আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বহুল পঠিত একটা গল্প

সত্য সমাগত, মিথ্যা অপসৃত...............।

একজন মানুষের গল্প বলবার জন্য কলম ধরেছি আজ। 'গল্প' শব্দটা যদিও তাঁর জীবনের সাথে ঠিক খাপ খায় না; রূপকথা বললেই যেন বেশী মানানসই হয়। কিন্তু সত্যি ঘটনাকে রূপকথা নাম দিলে কেমন যেন আবার অবিশ্বাস্য ঠেকে! তারচেয়ে বরং বলি ইতিহাস। তাঁর জীবনের ইতিহাসই বলব আজ, তবে আমার নিজস্ব বিশ্লেষনে।

নিজের পরিচয়টা দিয়ে নিই আগে। পক্ককেশ বৃদ্ধ আমি। জীবনের পশ্চিমাকাশ অস্তায়মান সূর্যের গাঢ় লালীমায় ছেয়ে গেছে। রাতের আঁধার ছায়া বিস্তার করবে যে কোন মূহুর্তে, নিরবে। চলে যেতে হবে সেই অচিনলোকে – যেখান হতে কেউই আর ফিরে আসতে পারেনা।

ব্যস্ততম যৌবন কেটেছে আমার; মার্ক্স-এঙ্গেলস্‌ লেলিনের কাছ হতে চেয়ে নিয়েছি পাথেয় আর তাই নিয়ে কৃষক- শ্রমিকের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে পাড়ি দিয়েছি সময়ের এই সুদীর্ঘ পথ। মাও'-য়ের বিপ্লব আমায় উজ্জীবিত করেছে। চে'র আত্মবলিদান আমায় পথ চলার প্রেরণা যুগিয়েছে। এত কিছুর মাঝখান দিয়ে কখন যে মেঘে মেঘে বেলা ফুরিয়ে এলো টের ও পাইনি। এই গোধূলিলগ্নে এসে, তবে হিসেবের খাতা মেলাতে পারছিনা কেন? বাকীর ঘরে ইয়া ইয়া বড় বড় সংখ্যা বসানো আর পাওনা আদায়ের ঘরে কেবলই শূণ্য! ঠিক এমনি একটা ক্রান্তিলগ্নে এই মহান ব্যক্তিত্বের অবিস্মরণীয় জীবন এবং সর্বগ্রাসী বিপ্লবের ইতিহাস আমার চোখে নতুন করে ধরা দিল।

তাঁর জন্ম হয়েছিল এক মরু প্রান্তরে, এক তৃষিত জমিনে। হাজারো বর্ষণ যাকে সিক্ত করতে অক্ষম, যেখানে জন্মায়না কোন ফলদায়ক উদ্ভিদ, তাঁর জন্মপূর্ববর্তী বিগত কয়েকটি শতকে যে মাটি জন্ম দেয়নি একটি বিখ্যাত মানুষ ও, সেখানেই জন্মালেন তিনি। সে এক অন্ধকারের যুগ। এ ভূমির সন্তানেরা তখন নিরক্ষর-যাযাবর-বন্য প্রকৃতির। হত্যা-লুটতরাজ তাদের জীবনের প্রাথমিক অনুসঙ্গ।

বুকের সাহসটুকু সম্বল করে তারা সময়ের পথ পাড়ি দেয়। এ ছিল এমনই এক তমসাঘন পৃথিবী, যখন প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য - সুবিশাল পারস্য ও রোমান সম্রাজ্যের যাঁতাকলে নিষ্পেশিত। পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীনে নিয়ে আসবার নোংরা অভিপ্রায়ে তারা একে অন্যের দিকে চেয়ে ছিল শ্যেণ দৃষ্টিতে। অথচ, এদের রক্তলোলুপ দৃষ্টিও চরম অবজ্ঞায় এই অনুর্বর ভূমিকে এড়িয়ে গিয়েছিল। মানবতার হাহাকারে আঁধার হয়ে আসা এমনই এক ধরাতেই জন্মালেন তিনি! দুঃখ-বেদনা তার আবাল্য সুহৃদ! জন্মের পূর্বেই পিতৃহারা এই ব্যক্তিটি জন্মের অল্প ক’দিন পর মমতাময়ী মাকেও হারালেন।

কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করলেন। সমাজের অন্যায় হতে দূরে সরে থাকলেন, অবিচার দূর করবার চেষ্টা চালালেন; কিন্তু কোন মতবাদ হাজির করলেন না। অন্যদিকে, সত্যবাদিতা-ন্যায়পরায়নতার জন্য সমাজের সকলেরই প্রিয়পাত্র হয়ে উঠলেন, সকলের ভালবাসায় ধন্য হলেন। চল্লিশ বছর বয়স্কাল পর্যন্ত এভাবেই কাটলো তাঁর নিঃস্তরঙ্গ জীবন, বলা যায় জীবনের প্রথম পর্যায়। তারপর তাঁর জীবনের দ্বিতীয় পর্যায় এসে গেলো।

তিনি নির্জনে ধ্যানস্থ হলেন। 'মানবতার মুক্তি কিসে?'- এই প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাবার সাধনায় রত হলেন। অবশেষে, একদিন ফিরে এলেন। ফিরে এলেন একজন পরিবর্তিত মানুষ রূপে। জন্মভূমির মানুষের কাছে পেশ করতে শুরু করলেন এক কালজয়ী মতবাদ, এক অনিবার্য বিপ্লবের ইশ্তেহার।

কিন্তু হাজার বছরের লালিত বিশ্বাস আর মূল্যবোধের সাথে চরম বৈপরীত্য অনুধাবন করে, তারা মেতে উঠলো নির্মম বিরোধিতায়। এ নতুন আদর্শ যেন তাদের অহমের বারুদে অগ্নিসংযোগ করলো। কাল পর্যন্ত তাদের কাছে যিনি ছিলেন সত্যবাদিতা-ন্যায়পরায়নতার উজ্জ্বল প্রতিভূ; সেই তাঁকেই আজ পেতে হলো 'মিথ্যেবাদী', 'উন্মাদ', এমনকি 'যাদুকর' উপাধি। তাঁর উপরে নেমে এল অত্যাচারের খড়গহস্ত। যে মুষ্টিমেয় ক’জন তাঁর আদর্শে দীক্ষা নিলো, তারা ও বাদ পড়লো না।

বিদ্রুপবান, শারিরীক নির্যাতন হতে শুরু করে হত্যা পর্যন্ত সবই সইতে হলো তাদের। সুদীর্ঘ এক যুগ সব অত্যাচার নিরবে সহ্য করে তিনি তাঁর আদর্শকে প্রচার করে চললেন। শেষ পর্যন্ত যখন দেখলেন, এই অনুর্বর জমিন ফসল ফলাবার অনুপযুক্ত, তখনই তিনি ও তাঁর সাথীরা মৃত্যুর পরোয়ানা মাথায় নিয়ে বিতাড়িত হলেন জন্মভূমি হতে। বসতি গড়লেন এক নতুন নগরীতে। এখানেই শুরু হলো তাঁর জীবনের তৃতীয় এবং শেষ অধ্যায়।

বিপ্লবের এক উর্বর ভূমির সন্ধান পেয়ে গেলেন তিনি। ছোট্ট কিন্তু সুগঠিত একটি নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলেন, যাকে অংকুরেই বিনষ্ট করবার হিংস্র প্রয়াসে চারিদিক হতে ছুটে এলো শত্রুতার উত্তাল তরঙ্গ। এমনকি, আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের জাল ও তাঁর পথকে করে তুললো বিপদসংকুল। এবার, তিনি কিন্তু আর মুখ বুঝে সইলেন না, রুখে দাঁড়ালেন। সকল বাধা-বিঘ্নকে মোকাবেলা করলেন দক্ষ হাতে।

