আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যায়যায়দিন: রবীন্দ্রনাথ: স্কুল পরীক্ষায় ফেল

সকল অন্ধকারের হোক অবসান

বাংলা ভাষায় এমনিতেই অনেক তর্ক বিতর্ক জুড়ে আছে। যেমন তিনটি `স/শ/ষ' থাকবে না একটি করা হবে। সব দীর্ঘ-ই কার, হ্রস্ব-ই কার হয়ে যাবে না পুরনো রীতি বজায় থাকবে- ইত্যাদি। এসব ধ্রপদী সমস্যাগুলোর সমাধান আজো পর্যন্ত হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে বিষ ফোঁড়ার মতো গজিয়ে উঠেছে যায় যায় দিন নামের একখানা পত্রিকা।

নাম থেকেই এর চটুল মানসিকতা স্পষ্ট হয়। কোনো বিষয়ে সিরিয়াস হলে কেউ এই নাম রাখতে পারে না। যাই হোক ব্লগে যে আলোচনা উঠেছে যাযাদি নিয়ে, সেটাকে স্বাগত জানাই। অনেকে সেখানে মন্তব্য করেছে চলতি রীতি পরিবর্তনশীল। যাযাদি রীতিতে কী-বোর্ডে কম চাবি চাপতে হয় আর তাছাড়া ইংরাজি বানান লিখতে গেলে উচ্চারণ আশ্রয় লেখা যায়, সেখানে ক্রিকেট-- কৃকেট হতেই পারে।

যাযাদি'র লোকেরা হয় তো রবীন্দ্রনাথের কথা বলবে। রবীন্দনাথ লিখেছিলেন - খ্রিস্ট/খ্রীস্ট/খৃস্ট। এখন তিনটি বানানই গ্রহণ করা হয়। কিন্তু অন্যসব বানানে রবীন্দ্রনাথ এমনটি করেননি। আর রবীন্দ্রনাথ ওটা করেছে বলেই যে ওটা সঠিক হয়ে গেলো তা নয়।

রবীন্দ্রনাথের এডভোকেটের পরিভাষা অধিকর্তা বাংলাতে টেকেনি। রবি বাবু বাংলা ভাষায় শেষ কথা নয়। ভাষায় শেষ কথা সাধারণ মানুষ। কিন্তু যাযাদি সেই সাধারণকে উপেক্ষা করে বানানকে যা ইচ্ছা বানাচ্ছে। নানা রকম যুক্তিও চলছে।

কেউ কিছু বলছে না। মানুষ পত্রিকা কিনছে তো। অনেকেই বলছেন বাংলা চলিত রীতিতে পরিবর্তন কোনো ব্যাপার না, আগেই বলেছি, অতএব, পরিবর্তনকে স্বাগত। চলিত রীতি যতই পরিবর্তনশীল হোক, এভাবে যদি যে যার যার মতো বানান লেখা শুরু করে তাহলে ভাষার অবস্থাটা কি দাঁড়ায়, ভাবুন তো একবার। চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।

যদি পাল্টাতেই চান তবে আগে প্রমান যে রীতি আছে সেটাকে আগে চ্যালেঞ্জ করুন। বাংলা একাডেমীর সঙ্গে বসুন, বলুন এটা ঠিক, ওইটা ঠিক নয়। ভাষা বিশেষজ্ঞ ও ভাষা প্রেমীদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক ঐ ভাষা বিতর্ক। এতে অনেকে যেমন জ্ঞান আহরণ করতে পারবে তেমনি রীতির ব্যাপারে একটা সুরাহা করা যাবে। কিন্তু না করে, আপনার হাতে মিডিয়া আছে আপনি যা ইচ্ছা তাই করলেন, তাহলে কীভাবে চলবে? মগের মুল্লুক নাকি? বাংলা ভাষার কি মা-বাপ নাই।

আমার যা ইচ্ছা হলো, যেমন ইচ্ছা হলো করলাম? এ তো ভাষার বলাৎকার ছাড়া কিছু নয়। আমার শফিক রেহমানকে এ ব্যাপারে বিকৃত মনে হয়। আর কার নাম রহমান থেকে রেহমান হয়ে যায় সেটাও বোঝার ব্যাপার আছে। আপন দেশের জল মাটি গায়ে মেখে পশ্চিমা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর থাকাকে এডোয়ার্ড সায়িদ একটা গালি দিয়েছেন। গালিটা হলো: ওরিয়েন্টালিজম।

রেহমান ভাই (থুক্কু সাহেব) কে তাই অনুসরণ বা সঠিক মনে করার কিছু নাই। আর অন্যভাবে দেখলে বলা যায়- সমাজে ওরকম দুএকটা ক্র্যাক থাকেই। ওসব পাত্তা না দিলেই হলো। শুধু সাবধান বাড়িতে স্কুল পড়ুয়া বাচ্চা থাকলে যাযাদি রাখবেন না, তাহলে পরীক্ষায় নির্ঘাত ফেল!!!! কারণ টিচার নতুন `রেহমান'ভাষারীতি নাও জানতে পারেন!!!!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.