_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________
ফেরারি পর্ব ২
সৈয়দ আফসার
তুমি সুন্দর; তুমি আত্নরহিত-- জানি না খণ্ডে খণ্ডে তুমি রাতের উষ্ণতা খুঁজে
ফিরো কেনো? কেন রাত্রি খুঁড়ে তুলো দগ্ধ জ্বালা, পত্র-পাত্রে অর্ধেক জলের
তৃষ্ণায়... তৃষ্ণায় ঝুলে পড়ো তপ্তবাহুতে রক্ত-মাংশের ঘ্রাণে ঝরে পড়ছে জল
তার অর্থ জানি না বলে কে যেন দিয়ে গেল দ্বিধা
...
কারো অজুহাতে নয়; এখন নিজেই করাত কলের পাশে মাছ-মাংশ টুকরো
টুকরো করি মুঠোভর্তি দীর্ঘশ্বাস ঝেড়ে;দুঃখ যত একাকী পুড়ে করাত কলের
পাশে--- তুমি সে দৃশ্য দেখার আগে, আগেই হয়েছো নিরাকার; রাত্রি ভুলে হয়েছো সত্তাহীন; তাই মোমের আদলে গলে যাও তুমি;গলে যায় যন্ত্রণা যত
... কষ্টকে জমতে দেই না কখনো, হাড়গোড়ের মাঝে সবটুকু কেটে ফেলি করাত কলের পাশে
...
আমার দু'হাতে বরফের জল; আঙুলে লেগে আছে খরা তার অর্থ কেউ বুঝবে
না অর্ধেক লেগে আছে প্রাণে, করাত কলেই সব জানে... যারা করাত কলে দৃষ্টি ফেলে রাখে তাদের জন্য মায়া হয় কম; তারাও কি? অজান্তে সব কষ্ট ছুঁড়ে দিতে চায় করাত কলে
...
তুমি রাত্রি নৃত্যময়ী; তুমি রাত্রিতাড়িত ভ্রান্ত পথিক; লাফে-ঝাঁপে নুয়ে পড়ে
স্বপ্ন,রাত্রিডানায় রাত্রিকে টেনে হিঁচড়ে করেছো নিষ্পাপ রাবারের মতো আয়ূ
নিয়ে জেগেছো দূরে; অন্ধকারে জানি সুখে-দুঃখে আমৃত্যু সংলিপ্ত ছিলে আয়নার পাশে
...
কার আঙুল ছুঁতে লেগেছিল দ্বিধা; কাকে ছুঁয়ে দেখার আগে ঝরেছিল জল;
পায়ের পাতা তোমার স্তব্ধতা নিয়ে জেগে ওঠে স্পর্শ; শিউরে উঠি আমিসহ
শিরা-উপশিরা তোমার আকাঙ্খা অপূর্ণ রাখিনি বিনিময়ে কিছুই চাওনি তাই
রতিভ্রমে খুলে পড়েছিল লাজ রাতের উদাসীন হাড়লিপি... দেহের উষ্ণতা
...
জীবনের দায়ভার রেখে খামচে ধরো আয়ূ; পাজামার ফিতা হয়ত নিয়ম
ভাঙতে যাওনি তাই চুম্বনের জন্যই... শুধু চুম্বনের জন্যই এত দীর্ঘশ্বাস...
দীর্ঘ প্রতীক্ষা
...
রাত্রি ঘুমিয়ে গেলে শুধু জেগে থাকে নির্জনতা; তার আগে ঘুমিয়ে পড়ো তুমি
রাত্রির কাছে একা নও সখি জেগে আছি আমি আর মলিন চাঁদ-তারা রাত্রির
কাছে হয়ত পুড়িয়ে নেবে দেহে; না হলে টুকরো-টুকরো করে সিদ্ধ করবো
তৈলভর্তি কড়াইয়ে ফেলে।ভাবতে ভাবতে ভোর হয়ে গেল,তুমি কী জানো?
ভোরে কেন পাখিরা নীড়ে থাকে না
...
রুটি বানাতে গিয়ে পুড়ে গেছে হাত, তাপভষ্ম তান্দুরীর গায়ে; রান্না-বান্না
এ সব মনে হতো নারীরা ভালো বুঝে... পরবাসে এসে দেখি সবই ওলট-
পালট বাঙালিরা রসনা-বিলাসী সব শাদা চামড়াকে তৃপ্তি দিচ্ছে চার দশক
হবে-- তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে 'চিকেন টিক্কা মসল্লা' গিলে... রুটিতো ফুলে-ফেঁপে
ওঠে, যন্ত্রণাও সাজিয়ে গুছিয়ে রাখি সামি-কাবাব গারলিক নানে'র পাশে
...
সেই সব স্মৃতি সবই ছিল গ্রহণের বেলা, গত জন্মে যে ছিল প্রাণে সে তো
যৌবনে শিখে ফেলেছে কথার ছলে রহস্যপাঠ --- প্রাণের উষ্ণতা দেহ থেকে
ক্ষয়ে পড়ছে ক্রোধ যৌবনতৃষ্ণা; তাই নিববে পাঠ করি আয়ূ, তোমাকে
শোনাবো বলে গেঁথে রেখেছি হাড়ে গোপন মাংশ কিচ্ছার পাশে
...
আজো ধরিনি কারো হাত ফলে কিভাবে চলে আসে ভয়; কাঁথায় মুড়ি দিয়ে
রাখি ঘুম-- রাতের পর রাত, একাকী পাঠ করি শীতজন্মস্মৃতি। কিন্তু বরষা
এলে তুমি বসে পড়ো দেহের ভাঁজে বৃষ্টি সেজে... ফলে বিভাজিত হতে চায়
দেহ, স্পর্শের আড়ালে
...
নিজেকে সংযত করো; আয়নার পাশে; এ জীবন তো ফেরারি জীবন যৌবন
কেটে যাচ্ছে তবে--- তাই সার্কাসের মতো ঘুরে ক্রমে-ক্রমে নিস্তেজ দেহ।
আর তুমি বৃষ্টি ছিঁড়ে রাখো হাতে,হাত থেকে তুলে নাও ঘ্রাণ বিরামহীন বুকে
একদিন তুমি... তুমিও হবে নিজাধীন প্রাণে,তোমাকে আটকানোর অক্ষমতা
আমাকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে খাবে
__________দৈবের বশে, প্রবাসে___________ থেকে
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।