্রামে গিয়ে ভিড় করতে থাকেন এবং ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হন। বিবিসি উর্দুর সাংবাদিক আলি সলমন রিপোর্ট করেন যে আজমলের পরিবারকে কিছু নিরাপত্তা রক্ষীরা ধরে নিয়ে গেছে।
শুধু তাই নয়, গ্রামে নিরাপত্তা বেষ্টনীও জোরদার করা হয়েছে। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য অবসার্ভারের রিপোর্টার সাঈদ খান আরো এক গ্রামবাসীর সাথে কথা বলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই গ্রামবাসী জানান -
"মুম্বই হামলার ঘটনা টিভিতে প্রথম দিন থেকেই আমরা দেখেছি। টিভিতে দেখেই আজমলকে চিনতে পেরেছিলাম। ওর মা তো টিভিতে ছেলের ছবি দেখার পর থেকেই হাউহাউ করে কাদছিলেন।
"
আরও একজন বলেছেন -
"ফরিদকোট থেকে ছেলেদের লস্কর-ই-তইবায় নিয়োগ করা হত। জেহাদের জন্য এই গ্রামেই ছোট ছোট ছেলেদের মগজধোলাই করে লস্কররা। ফরিদকোটের খুব কাছেই দিপালপুরে তো শ’য়ে শ’য়ে সমর্থক রয়েছে লস্করের। লস্কর-প্রধান হাফিদ সইদ নিজেও এসেছিলেন তাদের সঙ্গে কথা বলতে। "
শুধু তাই নয়, সাঈদ খান আরো অনুসন্ধান করে আজ বলেছেন, ফরিদকোট গ্রামে ৪৭৮ জন স্বীকৃত ভোটার রয়েছেন।
তাতে নাম রয়েছে কাসবের বাবা-মার। এবং সরকারি তথ্যে আজমল আমির-নুরের ছেলে। কাসবের বাবা-মায়ের ভোটার আইডিও তিনি জোগাড় করেছেন।
সাঈদ খানের রিপোর্ট প্রকাশ হবার পর থেকেই স্থানীয় নেতারা গ্রামের লোকজনকে বাইরের কারও সাথে কথা না বলতে নির্দেশ দেন। এর পরে দলে দলে সাংবাদিক গ্রামে গিয়ে ভিড় করা শুরু করায় তাদের মারধোর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
খবরের লিঙ্ক -
১) দ্য অবসার্ভার
২) বিবিসি উর্দুর রিপোর্ট - আসল লিঙ্ক
৩) দ্য হিন্দুর রিপোর্ট
৪) আনন্দবাজার
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।