আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভারতের মাটিতে চূর্ণ হলো দাম্ভিক অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য

বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।

কিছুক্ষণ আগে নাগপুরে শেষ হয়েছে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার চার ম্যাচ সিরিজের টেস্ট। শেষ টেস্টে ১৭২ রানে জিতে সিরিজ ২-০ তে জিতে নিয়েছে স্বাগতিক ভারত। পুরো সিরিজেই অসাধারণ খেলা ভারতের কিছু খেলোয়াড়দের জন্য এই সিরিজটি একটি স্মরণীয় সিরিজ হয়ে থাকবে। শচীন টেন্ডুলকারের টেস্ট ক্রিকেটের সর্বাধিক রান সংগ্রাহকের তালিকায় আসীন হওয়া, ভিভিএস লক্ষণ,গৌতম গম্ভীর,বিরেন্দ্র শেহওয়াগ এর অসাধারণ ব্যাটিং সিরিজটিকে অনেক উজ্জ্বলতা দিয়েছে।

পাশাপাশি ম্যান অব দা ম্যাচ ইশান্ত শর্মার অসাধারণ বোলিং, অভিষিক্ত অমিত মিশ্র'র দুর্দান্ত বোলিং গোটা দলকে একটি সন্মিলিত শক্তি হিসেবে লড়ার মত পরিবেশ দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়াতে গত সিরিজেই ভারত বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিটি জিততে পারতো, কিন্তু অস্ট্রেলিয়ানদের জোচ্চুরি, আম্পায়ারদের অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতি নির্দয় পক্ষপাতিত্বের কারণে সেবার অস্ট্রলিয়ার মাটিতে তাদেরকে হারানো যায়নি। এবার ভারতের মাটিতে তাদের দাম্ভিক মনোভাবের ঠিকই অবসান ঘটলো। অনিল কুম্বলে এই সিরিজে অবসর নিয়েছেন। তাঁর মতো একজন বীর যোদ্ধার অভাব ভারতীয় ক্রিকেট সারাজীবন অনুভব করবে।

আমার এখনও মনে আছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজে একবার টেস্ট চলাকালে মাথায় আঘাত পেয়ে কুম্বলে মাঠ ত্যাগ করেছিলেন। সবাই ভেবেছিল সেই টেস্টে কুম্বলের আর খেলা হচ্ছেনা। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় পরেরদিন তিনি মাঠে ফিরে এসেছিলেন, শুধু তাই নয়, ব্রায়ান লারার মত কিংবদন্তীর উইকেটও তিনি পেয়েছিলেন সেই টেস্টে। একজনের অর্জন এই সিরিজে একেবারে অনন্য হয়ে থাকবে, তিনি আর কেউ নন, কোলকাতার মহারাজ সৌরভ গাঙ্গুলী। জীবনের শেষ সিরিজ খেলতে নামার ঘোষণা দিয়ে সমগ্র সিরিজেই তিনি তাঁর অনুপম ব্যাটিংশৈলীর যে কারিশমা দেখালেন, সেটি তাঁর চরম বিরুদ্ধবাদীদের মুখেও তালা লাগাতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।

তাঁর পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই নির্বাচকদের তাঁর প্রতি অবহেলা, বারবার দল থেকে বাদ পড়া, এসব কারণে তাঁর ক্যারিয়ার দলের অন্যান্য সিনিয়ারদের মত বড় হয়নি, কিন্তু প্রতিবারই সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তিনি দারুনভাবে ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন। শুধুমাত্র লঘিষ্ঠ সম্প্রদায় (বাঙ্গালী) হওয়ার কারণেই যে তিনি এত বঞ্চনার শিকার হয়েছেন, একথা অনেকেই বলে থাকেন। টেস্টের শেষদিনের শেষভাগে এসে ভারতীয় অধিনায়ক ধোনি চরম শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় দিয়েছেন দাদা'র প্রতি, শেষদিকে এসে অধিনায়ক হিসেবে দাদাকেই দল পরিচালনা করতে দেখা গেছে, ধোনি মাঠে থাকলেও দলের ফিল্ডিং সব দাদা'ই সাজাচ্ছিলেন। ধোনি এই কাজের জন্য অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। ৯০ এর দশকের শুরুর দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাত থেকে ক্রিকেটের সম্রাজ্য কেড়ে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বিশ্ব এতদিন শাসন করে আসছিল।

এখন এই সিরিজ পরাজয়ের মাধ্যমে হয়তো তাদের সেই সম্রাজ্যের পতন ঘটল, এমনটাই চারিদিকে বলাবলি হচ্ছে। হয়তো অস্ট্রেলিয়ানরা সামনের সিরিজগুলোতে ভালো করবে, কিন্তু ম্যাকগ্রা-ওয়ার্নের মত বিশ্বজয়ী বোলারদের যে অভাব এই সিরিজে দেখা গেছে, সেটি তারা কখনো পুরণ করতে পারবে বলে মনে হয়না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.