অবশেষে, যে জন্মভুমির মাটি হতে রিক্ত হস্তে তিনি বিতাড়িত হয়েছিলেন, সেখানেই প্রবেশ করলেন বিজয়ীর বেশে- দশ সহস্র একনিষ্ঠ অনুসারী নিয়ে। জীবন সায়াহ্নে তিনি ছিলেন বার লক্ষ বর্গমাইল বিস্তৃত এক সুবিশাল সম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিপতি। প্রায় লক্ষাধিক নিবেদিত অনুসারীর সামনে এক চিরস্মরণীয় বিদায়ী ভাষন দানের মাধ্যমে তার এই জাগতিক ও আধ্যাত্মিক সম্রাজ্যের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে তিনি এ ধরাধাম ত্যাগ করলেন। তাঁর জীবন সম্পর্কে এতটুকু জানলেই তাঁকে অনায়াসে ইতিহাসের একজন উল্লেখযোগ্য বিপ্লবী ও রাজনৈতিক নেতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। বস্তুতঃ এই ব্যক্তিটি মানব ইতিহাসের সবচাইতে বর্নাঢ্য ও নাটকীয় চরিত্র।

কি নেই তাঁর জীবনে! ত্যাগ-তিতীক্ষা, ধৈর্য-শৌর্য্য-বীর্য্য, মানবপ্রেম, যুদ্ধ-বিগ্রহ, আনন্দ-বেদনার সম্মিলিত এক মহাকাব্য। মানবচরিত্রের দ্বৈত সত্ত্বার এমন অপূর্ব কল্যাণমুখী সামঞ্জস্য তাঁর পূর্বে ও পরে আর কখনই দেখা যায় নি। একদিকে, সৃষ্টিকর্তার ধ্যানে সার্বক্ষণিক নিমগ্ন তিনি এক উদাসী বাউল। অন্যদিকে, স্বীয় রাজ্যের প্রতিটি প্রজার অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ সতর্ক এক ন্যায়পরায়ন সম্রাট, এমনকি রাস্তায় দেখা হলে এক শিশুর পোষা জীবটির সংবাদ গ্রহনে ও তিনি কুন্ঠা বোধ করেন না। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে তিনি সর্বদাই পাথরকঠিন; অথচ, অত্যাচারিতের প্রতি তিনি আপন ভাইয়ের চাইতে ও কোমল।

পাহাড়-প্রমান স্তুপাকৃতি অর্থ-সম্পদ তাঁর দরবারে জমা হবার কয়েক মুহুর্তের মধ্যেই তিনি সবকিছু বিলিয়ে দেন গরীব-দুঃখীদের মাঝে, আর নিজ গৃহে ফিরে আসেন শূণ্য হাতে, হয়ত সপ্তাহের পর সপ্তাহ এই চিরদুঃখী সম্রাটের ঘরের চুলোটা ও জ্বলেনি। এতটাই সাহসী তিনি যে, কয়েক শত অনুসারী নিয়ে হাজারো শত্রুর মোকাবেলায় দাঁড়িয়ে যান অটল পর্বতের দৃঢ়তায়; অথচ, এতটাই শান্তিকামী যে, অপ্রস্তুত শত্রুর কোমর ভেঙ্গে দেবার পূর্ণ সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সন্ধি প্রস্তাব পাবার সাথে সাথে তা গ্রহণ করে নেন দ্বিধাহীন চিত্তে। যেদিন তিনি তাঁর মাতৃভূমিকে কব্জা করলেন সেদিনও তিনি শান্তি ও ক্ষমার মূর্ত প্রতীক হয়ে রইলেন। দশ সহস্র উলঙ্গ তরবারীর সামনে সেদিন সেইসব লোকগুলোই বন্দী ছিল যারা বিগত দুই দশকে তাঁকে এক মুহূর্তের জন্য ও শান্তিতে বিশ্রাম নিতে দেয় নি। অত্যাচার ও ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়ে তাঁকে জন্মভূমি ছাড়া করেছে, অনাবশ্যক যুদ্ধে জড়িয়েছে, এমনকি হত্যা পর্যন্ত করতে চেয়েছে।

