আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

`আমার ক্ষমতা থাকলে গুঁড়ো দুধ বানানোটাই বন্ধ করে দিতাম...' -একান্ত সাক্ষাৎকারে জনৈক গরু।

দেশ বিরোধী যে কেউ এই ব্লগে ডুকবিনা।

গুড়ো দুধে মেলামাইন পাওয়া গেছে। সবাই আছে বিভ্রান্তিতে। অন্যদিকে আতঙ্কে সবাই ঝুঁকছে গরুর দুধের দিকে। তাই হঠাৎ করেই এখন আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে গরু।

তাই আমরা এবারের সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হয়েছি একটি গরুর। চলো কথা বলা যাক তার সাথে, : কেমন আছেন গরু ভায়া? : লক্ষণতো ভালো না। এতো তোয়াজ করে কথা বলছেন, ঘটনা কী? : ঘটনা তেমন কিছু না। শুধু আপনার একটা ইন্টারভিউ নেবো। : তা এতো কিছু থাকতে আমার ইন্টারভিউ কেন? : কেন আবার, এখনতো আপনিই এখন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।

একেবারে আলোচনা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। : মানে ঠিক বুঝলাম না। : গরুর দুধের দাম যে অনেক বেড়ে গেছে সেটা আপনি জানেন না? : তা জানি। আর হঠাৎ করে দুধের দাম বেড়ে যাওয়াতে ভীষণ রকম চাপেও আছি। সবাই শুধু বেশি বেশি দুধ চায়।

কিন্তু আমারওতো একটা সীমাবদ্ধতা আছে, নাকি? কিন্তু হঠাৎ দুধের দাম কেন বাড়লো সেটাতো জানি না! : আপনি দেখি দুনিয়ার খবরই রাখেন না। গুড়ো দুধের ভেতর অতিরিক্ত মাত্রায় মেলামাইন পাওয়া গেছে। তাই সবাই এখন গরুর খাঁটি দুধ খুঁজছে। : আমি জানতাম মেলামাইনের থালায় মানুষ ভাত খায়। কিন্তু দুধের ভেতর আবার মেলামাইন এলো কোথা থেকে? : দুধের একটি উপাদান হচ্ছে প্রোটিন।

মেলামাইনের মধ্যেও একই প্রোটিন রয়েছে, যা নাইট্রোজেন বহন করে। গুড়ো দুধে মেলামাইন ব্যবহার করার ফলে আসল দুধের পরিমাণ কম লাগে। এর দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ কমে। তখন লাভ হয় বেশি। মেলামাইনের গুড়ো দেখতে যেমন ঠিক দুধের মতো, তেমনি এটির কোন গন্ধ নেই।

ফলে সাধারণের পক্ষে এটি সনাক্ত করা সম্ভব না। : হায়! হায়! এই কথা! আমার ক্ষমতা থাকলে আমি গুঁড়ো দুধ বানানোটাই বন্ধ করে দিতাম। আর গুড়ো দুধ বানানো বন্ধ হলে কেউ এর সাথে মেলামাইন মেশানোর সুযোগ পেতো না। কিন্তু মেলামাইনেতো প্রোটিন আছে। খেলে সমস্যা কী? : মেলামাইনে প্রোটিন আছে বটে।

কিন্তু প্রোটিনের চেয়ে এর ক্ষতিকারক দিকটাই বেশি। কারণ মেলামাইন এক ধরনের ক্যামিকেল যা শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয়। ঘর-বাড়ির সাজ-সজ্জায়ও ব্যবহার করা হয়। সুতরাং শিল্প কেমিকেল হিসেবে যেটি ব্যবহৃত হয় এবং গৃহসজ্জার কাজে যা ব্যবহৃত হয়, তা কোনভাবেই খাবার উপযোগী হতে পারে না। : সেটা বুঝলাম কিন্তু খেলে কী হবে? : মেলামাইন খাওয়ার পর তা কিডনীর ভেতরে থেকে যায়।

