এইখানে শায়িত আছেন বাংলা ব্লগ ইতিহাসের কলঙ্ক...
দিগন্তজোড়া মাঠ, আর দৃষ্টি ভরা বনানীর যুগ বোধোহয় শেষ হতে চললো বলে। আসলে বলা ভালো যে শেষ হয়ে গিয়েছে - অন্ততঃ ঢাকাবাসীর জন্যে এটাই সত্য। আজ যখন আমি আমার বাসার কোন এক জানালা দিয়ে বাইরের আকাশ দেখার চেষ্টা করছি, পারছি না। কখনো কখনো খুব কষ্ট করে ঘাড় বাঁকিয়ে দেখার চেষ্টা করলে এক-আধ চিলতে দেখতে পাচ্ছি; তাও বেশি না। কারনটা আর কিছুই নয়, হাই-রাইজ কালচারের যাতনা।
দৃষ্টিদূষণ বলে কিছু আছে কি? থাকলে ওদের বিরুদ্ধে মনে মনে মামলা ঠুকে দিতাম আমি।
রেঁনেসোর গান শুনি আর মনে মনে হাসি -
"........সেগুন কাঠের ঐ দরজা ভেঙে, বিকেলের রোদ এসে থামবে.........আমার কবিতা শুকসারি হয়ে মগ্ন চেতনার শীষ দেয়..........."
সেগুন কাঠের দরজা ভাঙার আগেই আমার রোদ যেন কারা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। আমার আকাশটাও আজ আর আমার নেই। চারপাশের আর সব কিছুর মতো প্রকৃতিও কি তবে বিক্রি হয়ে গেলো?
স্যাটেলাইট চ্যানেলের সংস্কৃতিকে যদি আকাশ সংস্কৃতি বলি তবে একে কি বলবো? আকাশ বাণিজ্য? নাকি আকাশ দখল? ওরা যেন আকাশ দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কে কার চাইতে বেশি দখল করতে পারে।
অবশ্য ওদের দোষ দিয়েই বা কি লাভ।
আমরা নিজেরা কি নিজেদের প্রতি সুবিচার করেছি? নগর সভ্যতা আর শহর কেন্দ্রিকতার জনকও তো আমরাই। এখন আর অরণ্যরোদন করে কি লাভ। ওহ্ হো! ভুল বলে ফেললাম। বলা উচিৎ ছিলো "নগররোদন"।
শ্রেয়া ঘোষালের একটা গান খুব প্রিয় আমার -
"ও আকাশ ক্লান্ত বেলায় কতো মেঘের চিঠি পায়........"
আফসোস আকাশে মেঘে মেঘে ভেসে আসা সেই চিঠি বিনিময় আমার দেখা হয় না।
দেখা হয় না কবিদের বর্ননার আকাশের রূপ। দেখা হয় না সদা রং পরিবর্তনশীল শেষ বিকেলের আকাশ।
রবীন্দ্রনাথের আকাশ থেকে নেমে আসা বরিষধারা এখন আমাকে স্পর্শ করার আগে আমার পাশের বাড়ির কার্নিশ ছুঁয়ে আসে। বাধ্য হয়ে তাই ঐ কার্নিশটাকেই হিংসে করি আমি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।