আজ হাতের মুঠোয় পেয়ে ও তিনি নির্দ্বিধায় তাদের ক্ষমা করে দিলেন। এই মানুষটির জীবন আমাকে হতবাক করে দেয়। আশ্চর্য্য মানুষ তিনি! জীবনের প্রথম চারটি দশক তিনি সমাজের আর দশজন সাধারন মানুষের মতই কাটিয়েছেন। নিরক্ষর; নিজের নামটুকু ও লিখতে জানেন না, অর্থনীতি-সমাজনীতি তো অনেক দূরের কথা! মেষের রাখাল হতে শুরু হয়েছে তার জীবন। অথচ, কোন যাদুর কাঠির স্পর্শে তিনি হয়ে উঠলেন অসাধারণ।

যেদিন হতে তিনি আদর্শ প্রচার শুরু করলেন, সেদিন হতেই তিনি অন্য মানুষ। এমন এক অত্যাশ্চর্য্য মতবাদের তিনি প্রবক্তা- যা কিনা মানব জীবনের আধ্যাত্মিক-জাগতিক, ব্যক্তিগত-পারিবারিক, সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক এমনকি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলের প্রতিটি বিষয়ে বিগত চৌদ্দটি শতক ধরে বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান দিয়ে আসছে। এমন এক বাণী তিনি নিয়ে এলেন যার সমতূল্য কোন কিছুই মানুষ আজ পর্যন্ত তৈরি করতে পারেনি। শুধু কি তাই? তাঁরই যাদুকরী স্পর্শ তাঁর চারপাশের মানুষগুলর মাঝে নিয়ে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন। আগেই বলেছি, যে মাটি হতে বিগত কয়েকটি শতকে গুটিকতক নামকরা কবি ছাড়া আর একটা ও বিখ্যাত মানুষের জন্ম হয় নি, সেখান হতে কাতারে কাতারে বেরুতে লাগলো সমাজতত্ত্ববিদ, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ, বিশ্ববিজয়ী সমরনায়ক, শিক্ষক, আইনপ্রনেতা আর বিজ্ঞানী।

এরা একই সাথে ছড়িয়ে পড়লো পৃথিবীর প্রান্তরে আর সিকি শতাব্দীর ব্যবধানে তাঁর এই মতবাদকে ছড়িয়ে দিলো এশিয়া, ইউরোপ আর আফ্রিকার কোণায় কোণায়। হাজার বছর ধরে যে পারস্য ও রোমান সভ্যতা ও সম্রাজ্য প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের নিরপরাধ মানুষগুলোর উপর শোষনের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল, দু’যুগ অতিক্রান্ত হবার পুর্বেই তাঁর অনুসারীদের হাতে এরা ইতিহাসের বিষয়বস্তু হয়ে পড়লো। পারস্য সম্রাজ্যের অস্তিত্ব বিলীণ হয়ে গেল আর ইউরোপের এক কোণায় বসে রোমান সম্রাজ্য নিভু নিভু হয়ে জ্বলতে লাগলো । ন্যায় ও সাম্যের বাণীতে দলে দলে মানুষ দীক্ষা নিতে শুরু করলো। জ্ঞানার্জন ও বিতরনে তাঁর শিষ্যবৃন্দ সকল যুগের জন্য আদর্শ।

