আমি আজকে ঘোরতর মাতাল হয়েছি একটি অনিন্দ্য সুন্দর কবিতা লেখার জন্য ,
আমার ভিতরে জ্বলতে থাকা এক বিদ্রোহী কষ্টের আগুন চাপা দেয়ার জন্য ।
আমার বুকের ভিতর জ্বলছে পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরি ,
এই আগ্নেয়গিরি পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারছে আমাকে নীরবে ...
আমি শাহবাগ যেতে পারি নি বলে ।
পুরো দেশের মানুষ আজ এক হয়ে গেছে । ঘোষণা করেছে একাত্মতার
জাতি কলঙ্কমুক্ত হতে চায় , ধুয়ে ফেলতে চায় তার সাদা চাদরে
লেগে থাকা শিবির-রাজাকারের মত পানের পিকের দাগ ।
দুই দিন হয়ে গেছে আন্দোলনের অথচ আমি যেতে পারি নি ।
আমার অবুঝ মা প্রিয়জন হারানোর বেদনার কথা ভেবে
আমাকে কথা - বন্দী করে রেখেছেন । সে বলেছে -
" তুই যদি আন্দোলনে যাস তো আমাকে আর মা বলে ডাকবি না "
এত বড় কথার পরে আমি আর শাহবাগ আসার দুঃসাহস দেখাই নি ।
মা কে অনেক বুঝানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলাম ।
তার এক কথা দেশ নাকি আবার ৭১ এর দিকে যাচ্ছে ,
সারাদিন টেলিভিশনে শিবির নামক পশুদের নরপিশাচামী দেখে
তার মনে চিনের দেয়ালের মত ভয় ঢুকে গেছে ।
আমেরিকার পারমাণবিক বোমার ও এত শক্তি নেই যে এই ভয় কে উড়িয়ে দিবে ।
আমি তাকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করলাম যে মা
এটা পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন , এখানে কেউ কাউকে মারছি না
আমরা শুধু সরকারের কাছে আমাদের দাবি জানাবো -
সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চাই
আমার পূর্ব পুরুষেরা আমাদের যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে
লক্ষ প্রাণ আর ইজ্জতের বিনিময়ে তাতে লেগে থাকা
এই কলঙ্কটা তো মা পরিষ্কার করতে হবে ।
আমাকে শুধু একবার ওদের সাথে শাহবাগ যেতে দাও মা ।
লৌহমানবী মা আমাকে যেতে দিলেন না ।
উল্টো কথা-বন্দী করে ফেললেন ।
আমি পৃথিবীর সব জায়গাতেই যেতে পারব শুধু শাহবাগ ছাড়া ।
আমার পঙ্খীরাজ মন কিন্তু ঠিকই চলে গেছে শাহবাগ
কিন্তু শরীর বেচারা যেতে পারছে না ।
তাই শরীরকে কষ্ট দেয়ার জন্য আমি হাঁটা শুরু করলাম ।
আমি মাতাল হয়ে হাঁটছি আর নিজ মনে মনে কবিতা লিখে চলেছি ।
সামনে হঠাত শুনি চিৎকার –
কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই
রাজাকারের ফাঁসি চাই
যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি চাই ।
আমি হাঁটতে হাঁটতে কখন যেন শাহবাগ চলে এসেছি !!!
আমার শরীর বেচারা অনেকক্ষণ মনকে ছাড়া ছিল ।
মন তো শাহবাগে আগেই চলে এসেছে ,
মন আমার অবাধ্য শরীরে ঢুকে পরতেই মনে পরল মা-র কথা ।
মা আমি দুঃখিত মা ।
তোমাকে মা ডাকতে না পারলেও
আমার মা ডাকার জন্য দেশমাতা কিন্তু ঠিকই আছে
আমার ফেবু লিংক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।