আর সেখানে এটি আস্তে আস্তে পাথরে পরিণত হয়। ফলে এই মেলামাইন কিডনির ভেতরের নালীতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তখন ধীরে ধীরে কিডনী অকেজো হয়ে যায়। যার পরিণাম মৃত্যু। আপনি দেখি উল্টা আমারই ইন্টারভিউ নেয়া শুরু করেছেন! : ওহ! আমি খুবই দুঃখিত।

যে খবর শুনিয়েছেন তাতে কিছু না জানতে চাইলেতো আবার আপনারা আমাকে গরু বলে গালি দিবেন। ঠিক আছে বলুন কী জানতে চান? : আপনার সবচেয়ে খারাপ লাগে কখন? : যখন কেউ কাউকে গরু বলে গালি দেয়। আর যখন কেউ গরুর মাংস আয়েশ করে খায়। : আপনাকে বিক্রির জন্য যখন হাটে তোলা হয়, তখন খারাপ লাগে না? : বলেন কী? খারাপ লাগে না মানে! গরুর হাট নাম শুনলেইতো আমার কলিজা একেবারে শুকিয়ে যায়। জানে পানি থাকে না।

: আপনার জীবনের একটা মজার ঘটনা বলুন? : একবার আমার মনিবের ছেলেকে একটা ট্রান্সলেশন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। গরু ঘাস খায় এর ইংরেজি করতে গিয়ে সে বলেছিল- The cow eats rice ! : আচ্ছা আপনি কখন কাউকে শিং দিয়ে গুতো মারেন? : যখন প্রচন্ড রেগে যাই তখন যাকে সামনে পাই তাকেই আমার গুতো মারতে ইচ্ছে করে। তবে মশা-মাছিদেরকে তাড়ানোর জন্য আমার লেজই যথেষ্ঠ। মশা মারতে কামান দাগানোর দরকার কী? : আপনিতো খুব জ্ঞানী। আপনি কি দুধ খান? : বোকা কোথাকার।

কাকের মাংস কাকে খায় না। আর আমার দেয়া দুধ খেয়ে যদি সবার এতো বুদ্ধি হয়, তাহলে যেই আমি নিজেই দুধের ভান্ডার- আমারতো একটু আধটু জ্ঞান থাকতেই পারে নাকি? : আপনারা গরুরা নাকি ইচ্ছে করেই মাঝে মাঝে দুধ দিতে চান না? : ঘটনা সত্য। অনেকেই আমাদের মুড বা মেজাজ মর্জি বুঝতে চায় না। তখন খুবই খারাপ লাগে। আবার অনেক কিপ্টে মনিব আছে যারা ঠিকমতো খেতে দিতে চায় না।

ওদিকে আবার দুধ ঠিকই বেশি বেশি পেতে চায়। আপনিই বলুন এটা কি ঠিক? : বুঝলাম। কিন্তু তাই বলে যার নুন খান তার গুন না গাওয়া কিন্তু একদম ঠিক না। : এটা ঠিক। কিন্তু আমি কিন্তু কেবলই খাই না।

বরং খাওয়াইও। তাই আমার প্রতি সবার আগে মনযোগ দেয়া দরকার। : আপনার কি কখনো মনে হয়েছে আপনি গরু হয়ে জন্ম না নিয়ে ঘোড়া হয়ে জন্ম নিলে বেশি ভালো হতো? : হ্যাঁ, যখন টিভিতে ঘোড়ার দৌড় প্রতিযোগিতা দেখি, তখন খুব খারাপ লাগে। মনে হয় ইশ! আমি যদি ঘোড়া হতে পারতাম! তাহলে এভাবে দৌড়াতে পারতাম। : আপনি কি পাঠকদের কাছে কোন মেসেজ দিতে চান? : হ্যাঁ।

একটা কথা বলতে চাই। সবাই আমাদের প্রতি যত্নবান হোন। সামনে কিন্তু দুধের দাম আরো বাড়বে। তাই মাংস খাওয়াও বাদ দিন। (কপি পেষ্ট শেয়ার করলাম কারন ভালা লাগা ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে) বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/রণক ইকরাম/এবি/এমআইআর/২৮ অক্টোবর


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.