দুই সহস্রাব্দের বেশি সময় ধরে ঘুমিয়ে থাকা গ্রীক ও রোমান বিজ্ঞান ও সমাজ-দর্শণকে এরা আধুনিকতার ছাঁচে ঢেলে জাগিয়ে তুললো। চীন-ভারতবর্ষ যেখানেই তারা দেখতে পেয়েছে জ্ঞানের সামান্যতম মণি-মুক্তা, সেখান হতে তাই তুলে এনেছে নিঃসংকোচে। এখানেই শেষ নয়! যে মানুষটির সোনার কাঠির স্পর্শে এত পরিবর্তন, তাঁর জীবনী ও শিক্ষাকে ধরে রাখতে তাঁর অনুসারীরা যে পরিশ্রম করলো, যে প্রানান্তকর প্রচেষ্টা চালালো, তার দৃষ্টান্ত পৃথিবীর ইতিহাসে একটি ও নেই। তাঁর প্রতিটি কাজ, মুখ হতে নিঃসৃত প্রতিটি বাণীকে তারা পুস্তকের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় বন্দী করে ফেলেছে। এমনকি, তাঁর সম্পর্কে অন্তত একটি কথা ও বর্ণনা করেছে, এ ধরনের প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক ব্যক্তির জীবনী গ্রন্থও তাঁর অনুসারীরা সংকলন করে রেখে দিয়েছে।

তিরোধানের পর চৌদ্দটি শতক পেরিয়ে জাবার পর ও তাই তিনি আজ ও জীবন্ত। ইংরেজ নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ’ হয়তো এত সবকিছু দেখে-শুনেই, আজকের এই অশান্ত পৃথিবীর শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর মতো একজন একনায়ক কর্তৃক পৃথিবীর শাসন পরিচালনা করাতে চেয়েছেন। অথচ, আমাদের এই আলোচ্য মানুষটি সারাজীবনই ছিলেন গনতন্ত্রের পতাকাবাহী। সংখ্যাগরিষ্ঠ অনুসারীগণের মতামতের সামনে স্বীয় মতামতকে বিসর্জন দেবার বহু নজীর রয়েছে তাঁর জীবনে। পৃথিবীর অন্য সকল মহান ব্যক্তিত্বের জীবন-ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, উপরিল্লিখিত গুন-বৈশিষ্ট্যের কাছাকাছি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন কারো তিরোধানের পর তাঁদের শিষ্যবৃন্দ তাঁদেরকে দেবতা কিংবা অতিমানবের পর্যায়ে উন্নীত করে ফেলে।

কিন্তু, এই অসাধারন ব্যক্তিত্বটি নিজেকে সারাজীবন মাটির মানুষের চাইতে বেশি কিছু ভাবেন নি, বলেন ও নি। তাঁর অনুসারীরা ও তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে দেবতার আসনে বসাবার অপচেষ্টা চালায় নি, বরং তাকে সমগ্র মানবতার জন্য সর্বযুগের-সর্বকালের আদর্শরূপে চিত্রিত করেছে। পৃথিবীর কথায় আছে এমন একনিষ্ঠতা, এমন আনুগত্য! এতসব দেখে-শুনে আজ উপলব্ধি করছি, কেন মাইকেল এইচ. হার্ট মানুষটিকে মানব ইতিহাসের সবচাইতে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরূপে অভিহিত করলেন। প্রিয় পাঠক, এতক্ষন ধরে যাঁর ইতিহাস বলবার এবং বিশ্লেষণ করবার চেষ্টা (কেউ কেউ অপচেষ্টা ও বলতে পারেন) করলাম, তাঁর পরিচয় সম্ভবতঃ সকলেই জেনে ফেলেছেন। তিনি আর কেউই নন, মুহাম্মাদ (স)- মানব সভ্যতার ইতিহাসে একক ও অদ্বিতীয় বর্নাঢ্য চরিত্র।

জ়ীবনের প্রথম বেলা হতে শেষ বিকেল পর্যন্ত আমি তাঁকে ভুলে থেকেছি। অর্থহীন মতবাদের ঘূর্ণিপাকে নিজেকে নিয়ে অন্তহীন ঘুরপাক খেয়েছি। আজ তাই ক্লান্ত ও অবসন্ন। গোধূলিলগ্নে দাঁড়িয়ে দিনের বাতি নিভে যাবার আগে একটু চলেই দেখি না তাঁর আদর্শের পথে; কি, আপনি ও আসবেন নাকি এই পথে? আমন্ত্রন জানিয়ে শেষ করলাম। ধন্যবাদ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.