যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
গুড়ো দুধে মেলামাইন আছে এমন সন্দেহে পরীক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ফাও) তত্ত্বাবধানে স্যাম্পল ব্যাংককে প্রেরণের পূর্বে বাজারে প্রচলিত, জনপ্রিয় মিল্ক পাউডার ব্রান্ডের উপরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। মাস-ব্যাপী এই অনিশ্চিত বাজার পরিস্থিতিতে গুঁড়া দুধ কোম্পানী ও ভোক্তাদের পরিবর্তিত অবস্থা জানার জন্য আমার বেশ কয়েকদিন যাবত আগ্রহ দানা বাধতে শুরু করে। গুঁড়া দুধ সরবরাহকারী ও মুদি দোকানে আলাপ করে বেশ অভিনব ও আশ্চর্য্যজনক তথ্য পেলাম।
যে সমস্ত গুঁড়া দুধের নাম বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ জানে যেমন ডানো, রেডকাউ, ডিপ্লোমা, ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে। বাজারে, দোকানে এগুলো খুঁজে পাওয়া যাবে না।
চুয়াডাঙ্গায় এমন নিষেধাজ্ঞা পৌঁছুলে সেখানের প্রশাসক দোকান থেকে গুঁড়া দুধ জব্দ করে এবং সংরক্ষণের বদলে পুড়িয়ে দেয়। যদিও গুড়ো দুধ ব্রান্ডের কোম্পানী পরীক্ষার নতুন ফলাফল না আসা পর্যন্ত সেগুলো ধ্বংষ না করতে অনুরোধ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঘুসের দাবী না মানায় গুড়ো দুধের এ পরিনতি ঘটে।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন মুদি দোকান ও সরবরাহকারীদের সাথে কথা বলে ও পর্যবেক্ষণ করে মার্কস ও ফ্রেস মিল্ক নামের দুটো ব্রান্ড সর্বাধিক বিক্রিত বলে শনাক্ত করা গেছে। এই সংকটকালীন মুহূর্তে এই দুটো দুধের ব্রান্ড বাজার দখল করে নিয়েছে। এর মধ্যে মার্কসের বিপনন নানাবিধ চমকপ্রদ প্রস্তাবনায় সজ্জিত।
বেশ কয়েকজন দোকানী বললেন পাউডার মিল্কের বাজার দখলের জন্য মার্কসের একটা ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। একজন আমাকে বললেন, তাকে মার্কসের জনৈক এজেন্ট বলেছে ৯কোটি টাকার প্রমোশনাল প্যাকেজের অংশ হিসাবে গুঁড়া দুধে ম্যালামাইন আবিষ্কারের ঘটনায় অনেক দুধের ব্রান্ডকে জড়িত করা হয়েছে।
এছাড়া লিকুইড মিল্কের মধ্যে সবর্জনপ্রিয় মিল্কভিটা ব্রান্ডে ফরমালিন মিশ্রণের বিষয়ে বাজারে জোরালো গুজব রয়েছে। আমি নিজে কিনতে গিয়ে অন্য আরেকজন ক্রেতাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন তিনি ফরমালিন মিশ্রন আছে জেনেও কিনছেন। তার বক্তব্য ছিল উপায় নাই, বাচ্চাদের তো খেতে দিতে হবে।
এছাড়া ব্রাকের ব্রান্ড আড়ং এর ক্ষেত্রেও এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে লোকমুখে শোনা যায়। তবে সেটা মেলামাইনের মিশ্রন। উল্লেখ্য এই দুটো দুধই বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মার্কেটে এদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম দেখা যায়। এমন সব কথা শোনা গেলেও এ বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকা বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারলেন না।
আমি অবশ্য দুধ না কিনেই ফিরেছি।
তবে মার্কসের বিষয়ে সন্দেহটা ঠিকই থেকে যাচ্ছে। ব্যাংককের পরীক্ষায় ইতোমধ্যে তিনচারটা বাদে বাদবাকী দুধগুলো মেলামাইন মু্ক্ত প্রমানিত হয়েছে। হয়তো আদালত নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেবে। কিন্তু শূণ্য মার্কেটের সুফলভোগীদের থেকে ষড়যন্ত্রের সন্দেহ উড়িয়ে দেয়া যায় না।
তবে ব্যাংককের পরীক্ষণও বহুজাতিক সংস্থাগুলোর দ্বারা সাজানো কিনা কে জানে? বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা ফা.ও যে বহুজাতিক কোম্পানীর ঘুষ খাবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।