আমার জানা বলতে আমি কি বুঝি তাই জানি না।
ইট-কাঠ-কংক্রীটের যে চৌকো ঘরটিতে আমার অবস্হান সেখানে এখন প্রায় অন্ধকার। বাইরের করিডোরের হালকা আলোটি এইমাত্র নিভানো হলো। ঘরটিতে এখন শুধু আমার মেশিনের আলো যাতে পাশের বেডে শুয়ে থাকা মানুষটির অবয়ব ভালো বোঝা যাচ্ছে না। এই কক্ষটি কোন হোটেলে অবস্হান করলে বলা যেত ডাবল বেড এসি রুম কিন্তু হাসপাতাল হওয়াতে এটা হয়ে গ্যাছে সিঙ্গল কেবিন।
পাশের বেডে আমার বউ। কাল সকাল (২৬ অক্টোবর ২০০৮) ৮ টা ৩০ মিনিটে ওকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হবে। একটি পুত্র সন্তান সম্ভবত জীবন্ত অবস্হায় জন্ম দেবার জন্য। কিছুক্ষণ আগে সে তার জন্মদাত্রী মা'কে কল ক'রে একমাত্র সন্তানের কণ্ঠস্বর শুনে আবেগে আপ্লুত হয়ে ঘুমিয়েছে। সত্যি কি ঘুমিয়েছে! মেয়েরা নাকি এই সময়ে খুব নার্ভাস থাকার কথা।
মাত্র কয়েক ঘণ্ঠা পরেই তো......!
এই সময়ে হাজবেন্ড এবং তার পাশের বেডে অবস্হানকারী হিসেবে আমার সহযোগিতাপূর্ণ সর্বোচ্চ যৌক্তিক আচরণটা কী হতে পারে!
তার যে অনুভূতিটা এটা আমি টের পাইনা। পৃথিবী কোন পুরুষ মানুষ কি পেয়েছে!
আমার স্কুল জীবনের শেষের দিকে এপেন্ডিজের অপারেশন হয়েছিল। মাইনর একটা অপারেশন। তখন আমার যে কী অনুভূতি হয়েছিল খেয়ালই নেই। কিন্তু কালকেরটা তো মাইনর অপারেশন নয়!
ওর কেমন বোধ হচ্ছে? সন্তান জন্ম দেবার মত একটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা! সিজার! তার উপর গর্ভকালীন ডায়াবেটিস্! স্বামী লোকটি ছাড়া অপারেশনের আগের একমাত্র রজনীমুহূর্ত কি এটাই যখন আরও অনেকের কথা প্রচণ্ড মনে পড়ে! কি জানি ওকে কী জিগ্গেস করা যায় যেহেতু এখন সে শোয়া থেকে উঠে বসেছে? ব্যাথা উঠেছে কি?.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।