গভীর কিছু শেখার আছে ....
গত বছরের এই দিনেও বিশ্বাস হতে মন কিছুতেই চায়ছিলো না যে, সঞ্জীবদাকে হারাতে হবে! তাই গত বছরের ১৭ নভেম্বর সামহোয়ারইনের কয়েকটি পোস্টে যখন বলা হলো সঞ্জীবদা আর আমাদের মাঝে নেই, তখন প্রবল আপত্তি তুলে ছিলাম। নিউজ আপডেট দিয়ে বিকেলে সবাইকে আশ্বস্ত করলাম যে, দাদা এখনও আমাদের ছেড়ে যান নি।
সন্ধ্যার মধ্যেই সকল কাজ শেষ হয়ে যায় আমার। কিন্তু সেদিন ২য় এডিশন ছাড়া পর্যন্ত মধ্য রাত অবধি অফিসে থেকে বিভিন্ন ভাবে দাদার খোঁজ রাখার চেষ্টা করেছি ও ব্লগে যতটা সম্ভব আপডেট দেবার চেষ্টা করেছি।
পরের দিন ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ইনফো তো খবরই দিয়ে দিলো যে, সঞ্জীবদা মারা গেছেন! অথচ বিকেলে যখন রাগ করেই পোস্টটা দিলাম যে, সঞ্জীবদা এখন বেঁচে আছেন, তখন শুধু আমি কেন, সকলেই মনে প্রাণে চাইছিলেন সঞ্জীবদা আবার যেনো আমাদের সবার মাঝে আবারো ফিরে আসেন।
অবশ্য ডাক্তার এর আগেই তাকে কিনিক্যালি ডেড ঘোষণা করেছিলেন। মাত্র ১% এ থেকে সারভাইব করে। মিরাকল ব্যাপারটার প্রতি অনেকেই আস্থা রাখেন না। কিন্তু সঞ্জীবদার ফিরে আসার মতন সেদিনের কোন মিরাকল ঘটনাটি সকলেই যেন মনে প্রাণে চাইছিলেন!
অথচ পরের দিন ১৯ নভেম্বর আমি আর সেই আগের মতন জোর নিয়ে বলতে পারছিলাম না যে, ‘ভুল তথ্য দেন কেন, সঞ্জীবদা এখনও বেচে আছেন!’
কারণ ততণে সঞ্জীবদা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
********************************************************************
কত স্মৃতি জড়িয়ে আছে সঞ্জীবদার সঙ্গে আমাদের।
সেটি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যেভাবেই হোক না কেন। সঞ্জীবদাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর কথাগুলো ব্লগেই কেবল থেকে গেলো। তার অসামান্য গায়কী প্রতিভা দিয়ে এখন তিনি বেচে আছেন। ক্ষণজন্মা হয়ে যে ক'টি গানই তিনি গেয়েছেন সকলেরই হৃদয় ছুয়ে গেছে সেগুলো। সঞ্জীবদার সবচেয়ে কাছের বাপ্পা মজুমদারও তার লেখাতেও জানিয়ে ছিলেন সঞ্জীবদার প্রতি তার অপরিসীম ভালোবাসা আর বিনয়।
কিন্তু সবই তো অতীত।
********************************************************************
একটি বছর চলে গেছে। সঞ্জীবদাকে মনে করার সময় কি তার কাছের লোকদের আর মনে আছে?
পার্থ বড়ুয়া আর বাপ্পা মজুমদার, সঞ্জীবদার স্মরণে যুগ্মভাবে একটি অ্যালবাম করার ঘোষণা দিয়েছিলো এক বছর আগে। অথচ একটি বছরেও সেই প্রতিশ্রুতির কোন সুরাহা হলো না!
সঞ্জীবদার একমাত্র কন্যা কিংবদন্তীর জন্য এতো বড় মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির কেউ কি এখন পর্যন্ত কিছু করতে পেরেছে?
মিউজিশিয়ান প্রিন্স মাহমুদ গত সপ্তাহে বেশ আক্ষেপ করেই বলছিলেন যে, সঞ্জীবদার গান এখন এফএম রেডিও বা চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত হয়। কিন্তু এর ন্যূনতম রয়ালিটিও কি কিংবদন্তীর পাওয়ার অধিকার নেই? সঞ্জীবদার কাছের মানুষরা কি পারে না কিংবদস্তী জন্য কিছু উদ্যোগ নিতে? নাকি বছরের এই একটি দিনেই সঞ্জীবদাকে স্মরণ করবে কেবল?
আগামীকাল দলছুট ব্যান্ড ও জি সিরিজ সঞ্জীব চৌধুরীকে নিয়ে এক স্মরণসভার আয়োজন করেছে।
এই আয়োজনে সঞ্জীব চৌধুরীর লেখা ‘টুকরো কথা’ গানটি নিয়ে একটি সিডিও প্রকাশ করা হবে। এই অ্যালবামটিতে স্থান পেয়েছে বাপ্পার একটিই গান। বাণিজ্যিক ব্যাপারের বাইরেও কি সত্যিকারের কোন উদ্যোগ নিয়ে সঞ্জীবদাকে স্মরণ করার কোন পথ কি এদের জানা নেই?
********************************************************************
সঞ্জীবদা আজ নেই কিন্তু রয়ে গেছে কেবল তার গানগুলো আর তার মেয়ে কিংবদন্তী। এই দুটোকেই রক্ষার কোন উপায় কি এইসব মিডিয়া নিয়ন্ত্রকদের জানা নেই?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।